<article> <p style="text-align: justify;">এবারের বাজেটে ভোগ্য পণ্য আমদানিতে উৎস কর ১ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হলেও ভোগ্য পণ্য, বিশেষত মসলার দাম উল্টো বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের মতে, ডলারের দর বেড়ে যাওয়া, এলসি খুলতে অনীহা ও সরবরাহ ঘাটতির কারণে কোরবানির আগেই অস্থির মসলার বাজার। তবে ভোক্তারা বলছেন, সরকার দাম বাড়ালে মিনিটের মধ্যে কার্যকর হয়। আর দাম কমালে দিনের পর দিন তা কার্যকর হয় না।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতাসহ ২৭ পণ্য আমদানিতে উৎস কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হয়।</p> <p style="text-align: justify;">গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজেটের আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭০-৭২ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকা। জিরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৮০ টাকা, বাজেটের আগে ৬০ টাকা কম ছিল। লবঙ্গের দামও এখন ১২০ টাকা বেড়ে কেজি এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">৩৭৫ টাকা কেজির দারচিনি এখন ৩৯৫ টাকা। গোলমরিচের দামও কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৮৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এভাবেই এখন ধনের কেজি ২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০ টাকা, জয়ত্রী ৩০০০ টাকা, জায়ফল ৭৬০ টাকা, কিশমিশ ৮৫০ টাকা, হলুদ ২৬০ টাকা, এলাচ চার হাজার ১১০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা ও রসুন ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজেটের আগে এসব পণ্যের দাম কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে মসলা আমদানি হয়েছে প্রায় তিন হাজার ৮৫২ কোটি টাকার। এর আগের (২০২২-২৩) অর্থবছরে আমদানি হয় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার। অর্থাৎ চলতি বছর এরই মধ্যে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার বেশি মসলা আমদানি হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">আমদানি বেশি হলেও কেন বাড়ছে মসলার দাম—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একাধিক মসলা ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, ৬০ শতাংশ মসলার আমদানি হয় কোরবানির আগে। মূলত ভারত থেকে আমদানি হয় জিরা ও এলাচ। ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও গুয়াতেমালা থেকে আসে লবঙ্গ ও দারচিনি। এত দিন ওই সব দেশে মসলার উৎপাদন কম ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলারের বাড়তি দর। মূলত এসব কারণে আমদানি বেশি হলেও বাড়ছে দাম।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সানাউল্লাহ হক বলেন, বাজেটের আগে থেকেই আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তি। সেটা আর কমেনি। এখন কোরবানিকে সামনে রেখে সরবরাহ সংকটের অজুহাত দিয়ে উল্টো বাড়ছে।</p> <p style="text-align: justify;">খাতুনগঞ্জে মসলা ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজেটে শুল্ক বা কর কমালে সেটার সুফল পেতে সময় লাগবে। এখন যেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে, তা অন্তত এক মাস আগে আমদানি করা।’</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন, ‘রপ্তানিকারক দেশে মসলার দাম বাড়লে আমাদের দেশেও সমান হারে বেড়ে যায়। এখন ডলারের মূল্য বাড়ার কারণে অনেক আমদানিকারক আমদানি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এর প্রভাব পড়ছে বাজারে।’</p> <p style="text-align: justify;">ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের আগে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছেন। প্রশাসনের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি করা।’</p> </article>