<article> <p style="text-align: justify;">দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা কাজে ধীরগতি এবং নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষ না হওয়া। যার ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যায়। উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত সুফল পায় না জনগণ। বিআইডিএসের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ প্রকল্পই নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">তাই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের গতি বাড়াতে সরকার ও উন্নয়ন অংশীদাররা পরীক্ষামূলকভাবে ‘অগ্রিম ক্রয়’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে।</p> <p style="text-align: justify;">অগ্রিম ক্রয় বলতে সাধারণত ঋণচুক্তি কার্যকরের আগে পণ্য, সেবা ও কাজের জন্য ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেওয়াকে বোঝায়। এর মাধ্যমে চূড়ান্ত ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার আগেই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু করে কয়েক মাস, এমনকি বছর পর্যন্ত সময় বাঁচানো যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে অনেক প্রকল্প অনুমোদনের পরে কখনো বছর পার হয়ে যায় টেন্ডার হতে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এই নতুন পদ্ধতি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলে প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে এবং সরকারের অর্থেরও সাশ্রয় হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে দুটি প্রকল্পে অগ্রিম ক্রয় প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। এর একটি হলো নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (ইআরডি) অর্থায়নে ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্প আর এডিবির অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্প। প্রকল্পগুলোতে দ্রুত টেন্ডার ও পরামর্শক নিয়োগ হওয়ায় তাঁরাও এই প্রক্রিয়ায় আশাবাদী।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">জানা গেছে, ঋণচুক্তি না হলেও এনডিবির সম্মতি নিয়ে ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্পে ঋণচুক্তি চূড়ান্ত করার আগে অগ্রিম ক্রয় শুরু হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী জুনের আগেই এনডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (ইআরডি) অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পে চূড়ান্ত ঋণচুক্তির আগে পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগের জন্য ‘অগ্রিম ক্রয়’ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছিল। এতে প্রকল্পটি অনুমোদনের দুই মাসের মধ্যেই টেন্ডার হয়েছিল এবং প্রকল্পটিতে প্রায় ছয় মাস সময় সাশ্রয় হয়েছিল।</p> <p style="text-align: justify;">নতুন এই অগ্রিম ক্রয় পদ্ধতির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড.মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো এবং নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষ করা।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">অগ্রিম ক্রয় প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো আগেভাগে ক্রয় প্রক্রিয়া শেষ করে প্রকল্প কম সময়ে বাস্তবায়ন করা। বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে অগ্রিম ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করতে কাজ করছে। ইআরডি ঋণ আলোচনার সময় যেখানেই সম্ভব অগ্রিম ক্রয় প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছে।’</p> <p style="text-align: justify;">যথাসময়ে ও সাশ্রয়ীভাবে প্রকল্প সমাপ্তির রূপরেখাসহ ২০১৭ সালে ‘প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য তহবিল এবং ব্যবস্থাপনা নীতি’ শিরোনামে একটি গেজেট জারি করা হয়েছিল। গেজেটে কোনো প্রকল্পের মূল নির্মাণ পর্ব শুরু করার আগে ক্রয়সহ সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ চূড়ান্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়, যা সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তা এখনো কার্যকর করা যায়নি। ইআরডি কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডিবির প্রকল্প ক্রয় নীতিতে ‘অগ্রিম ক্রয়’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি আরো সহজলভ্য করতে অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারের সঙ্গেও তৎপর রয়েছে ইআরডি। যদিও বিশ্বব্যাংক এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্রিম ক্রয়ের বিষয়টি শুরু করেনি। এটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন এবং নকশার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক পর্যায়গুলোর জন্য একটি ‘প্রস্তুতিমূলক তহবিল’ ব্যবহার করে। তবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এ পদ্ধতিটির কার্যকারিতার সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছে।</p> </article>