<p style="text-align: justify;">বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে মার্কিন ডলারের দাম। ফলে ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা টাকা মান হারাচ্ছে। ফলে খোলাবাজারে খুচরা ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২৬ থেকে ১২৭ টাকায়। খোলাবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রায় ১৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">এক সপ্তাহ আগেও খোলাবাজারে ডলারের দাম ছিল ১২০ টাকা। আর বছরের শুরুতে দাম ছিল ১১০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি ডলারের বিপরীতে সপ্তাহে টাকার মান কমেছে সাত টাকা আর চলতি বছরে কমেছে ১৭ টাকা।</p> <p style="text-align: justify;">মানি এক্সচেঞ্জারদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করেছে ১১৩ টাকা ৭৫ পয়সা এবং বিক্রয় মূল্য ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা। তবে এই দামে কোনো মানি এক্সচেঞ্জে ডলার লেনদেন হয় না।</p> <p style="text-align: justify;">মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলারের লেনদেন না হলেও মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও ফকিরাপুল এলাকার বিভিন্ন দোকান ও রেস্তোরাঁ থেকে ক্রেতারা প্রতি ডলার ১২৭ টাকা দরে কিনেছেন।</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হেলাল সিকদার বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্ধারিত হারে ডলার লেনদেন হচ্ছে না। গ্রাহক আসে এবং ডলার না পেয়ে ফিরে যায়।</p> <p style="text-align: justify;">তারা অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া দামে ডলার কিনতে বাধ্য হয়।’</p> <p style="text-align: justify;">নগদ ডলারের পাশাপাশি অনেকে বিদেশে গিয়ে কার্ডেও ডলার খরচ করে থাকেন। সম্প্রতি দেশে ডলার সংকটের কারণে নগদ ডলারের পরিবর্তে কার্ডের মাধ্যমে ডলার খরচের প্রবণতা বেড়েছে। কার্ডের মাধ্যমে খরচ করলে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারের দাম রাখছে ১১৪ টাকা।</p> <p style="text-align: justify;">ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">এখন থেকে প্রবাস আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না। তবে আমদানিকারকদের কাছে ব্যাংকগুলোকে ১১১ টাকায় বিক্রি করতে হবে, এর বেশি নেওয়া যাবে না।</p> <p style="text-align: justify;">ডলারের বিপরীতে টাকার মান যখন কমে যায় তখন বিদেশি ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপ বাড়ে। এক বছরে ডলারের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। তার মানে আগের তুলনায় এখন বিদেশি ঋণ সরকারকে ১০ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে ভর্তুকির পেছনে ব্যয় ও প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে।</p> <p style="text-align: justify;">মুদ্রার মান নির্ধারিত হয় অর্থের ক্রয়ক্ষমতা দিয়ে। দ্রব্যের দামের সঙ্গে মুদ্রার মানের সম্পর্ক বিপরীত। দ্রব্যের দাম কমলে মুদ্রার মান বাড়ে, বিপরীতে দ্রব্যের দাম বাড়লে টাকার মান কমে। যেকোনো রাষ্ট্রের অর্থের আন্তর্জাতিক মূল্য নির্ধারিত হয় তার জোগান এবং চাহিদার ওপর নির্ভর করে।</p> <p style="text-align: justify;">এদিকে ডলার সংকটে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। কমছে টাকার মানও। ডলার বাঁচাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। যদিও মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা এবং নিষ্পত্তির হার কমেছে। এতে উৎপাদন খাত শিথিল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেই চলেছে।</p>