<p>দেশে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ বাড়াতে মার্কিন কম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে পেট্রোবাংলার তিন চুক্তি সই করেছে। পেট্রোবাংলার সচিব রুচিরা ইসলাম এবং এক্সিলারেটর এনার্জির ভাইস-প্রেসিডেন্ট রেমন্ড ওয়াং ডি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চুক্তিতে সই করেন।</p> <p>আজ বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে এক্সিলারেট এনার্জি এবং পেট্রোবাংলার মধ্যে তিনটি চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘমেয়াদী এলএনজি ক্রয় এবং বিক্রি চুক্তি (এসপিএ), মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পায়রা বন্দর এলাকায় আরেকটি ভাসমাল টার্মিনাল নির্মাণ বিষয়ে টার্ম শিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।</p> <p>অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে এক্সিলারেট এনার্জি, জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএল'র ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।</p> <p>ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের ৪ বিলিয়ন ডলারের সরাসরি বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশে। যা বৈদেশিক বিনিয়োগের মধ্যে প্রথম। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে, সেটা আমরা এগিয়ে নিতে চাই। এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে এলএনজির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিটি ১৫ বছর বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের গতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।'</p> <p>ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, চলমান নানা যে সংকট চলছে তা বৈশিক কারণে। এর জন্য বাংলাদেশ মোটেও দায়ী নয়। অন্যান্য দেশের দায় বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। বৈশিক পরিস্থিতির কারণে আমাদেরকে ১৪ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়েছে। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। উন্নয়নের এই ধারা ব্যাহত করতে রাজনৈতিক সহিংসতা চালানো হচ্ছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের এই সহিংসতা প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীসহ ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান তিনি।</p> <p>নসরুল হামিদ বলেন, 'বর্তমানে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের ৬০ শতাংশই বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের। এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছে। তারা এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ করছে। নিরবচ্ছিন্ন ও সহজলভ্য জ্বালানির যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই চুক্তি অবদান রাখবে।যুক্তরাষ্ট্রের কম্পানি শেভরন দেশীয় গ্যাসের ৬৪ শতাংশই সরবরাহ করছে বলেও তিনি জানান।</p> <p>এক্সিলারেট এনার্জি প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন কোবোস তার ভিডিও বার্তায় বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল এলএনজি বাজারগুলির মধ্যে একটি, এবং দেশটি এলএনজি আমদানি শুরু করার পর থেকে এক্সেলরেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমরা পেট্রোবাংলার সাথে পার্টনারশিপের মাধ্যমে দেশের দ্রুত বর্ধমান শক্তির চাহিদা মেটাতে সহায়তা করার জন্য আগ্রহী।</p> <p>মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সিলারেট এনার্জি চুক্তি করেছিল ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই। নির্মাণ শেষে ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট গ্যাস সরবরাহ শুরু করে কম্পানিটি। বর্তমানে বাংলাদেশে এক্সেলরেটের দুটি এফএসআরইউ টার্মিনাল দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের প্রায় ২৫ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে।</p>