<p>আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী দিনগুলোয় তুলাজাত সুতার দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। গুরুত্বের সঙ্গে এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে আগামী ক্রয়াদেশগুলোর দরকষাকষির ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। </p> <p>বিটিএমএ বলছে, সুতার স্থানীয় মূল্য যেন তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয়সক্ষমতার মধ্যে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে গত ২১ আগস্ট বিকেএমইএ ও বিজিএমইএর সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে সুতার মূল্যের একটি ভিত্তি নির্ধারণ করা হয়। এ অনুযায়ী সুতার দামের মৌলিক মূল্যসীমা দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, ৩০ কাউন্টের কার্ড সুতার দাম হবে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৪ ডলার ২০ সেন্ট। আর ৩০ কাউন্টের কম্বড সুতার দাম হবে কেজিপ্রতি ৪ ডলার ৫০ সেন্ট। ওই সময় তুলার বাজারের ইনডেক্স ছিল ৯৩ থেকে ৯৪।</p> <p>সমঝোতায় বলা হয়েছিল, ইনডেক্স সর্বনিম্ন ৮৫ এবং সর্বোচ্চ ১০০ থাকলে সুতার বর্তমান মূল্য বহাল থাকবে। যদি ইনডেক্স ৮৫-এর নিচে যায়, তাহলে সুতার দাম কমার বিষয় বিবেচনা করা হবে। আর যদি ১০০-এর ওপরে যায়, তাহলে সুতার মূল্য বাড়বে।</p> <p>পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সতর্ক করে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বিশ্ববাজারের বর্তমান মূল্যসূচক পরিবর্তন না হলে; স্থানীয় বাজারে সুতার দাম পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। এতে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে বর্তমান মূল্যের চেয়ে আরো ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন। প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে সুতাকল মালিকদের দাম বাড়ানোর বিকল্প থাকবে না। তাই পোশাক খাতের উদ্যেক্তাদের ক্রেতাদের থেকে কার্যাদেশ নেওয়ার আগে ন্যায্য দরকষাকষির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।   </p> <p>বিটিএমএ জানায়, সংগঠনের সদস্য মিলগুলো সমঝোতা হওয়া মূল্যে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোয় সুতা সরবরাহে কোনোরূপ ব্যত্যয় করেনি। সুতার মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে স্থানীয় স্পিনারদের খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ নেই। কেননা তুলা একটি আন্তর্জাতিক কমোডিটি। এর মূল্য নির্ধারণ মূলত শুরু হয় তুলা চাষের শুরু থেকেই। তুলা কৃষিজাত পণ্য হলেও এটি আন্তর্জাতিক কাঁচামাল, ফলে বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা রয়েছে এবং যার মূল্যসূচকটি নিয়ন্ত্রণ হয় নিউ ইয়র্ক ফিউচারের মাধ্যমে। এ সূচক বাড়ার অন্যতম কারণ মোট উৎপাদনের তুলনায় এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া। ২০২১ সালের অক্টোবরে আইসিই ফিউচার মার্কেটে তুলার সূচক মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০৭ দশমিক ২৮ ডলার, যা ২০১২ সালের একই সময়ে ছিল ৭২ দশমিক ৬৫ ডলার।</p> <p>বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএর সঙ্গে চুক্তিতে তুলার যে মূল্যসূচকটিকে ভিত্তি করে সুতার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা আর বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সে সমঝোতার আলোকে সুতার মূল্য রাখা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করছি।</p> <p>বিটিএমএ সভাপতি আরো বলেন, গত এক মাসের মধ্যে ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনের মাধ্যমে পরিচালিত মিলগুলোতে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। ফলে মিলগুলো উৎপাদিত সুতার ওপর অতিরিক্ত খরচ যোগ করে মূল্য নির্ধারণ করছে। গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি হবে এমন তথ্য নেই।</p>