<p style="text-align:justify">সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি হত্যা এবং আরেকটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালতে দুটি, ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে একটি এবং ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে আরেকটি মামলা করা হয়। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে দুটি অভিযোগ এবং যাত্রাবাড়ী ও বংশাল থানা পুলিশকে একটি করে  অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। </p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, এদিন গুলি করে রাকিবুল ইসলাম নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে তার পিতা মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ওবায়দুল কাদের, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন অর রশীদ, আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিপ্লব কুমার, হাবিবুর রহমান ও মাইনুল হোসেন খান নিখিল।</p> <p style="text-align:justify">মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই রাত ৯টায় মিরপুর-১০ গোলচত্বর এলাকায় রাকিবুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী ডেলিভারিম্যান শিমুল আহমেদ নিজে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কামাল আহমেদ মজুমদার ও গাজী মেজবাউল হোসেন বাচ্চু। </p> <p style="text-align:justify">এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ভিকটিম শিমুল আহমেদ একটি বেসরকারি কম্পানির একজন চাকরিজীবী। গত ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুর থানাধীন এলাকায় মুক্তিকামী ছাত্রদের সঙ্গে তিনি আন্দোলনে যোগ দেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এলোপাতাড়ি ছোড়া গুলিতে তিনি ডান পায়ের উপরিভাগে গুলিবিদ্ধ হন। এতে তিনি পঙ্গুত্ব বরণ করেন।</p> <p style="text-align:justify"><strong>শাওন হত্যা :</strong> গুলি করে শাওন তালুকদারকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে নিহতের প্রতিবেশী চাচা মো. ওয়াসী উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় শাওন তালুকদার পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। পরে ৭ আগস্ট তাকে দাফন করা হয়। </p> <p style="text-align:justify"><strong>ভ্যানচালক রিপন হত্যা :</strong> গুলি করে ভ্যানচালক রিপনকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে নিহতের মা আছমা বেগম সুফিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে বংশাল থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।</p> <p style="text-align:justify">এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহমুদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কাজী নজীবুল্লাহ হিরু। </p> <p style="text-align:justify">মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৬ আগস্ট রিপন তার মায়ের অসুস্থতার চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করে। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ তথা আসামিরা পুলিশের সামনে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় দিয়ে মারধর শুরু করে। ভিকটিম মাটিতে পড়ে যায়। উঠে দৌড় দিলে স্থানীয় বংশাল থানার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজহার উদ্দিন গালি দিয়ে বলে, ‘আন্দোলন করতে আসছিস? আন্দোলন করাচ্ছি দাঁড়া। তখনই বংশাল থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফার নির্দেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাহার উদ্দিন অন্য আসামিদের সহযোগিতায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে রিপনকে গুলি করে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয় তাকে। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট রাতে মৃত্যুবরণ করেন রিপন।</p>