<p>সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় দল পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছে বিএনপি। আগামী সংসদ নির্বাচন এবং ‘প্রয়োজনে’ আন্দোলনের জন্য দলকে প্রস্তুত রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।</p> <p>৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশব্যাপী লুটপাট ও চাঁদাবাজির সঙ্গে দলের কিছু নেতাকর্মী জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এতে দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।</p> <p>বাধ্য হয়ে দলের শীর্ষ নেতা তারেক রহমান পদ থেকে বহিষ্কারসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া শুরু করেন। এতে ফের দলে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করে।</p> <p>এদিকে গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর তিন দিন পর গত বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া ও মাগুরা কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।</p> <p>এর আগে শিল্প গ্রুপ এস আলমের পক্ষে তাদের গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ মহানগর বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।</p> <p>দলীয় সূত্রে জানা যায়, খুব শিগগির সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঠিক করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।</p> <p>বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জেলা ও মহানগর পর্যায়ে সম্মেলনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।’</p> <p>বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানায়, দলের ৮২টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০টিতে সম্মেলন করার কাজে এখনই হাত দেওয়া যাবে।</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে দীর্ঘদিন পর মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ পেয়েছে বিএনপি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করতে চায় শীর্ষ নেতৃত্ব। এই লক্ষ্যে প্রথম দফায় তৃণমূল পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।</p> <p>এ ছাড়া যে জেলা বা মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি আছে, সেখানে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব ঠিক করা হবে।</p> <p>দলীয় সূত্র জানায়, যেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি আছে বা আহ্বায়ক কমিটি আছে, সেখানে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।</p> <p>জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ১৭ বছর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের দাবিতে আমাদের নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের মাঠ তৈরি করেছেন। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। ছাত্র-জনতা সেই মাঠে গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছে। এখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠন করা হবে।’</p> <p>দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় ৩০টির বেশি জেলা ও মহানগরে কাউন্সিল করার চিন্তা করছে দলটি। এর আগে ইউনিয়ন, থানা-উপজেলা-পৌর বিএনপির কমিটিও কাউন্সিলের মাধ্যমে করা হবে।</p> <p>দলীয় সূত্র জানায়, মেয়াদোত্তীর্ণ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং এর অধীন জেলা ও উপজেলা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও শুরু হবে শিগগিরই।</p> <p>দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ফলে ওসব নেতৃত্ব পরিবর্তন করার কথাও ভাবছেন তাঁরা।</p>