<p>বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন ভিসানীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। এটি এ বছরের ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল।</p> <p>এই ভিসানীতি তারা প্রয়োগ শুরু করেছে। এই ভিসানীতি বিরোধী দলের ওপরেও প্রযোজ্য। শুধু তা-ই নয়, এই নীতির ফলে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী। কারণ এই ভিসানীতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত করছে না, নির্বাচনও প্রতিহত করছে না। তাই এ নীতি প্রয়োগের ফলে ‌আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা নেই। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। বাংলাদেশের এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও এর স্থিতিশীলতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান। এ দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা তার মাধ্যমেই পুনরুদ্ধার হয়েছে। তিনি এ দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা একটি টেকসই, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার করেছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি মোট ৮২টি সংস্কার করেছেন। এ দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কারো গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না মানায় না।</p> <p>আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, মার্কিন ভিসানীতির প্রয়োগের ফলে কয়েকটি কারণে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির কারণে আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা হবে না। ভিসানীতি ঘোষণার পর যে চারটি কারণে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সেই কারণগুলো হচ্ছে : </p> <p>এক, এত দিন বিএনপি বলে আসছিল, তারা কোনো অবস্থাতেই শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। প্রয়োজনে যেকোনো মূল্যে নির্বাচন প্রতিরোধ করবে তারা। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন নতুন নীতি অনুযায়ী নির্বাচন প্রতিরোধ করা সবচেয়ে বড় অপরাধ। তাই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করার বিএনপির সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে। নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে বিএনপির যেকোনো সন্ত্রাস ও নাশকতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বে।  </p> <p>দুই, বিএনপির বিগত কয়েক বছরের রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। তারা বলে আসছে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে তারা নির্বাচনে যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সহায়ক কিংবা সহানুভূতিশীল কোনো বক্তব্য নেই। এই নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কোনো স্বীকৃতি নেই। মার্কিন এই নীতির ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিটি ভেস্তে গেল। অথচ বিএনপি এত বছর দেশের রাজনীতির মাঠ ছেড়ে শুধু বিদেশিদের ওপরই নির্ভর করে ছিল।  </p> <p>তিন, বিএনপি প্রায় দুই বছর ধরে বলে আসছিল, নির্বাচনের আগে এমন একটি বিদেশি স্যাংশন আসবে যার ফলে আওয়ামী লীগ সরকার লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। এর ফলে বিএনপি তাদের সুবিধাজনক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন চলে এলো। কোনো স্যাংশন এলো না। বরং যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা এলো, সেটি তাদের নির্বাচন প্রতিহত করার ষড়যন্ত্র অনেকটা নস্যাৎ করে দিল।  </p> <p>চার, বিএনপি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বলে আসছিল, বিএনপি নির্বাচনে না এলে সে নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহলে অংশগ্রহণমূলক না হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্য হবে না। ‌ যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতির ফলে বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিএনপি স্বেচ্ছায় নির্বাচনে না এলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না—এ ধরনের কোনো বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিতে নেই। তারা নিজে থেকে নির্বাচন বর্জন করলে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না—এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির ফলে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন তারা পাবে না—এটি পরিষ্কার। মোটা দাগে বলতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে বিএনপির নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল। পাশাপাশি শেখ হাসিনার অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল হয়ে যাবে—এ রকম অপপ্রচার যারা করছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।</p>