<p>সুস্থ-সবল শরীরে আল্লাহর ইবাদত করার উদ্দেশ্যে সাধ্যমতো উত্তম ও সুস্বাদু খাবার গ্রহণে ইসলামের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ ও অপচয় করা থেকে নিরুৎসাহ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘পানাহার করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)</p> <p>মিকদাম ইবন মাদিকারাব (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, পেটের চেয়ে মন্দ কোনো পাত্র মানুষ ভরাট করে না। পিঠের দাঁড়া সোজা রাখার মতো কয়েক লোকমা খাবারই আদম সন্তানের জন্য যথেষ্ট। আর বেশি খাবার ছাড়া যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখবে।(তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮৩)</p> <p>উপরোক্ত হাদিসে পরিমিত খাবারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ অপরিমিত খাবার মানুষকে দুর্বল করে ফেলে।</p> <p>বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের ৮০ শতাংশ রোগব্যাধি খাবারের কারণেই হয়ে থাকে। অপরিমিত খাবারই মানুষকে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। ল্যানসেটে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, দৈনন্দিন যে খাদ্যতালিকা সেটিই ধূমপানের চেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটায় এবং বিশ্বব্যাপী প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর মধ্যে একটির জন্য এই ডায়েট বা খাবারই দায়ী। (বিবিসি)</p> <p>সুবহানাল্লাহ, এ জন্যই হয়তো মহান আল্লাহ তাঁর নবীর মাধ্যমে তাঁর প্রিয় বান্দাদের অতিরিক্ত আহারে নিরুৎসাহ করেছেন। তাই সাহাবায়ে কিরামও অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ পছন্দ করতেন না বলে হাদিসে পাওয়া যায়। আতিয়্যাহ বিন আমির আল-জুহানি (মাকবুল) থেকে বর্ণিত, আমি সালমান (রা.)-এর কাছে শুনেছি, তাঁকে আহার করতে পীড়াপীড়ি করা হলে তিনি বলতেন, আমার জন্য যথেষ্ট যে আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, দুনিয়ায় যেসব লোক ভূরিভোজ করে, তারাই হবে কিয়ামতের দিন অধিক ক্ষুধার্ত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৫১)</p> <p>অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘কাফির সাত আঁতে আহার করে, অর্থাৎ বেশি পরিমাণ খায়, আর মুমিন এক আঁতে আহার করে অর্থাৎ কম খায়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৯৩)</p> <p>তা ছাড়া অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের কারণে শারীরিক ও মানসিক বহু ধরনের রোগের ঝুঁকি রয়েছে। ফলে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনাগুলো মেনে চলা গেলে একদিকে যেমন নবীজি (সা.)-এর সুন্নাহ পালনের সওয়াব পাওয়া যাবে, অন্যদিকে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকবে।</p> <p>মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থতার নিয়ামত দান করুন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নতের অনুসরণকে সহজ করুন।</p>