<p style="text-align:justify">মহান আল্লাহ পরকালে প্রত্যেক মানুষের আমলের হিসাব নেবেন। তাঁর দেওয়া জীবনকে কে কোন পথে ব্যয় করেছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দেওয়া ছাড়া কেউ এক পা-ও নড়তে পারবে না। সেদিন কোনো তথ্য গোপন করার কোনো সুযোগ থাকবে না। কারণ, আল্লাহ তাআলা ‌মানুষের আমল লিপিবদ্ধের জন্য ‘কিরামান-কাতিবিন’ নামের দুজন ফেরেশতা নিয়োজিত রেখেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘দুজন সম্মানিত ফেরেশতা, তোমরা যা করো তাঁরা তা সব জানেন।’ (সুরা : ইনফিতার, আয়াত : ১১)</p> <p style="text-align:justify">মহান আল্লাহর আদেশে এই দুজন ফেরেশতা মানুষের প্রতিটি কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ করে রাখেন। মানুষ তাঁদের দৃষ্টি এড়িয়ে কোনো কাজই করার সক্ষমতা রাখে না। মানুষের ওপর শুধু কিরামান কাতিবিনই যে নজর রাখছেন বিষয়টা তা নয়, মানুষের আশপাশে থাকা আল্লাহর প্রতিটি মাখলুকই মানুষের গতিবিধি সংরক্ষিত রাখছে।</p> <p style="text-align:justify">মানুষ যেখানে দাঁড়িয়ে কোনো আমল করে সে জায়গাটি পর্যন্ত তাদের গতিবিধি সংরক্ষিত করে রাখে। পরকালে জমিন তার কাছে থাকা সব তথ্য বের করে দেবে। সুতরাং কেউ সেদিন তার কর্মকাণ্ড অস্বীকার করার সুযোগ পাবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সেদিন জমিন নিজের ভেতরে রাখা যাবতীয় খবর বলে দেবে।’ (সুরা : জিলজাল, আয়াত : ৪)</p> <p style="text-align:justify">সুরা জিলজালের এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিস রয়েছে। এই আয়াত তিলাওয়াত করে রাসুল (সা.) সাহাবাদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জানো জমিনের ভেতরের খবর কী? সাহাবিরা বলেন, আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তার খবর এই যে সে নারী-পুরুষের সেসব কাজের সাক্ষ্য দেবে, যা তারা তার ওপর করেছে। সে বলবে, অমুক দিন অমুক ব্যক্তি এই এই কাজ করেছে। এভাবে সে সাক্ষ্য দেবে। তিনি বলেন, এটাই হবে জমিনের পেশকৃত খবর। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪২৯)</p> <p style="text-align:justify">এমনকি মানুষের যত্নে গড়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও মানুুষের কৃতকর্মের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে। কিয়ামতের দিন কিছু কিছু মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই তাদের সব কর্মকাণ্ডের কথা বলতে থাকবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৬৫)</p> <p style="text-align:justify">অতএব, আমাদের উচিত পাপের পথ থেকে বিরত থাকা, মহান আল্লাহকে ভয় করা। কোনো পাপ করে ফেললে মহান আল্লাহর কাছে খাঁটি মনে তাওবা করে ভবিষ্যতে পাপকাজ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করা। মহান আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।</p>