<p style="text-align: justify;">ঝগড়া-বিবাদ অপছন্দনীয় কাজ। পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা, গালি দেওয়া—এসব হারাম ঘোষণা করেছে ইসলাম। প্রিয় নবী (সা.) ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসা করাকে সবচেয়ে উত্তম আমল বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ ঝগড়া-বিবাদের মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর খারাপ প্রভাব সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।</p> <p style="text-align: justify;">আবু দারদা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের রোজা, নামাজ, সদকার চেয়েও ফজিলতপূর্ণ কাজের কথা বলব না? সাহাবায়ে কেরামের একথা শুনে অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি হলো এবং তাঁরা বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তিনি বলেন, পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা। আর পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৯)</p> <p style="text-align: justify;">যেসব কাজ দ্বারা পরস্পরের ঝগড়া-বিবাদ, ঘৃণা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য দূর হয়ে যায় তা করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। আর তা নামাজ-রোজা ও সদকা থেকে উত্তম বলে ঘোষণা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিদিন যাতে সূর্য উদয় হয় (অর্থাৎ প্রত্যেক দিন) মানুষের প্রতিটি জোড়ার ওপর একটি করে সদকা আছে। (আর সদকা শুধু সম্পদ ব্যয় করাকেই বলে না, বরং) দুজন মানুষের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়াটাও সদকা। (মুসলিম, হাদিস : ২২২৫)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>যেভাবে নেক আমল নষ্ট করে</strong></p> <p style="text-align: justify;">পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, ঘৃণা-বিদ্বেষ মুণ্ডনকারী বস্তু। এর দ্বারা আমাদের নেক আমল মুছে যায়। কারণ মানুষ ঝগড়া-বিবাদ করলে নানা পাপাচারে লিপ্ত হয়। পরস্পর গিবত-শেকায়েত, অপবাদ দেওয়া—এ ধরনের অসংখ্য গুনাহে জড়িয়ে পড়ে। ফলে ঝগড়ার মাধ্যমে মানুষ দ্বিন থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে পড়ে। আর অন্তর থেকে সত্যের আলো হ্রাস পেতে থাকে।</p> <p style="text-align: justify;">আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবে, কেননা এটাই হলো দ্বিন ধ্বংসকারী বিষয়। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫১০)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>মীমাংসার জন্য মিথ্যা বলা</strong></p> <p style="text-align: justify;">ঝগড়া মীমাংসা করার জন্য মিথ্যা বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে; যদি মনে করে এর দ্বারা দুজনের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ তৈরি হবে, তাদের সেই হিংসা-বিদ্বেষ রফা হয়ে যাবে। অথচ মিথ্যা বলা ইসলামে একটি জঘন্যতম পাপ। কিন্তু ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কিছু মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া লাগে সে ক্ষেত্রে শরিয়ত ছাড় দিয়েছে। উম্মু কুলসুম বিনতে ওকবাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহ‌র রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ওই ব্যক্তি মিথ্যাচারী নয়, যে মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য ভালো কথা পৌঁছে দেয় কিংবা ভালো কথা বলে। (বুখারি, হাদিস : ২৬৯২)</p> <p style="text-align: justify;">আল্লাহ তাআলা আমাদের ঝগড়ামুক্ত জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন।</p> <p> </p>