<p style="text-align: justify;">মানুষ যত নিয়ামত উপভোগ করে, সেগুলো আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা চন্দ্র, সূর্য, পানি, বাতাস, ফল, ফসল, শাক-সবজি, গাছপালা থেকে শুরু করে সব কিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য নিয়ামতস্বরূপ। শারীরিক সুস্থতা, আত্মার প্রশান্তি—সবই মানুষের প্রতি আল্লাহর দেওয়া বিশেষ নিয়ামত। এসব নিয়ামত পেয়েও মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায়, আল্লাহর অবাধ্য হয়, পাপাচারে লিপ্ত হয়।</p> <p style="text-align: justify;">এই অবাধ্যতা ও পাপাচারের দরুন একসময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাস্তি নেমে আসে। তখন মানুষ আল্লাহকে ডাকতে থাকে। কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে থাকে। আবার অনেকে অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। পরে মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করে বিপদ দূর করে দেন। কিন্তু পরক্ষণে বহু মানুষ অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়।</p> <p style="text-align: justify;">বিপদমুক্ত হওয়া কিংবা নিয়ামত লাভের পর আল্লাহকে ভুলে যাওয়া অকৃতজ্ঞতার পরিচায়ক। আল্লাহ বহু মানুষকে নিয়ামত দিয়ে তার অকৃতজ্ঞতার পরিধি বাড়িয়ে দেন এ ধরনের লোককে সাময়িক ভোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর পরিণতি শিগগিরই তারা জানতে পারবে। মানুষ যতই অবাধ্যতা ও বিদ্রোহ করুক না কেন, আল্লাহ তাদের সংশোধিত হওয়ার সুযোগ দেন। এর পরও অনেকে পাপাচারের মধ্যে ডুবে থাকে। যারা বিজ্ঞ ও জ্ঞানী, তারা দূরদর্শী হয়।</p> <p style="text-align: justify;">ভবিষ্যতের সুখ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য তারা বর্তমান সময়ে কষ্ট স্বীকার করে। কিন্তু যারা অপরিণামদর্শী, তারা বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ক্ষণস্থায়ী আরাম-আয়েশের পেছনে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। যারা পরকালের সুখ-শান্তিতে বিশ্বাস করে না, তারা অপরিণামদর্শী। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন নিয়েই তারা ব্যস্ত। পরকালের সুখ-শান্তির জন্য ইহকালে তারা সামান্য কষ্ট স্বীকার করতে রাজি নয়। তারা সাময়িক সুখের পেছনে ছুটে বেড়ায়। তাদের একদলের একসময় বোধোদয় হয়। ফলে তারা সঠিক পথে ফিরে আসে। আর একদল পরকালে বিশ্বাস করে না।</p> <p style="text-align: justify;">কিন্তু পরম করুণাময় আল্লাহ তাদের ধ্বংস না করে অবকাশ দেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে অনুতাপ করার সুযোগ পায়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ যদি মানুষের শাস্তির ব্যাপারে তড়িঘড়ি করতেন, যেভাবে তারা পার্থিব কল্যাণ লাভের জন্য তড়িঘড়ি করে, তাহলে তাদের মৃত্যু ঘটত। সুতরাং যারা (কিয়ামতের দিন) আমার সাক্ষাতের আশা (ভয়) করে না, আমি তাদের অবাধ্যতায় ছেড়ে দিই, যেন (তারা) উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায়।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ১১)<br />  </p>