<article> <p>প্রতিবেশীর সঙ্গে অসদাচরণ করার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। এর জন্য ইহকালে ও পরকালে আছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি। এখানে কয়েকটি ক্ষতি উল্লেখ করা হলো :</p> <p><strong>প্রতিবেশীর সঙ্গে অসদাচরণকারীর ঈমান অপূর্ণ : </strong>প্রতিবেশীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা মুমিনের পরিচয় নয়। ঈমানের দাবি হলো- প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা এবং তার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিবেশীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহারকারী মুমিন নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর কসম! সে ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে ব্যক্তি মুমিন নয়।’ জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কে সে ব্যক্তি? তিনি বলেন, ‘যে লোকের অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১৬)</p> </article> <article> <p><strong>নিরাপত্তাহীন হওয়া :</strong> সমাজের মানুষ যেমন পরস্পরের প্রতিবেশী, তেমনি তারা একে অপরের সহযোগীও বটে। তারা পরস্পরের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসে। কিন্তু তাদের সঙ্গে যদি দুর্ব্যবহার করা হয় তাহলে তারা বিপদে এগিয়ে আসবে না। ফলে তারা নিরাপত্তাহীন হয়ে যাবে। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! ওই বান্দা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫১০; সিলসিলা সহিহাহ : ৫৪৯)</p> </article> <article> <p><strong>আল্লাহর কাছে প্রতিবেশীর অভিযোগ : </strong>প্রতিবেশীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হলে কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর কাছে অভিযোগ করবে। এই মর্মে হাদিসে এসেছে, ইবনে ওমর (রা.) বলেন, এমন একটি কাল আমরা অতিবাহিত করেছি, যখন কারো কাছে তার মুসলমান ভাইয়ের চেয়ে তার দিনার ও দিরহামের উপযুক্ত প্রাপক আর কেউ ছিল না। আর এখন এমন যুগ এসেছে, যখন দিনার ও দিরহামই আমাদের কারো কাছে তার মুসলমান ভাইয়ের চেয়ে বেশি প্রিয়। আমি নবী করিম (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘অনেক প্রতিবেশী কিয়ামতের দিন তার প্রতিবেশীকে অভিযুক্ত করবে এবং বলবে, এই ব্যক্তি আমার জন্য তার দ্বার রুদ্ধ করে রেখেছিল এবং আমাকে তার সদাচার থেকে বঞ্চিত করেছে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১১১)</p> </article> <article> <p><strong>জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়া :</strong> প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হলে পরকালে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৬)</p> <p>প্রতিবেশীর সঙ্গে অসদাচরণকারী জাহান্নামে প্রবেশ করবে বলে নবী করিম (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! অমুক নারী রাতে সালাত আদায় করে, দিনে সিয়াম পালন করে, ভালো কাজ করে, দান-খয়রাত করে এবং নিজ প্রতিবেশীকে জিহ্বার দ্বারা কষ্ট দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, সে জাহান্নামি। আবার সাহাবিরা বলেন, অমুক নারী ফরজ সালাত আদায় করে, বস্ত্র দান করে এবং কাউকে কষ্ট দেয় না। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সে জান্নাতি। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৯৬৭৩; আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১১৯)</p> </article>