<p>বাংলাদেশ থেকে যারা হজে যান, সাধারণত তারা হজে তামাত্তু পালন করে থাকেন। হজে তামাত্তুর ধারাবাহিক বর্ণনা হলো—</p> <p>১. মিকাতের আগে (প্রথমে মক্কায় গেলে বিমানে আরোহণের আগে) ইহরাম বাঁধা।</p> <p>২. মক্কা শরিফে পৌঁছে জিনিসপত্র নিজ নিজ কক্ষে রেখে অজু করে মুয়াল্লিমের সঙ্গে কাবা শরিফে যাওয়া।</p> <p>৩. কাবা তাওয়াফ করা তথা সাতবার কাবা প্রদক্ষিণ, পারলে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, সম্ভব না হলে হাতে ইশারা করে হাতের উপর চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করা। </p> <p>৪. কাবা ঘরকে সাত চক্কর দ্রুত প্রদক্ষিণ করা (রমল), তাওয়াফের সময় ইহরামের চাদর ডান হাতের নীচ দিয়ে এনে বাম কাঁধে রাখতে হবে যেনো ডান কাঁধ ও বাহু উন্মুক্ত হয়ে থাকে (ইজতিবাহ)। এ দুটি আমল তাওয়াফের সুন্নাহ, যা তাওয়াফে যিয়ারত ও ওমরাহর সময়ও করা সুন্নাত।</p> <p>৫. সাফা-মারওয়ার মাঝে সাই করা বা দৌঁড়াতে হবে সাতবার; শুরু হবে সাফা পর্বত থেকে শেষ করতে হবে মারওয়ায় গিয়ে। </p> <p>৬. মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছাঁটানো। এসব সুসম্পাদনের পর হজের দিন-কয়েক বাকি থাকলে ইহরাম মুক্ত হয়ে মদিনা শরিফ যাওয়া যায়।</p> <p>হজের আগে ওমরাহ পালন শেষে ইহরাম থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পুরনায় হজের নিয়ত করাকে হজে তামাত্তু বলা হয়।</p> <p><strong>হজের মূল সময়ের কাজ</strong></p> <p><strong>৮ জিলহজের আমল </strong></p> <p>নিজ নিজ কক্ষ বা কাবাঘরে বসে ইহরাম বেঁধে মক্কা থেকে মুয়াল্লিমের অধীনে মিনায় পৌঁছতে হবে। এখানে এ দিন জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও পরদিন ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন।</p> <p><strong>৯ জিলহজের আমল </strong></p> <p>এ দিনের ধারাবাহিক কাজ </p> <p>১. সকালে মিনা থেকে রওয়ানা হয়ে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছতে হবে এবং জোহর-আসর একসাথে পড়তে হবে,</p> <p>২. গভীর মনোযোগে খুতবা শুনবেন এর খুতবার পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত তালবিয়া, তাহমিদ, দুয়া-দরুদ, ইস্তিগফার, আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতে থাকবেন,</p> <p>৩.সুর্যাস্তের পর মাগরিব না পড়েই মুজদালিফায় রওয়ানা হবেন। রাত যতক্ষণই হোক মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব-এশা একসঙ্গে পড়বেন। মাগরিবের সময় চলে যাচ্ছে ভেবে যাত্রাবিরতি করা যাবে না, বরং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব এশা একত্রে পড়া হজের বিধান।</p> <p>৪. এ রাতে (৯ তারিখের দিবাগত রাত) মুজদালিফায় বিশ্রাম নিবেন বা ঘুমাবেন। ফজর পড়ে সূযোদয়ের আগে ফের মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন,</p> <p>৫. মুজদালিফা থেকে কমপক্ষে ৪৯টি পাথর সংগ্রহ করে সঙ্গে আনতে হবে।</p> <p><strong>১০ জিলহজের আমল </strong></p> <p>১. মুজদালিফা থেকে মিনায় পৌঁছতে হবে। </p> <p>২. এদিন শুধু বড় শয়তানের স্তম্ভে (জুমরাতে উকবা) সাতটি পাথর নিক্ষেপ করবেন। অন্য স্তম্ভে পাথর মারা যাবে না।</p> <p>৩. জুমারাতে পাথর মারার পর কোরবানির সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোরবানি দিতে হবে। (ক্ষতিপূরণ কোরবানি ও নফল কোরবানিও করা যাবে),</p> <p>৪. কোরবানি করার পর মাথা মুণ্ডাতে বা চুল খাটো করতে হবে।</p> <p>৫. এদিন পুর্বোক্ত কাজ করার পর তাওয়াফ ও তাওয়াফে জিয়ারত করতে হবে। (অবশ্য ভিড় এড়ানোর জন্য এ তাওয়াফ ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিলম্ব করা যাবে) ১২ তারিখ সকালে ৩টি স্তম্ভে পাথর মেরে মিনা থেকে চূড়ান্ত বিধায় নিয়ে মক্কা শরিফে এসেও এ ফরজ তাওয়াফ করার সুযোগ থাকে।</p> <p><strong>১১ জিলহজের আমল : </strong>শয়তানের তিনটি স্তম্ভে ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে।</p> <p><strong>১২ জিলহজের আমল : </strong>তিন স্তম্ভে আবার সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। এভাবে পাথর মারার সংখ্যা ১০ জিলহজ ০৭টি, ১১ জিলহজ সাতটি করে একুশটি এবং ১২ জিলহজে সাতটি করে ২১টি পাথর মারতে হবে।</p> <p>উল্লেখ্য যে, ১০ ও ১১ জিলহজ তাওয়াফে জিয়ারত করতে না পারলেও ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে অবশ্যই সম্পাদন করতে হবে এবং ১১ জিলহজ পাথর মারতে হবে ছোট থেকে বড় স্তম্ভের দিকেই যেতে হবে।</p> <p>১২ তারিখের পর হাজি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবেন। ১০ তারিখ মাথা মুণ্ডানোর পর ইহরাম অবস্থার সমাপ্তি ঘটবে। তবে তাওয়াফে জিয়ারতের আগে স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।</p>