<p>রায়হান হাবিব একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি সম্প্রতি বিয়ে করেছেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। স্ত্রী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিয়ের পর স্ত্রী ও তাঁর পরিবার দাবি করছে, স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ তাঁকে বহন করতে হবে। রায়হান হাবিব পাত্রীর লেখাপড়া শেষ হয়নি সেটা জানতেন, তবে স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ দিতে হবে সেটা কখনো চিন্তা করেননি। প্রশ্ন হচ্ছে, রায়হান হাবিব কি স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ দিতে বাধ্য?</p> <p>উত্তর হলো, বিয়ের সময় যদি স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ দেওয়ার শর্ত থাকে এবং স্বামী যদি তা মেনে নেন, তবে লেখাপড়ার খরচ বহন করা আবশ্যক। আর যদি বিয়ের সময় এমন কোনো শর্তারোপ করা না হয়, তবে স্বামী স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ বহন করতে বাধ্য নন। স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ক্ষেত্রে শরিয়তের মূলনীতি হলো- স্ত্রী যখন নিজেকে স্বামীর হাতে সমর্পণ করবেন, তখন তিনি মৌলিক জীবনোপকরণগুলো ভরণ-পোষণ হিসেবে লাভ করবেন। যেমন : খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান ও পোশাক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘জনকের দায়িত্ব যথাবিধি তাদের ভরণ-পোষণ করা। কাউকে তার সাধ্যাতীত কার্যভার দেওয়া হয় না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৩৩)</p> <p>রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে নিজেদের জন্য হালাল করেছ।...তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্বও তোমাদের ওপর। তোমরা তা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৯০৫)</p> <p>যদি স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর লেখাপড়ার খরচ বহন করার প্রচলন সমাজে থাকে এবং স্বামীও সামর্থ্যবান হন, তবে তাঁকে স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ বহন করতে বলা হবে। তবে উচিত হলো, এমন কোনো প্রত্যাশা থাকলে মেয়েপক্ষ বিয়ের আগেই স্বামীকে জানাবে এবং স্বামী নিজের সামর্থ্য বিবেচনা করে সম্মতি জানাবেন। এ ছাড়া পাত্রীপক্ষের অভিভাবকদের মনে রাখা আবশ্যক যে ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইনে উচ্চশিক্ষা অপরিহার্য নয়। তাই স্বামীর ওপর লেখাপড়ার খরচ দিতে চাপ প্রয়োগ করা অনুচিত।</p> <p><em>ইসলাম কিউএ ডটইনফো অবলম্বনে</em></p>