<p>আগুন দিয়ে কোনো প্রাণীকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার পৃথিবীর কারো নেই। এমনকি  কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মতো জঘন্য অপরাধ সাব্যস্ত হলেও ইসলামী শাসক তাকে আগুনে পুড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবেন না। কেননা আগুনে পুড়িয়ে শাস্তি দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর। হাদিসে শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এক অভিযানে প্রেরণ করেন এবং বলেন, ‘তোমরা যদি অমুক ও অমুক ব্যক্তিকে পাও, তবে তাদের উভয়কে আগুনে জ্বালিয়ে ফেলবে।’ অতঃপর আমরা যখন বের হতে চাইলাম, তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কেউ আগুন দিয়ে শাস্তি দিতে পারবে না। কাজেই তোমরা যদি তাদের উভয়কে পাও, তবে তাদেরকে হত্যা করো।’ (বুখারি, হাদিস : ৩০১৬)</p> <p>মহানবী (সা.) তাদেরকে এই নির্দেশনা দেওয়ার কারণ হলো, আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া খোদাদ্রোহীদের কাজ। খোদাদ্রোহী নমরুদ যখন দলিল-প্রমাণ কোনো দিক দিয়ে ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে পেরে উঠছিল না, তখন সে তার অনুসারীদের (তাদের নিজেদের হাতে তৈরি) প্রভুদের দোহাই দিয়ে হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে আগুনে জালিয়ে শেষ করে দিতে উসকে দিয়েছিল। পবিত্র কোরআনে তার সেই কুটচাল সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা একে পুড়িয়ে মারো এবং তোমাদের উপাস্যদের সাহায্য করো, যদি তোমরা কিছু করতে চাও’। (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৬৮)</p> <p>কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের সেই ফন্দি অকার্যকর করে দেন। এবং তাঁর প্রিয় বন্ধুকে তিনি তাদের জলন্ত আগুন থেকে রক্ষা করেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, আমি বললাম, ‘হে অগ্নি! তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও শান্তিময় হয়ে যাও। তারা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরকেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে ছাড়লাম।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৬৯-৭০)</p> <p>হয়তো এ ধরনের বিষয়গুলো মাথায় রেখেই নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ওই কুখ্যাত কাফিরদের আগুনে জ্বালাতে নিষেধ করেছেন। শুধু মানুষই নয়, একটা পিঁপড়াকেও আগুনে পুড়িয়ে শাস্তি দেওয়ার অধিকার মানুষের নেই। একবার রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামের পুড়িয়ে দেওয়া একটা পিঁপড়ার ঢিবি দেখতে পেয়ে বলেন, কে এগুলো পুড়িয়েছে? তাঁরা বলেন, আমরা। তিনি বলেন, আগুনের রব ছাড়া আগুন দিয়ে কিছুকে শাস্তি দেওয়ার কারো অধিকার নেই। (আবু দাউদ : ২৬৭৫)</p> <p>উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বোঝা গেল, আগুন দিয়ে কোনো প্রাণীকে হত্যা করা জঘন্য অপরাধ। মুসলমানদের উচিত, এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহকে ভয় করা। কারণ মহান আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।<br />  </p>