<p>কেউ যদি অন্তরের দৃষ্টি দিয়ে নিজের দিকে তাকায় এবং চারপাশে চোখ বুলায় তাহলে দেখবে, যাপিত জীবনে সে মহান আল্লাহর অগণিত নিয়ামতের সাগরে ডুবে আছে। অথচ বহু মানুষ চিন্তার ইবাদত থেকে উদাসীন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে কতই না নিদর্শন আছে, যেগুলো তারা অতিক্রম করে। অথচ সেগুলো তারা এড়িয়ে যায়। তাদের বেশির ভাগ আল্লাহকে বিশ্বাস করে। অথচ তারা শিরক করে।’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ১০৫-১০৬)</p> <p>আবু সুলাইমান আদ-দারানি (রহ.) বলতেন, ‘ঘর থেকে বের হলে যখনই কোনো বস্তুর ওপর আমার চোখ পড়ে, তখন সেখানে আমাকে দেওয়া আল্লাহর কোনো না কোনো নিয়ামত দেখতে পাই, অথবা সেখানে আমার জন্য কোনো উপদেশ পেয়ে যাই।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির ২/১৮৪)</p> <p>একজন মুসলিম জীবনের সব কিছু নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে—এটাই স্বাভাবিক। নিজের কাজ নিয়ে ভাববে যে আল্লাহ তার উত্তম জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মা-বাবাকে নিয়ে চিন্তা করবেন যে আল্লাহ আমার মা-বাবার অন্তরে আমার জন্য কত ভালোবাসা সৃষ্টি করেছেন, সুখে-দুঃখে তাঁদের পরশে আমি প্রশান্তি পাই। মুমিন ব্যক্তি নিজের স্ত্রী নিয়ে ভাববে যে আল্লাহ তাকে একজন ভালো স্ত্রী দিয়েছেন, যে আগে ছিল অপরিচিত, অথচ এখন সে তার জীবনের অংশ। জীবনযাপনের নিত্য সহযাত্রী। তার মাধ্যমে জীবনের অপূর্ণতা দূর হয়েছে এবং দেহ-মন প্রশান্ত হয়। এ ছাড়া একজন মুমিন গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখতে পাবে যে শান্তি-নিরাপত্তা, খাওয়াদাওয়া, জীবনযাপনসহ বিবিধ ক্ষেত্রে আল্লাহ তাকে অসংখ্য নিয়ামত অন্যদের চেয়ে বেশি দিয়েছেন।</p> <p>এভাবে চিন্তা করতে না পারলে মানুষ আল্লাহর নিয়ামতের ব্যাপারে আজীবন অজ্ঞই থেকে যাবে। ফলে সে অকৃতজ্ঞ মানুষের দলভুক্ত হয়ে যাবে। ফকিহ আবুল লায়েস সমরকান্দি (রহ.) বলেন, মানুষ যদি চিন্তা-ভাবনার মর্যাদা লাভ করতে চায়, সে যেন (আল্লাহর দেওয়া) প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব ধরনের নিয়ামতের কথা চিন্তা-ভাবনা করে দেখে। (তাম্বিহুল গাফেলিন, পৃষ্ঠা ৫৭০)</p> <p>মহান আল্লাহ আমাদের চিন্তার মাধ্যমে তাঁর নিয়ামত উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।</p>