<p>কোনো মানুষই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। মানুষ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল সামাজিক জীব। হয়তো দুনিয়ার রীতিনীতিতে সবার সামাজিক অবস্থান এক নয়। পৃথিবীর শৃঙ্খলাবিধি ঠিক রাখতে মহান আল্লাহ ধনী-গরিব, উঁচু বংশ-নিচু বংশ, দক্ষ-অদক্ষ হরেক রকম মানুষ সৃষ্টি করেছেন। একেকজন একেক বিষয়ে পারদর্শী হওয়ায় বিভিন্ন পেশায় তারা নিয়োজিত। কিন্তু কাউকেই পেশার কারণে ছোট করে দেখা কিংবা তাচ্ছিল্যের কোনো সুযোগ নেই।</p> <p>হজরত আবু জার (রা.) বলেন, একদিন আমার ও আরেক লোকের মধ্যে কথাবার্তা চলছিল। তার মা ছিল জনৈকা অনারব নারী। আমি তার মা তুলে গালি দিলাম। তখন লোকটি নবী (সা.)-এর কাছে তা বলল। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি অমুককে গালি দিয়েছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তুমি কি তার মা তুলে গালি দিয়েছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই তুমি তো এমন লোক, যার মধ্যে জাহিলি যুগের স্বভাব আছে। আমি বললাম, এখনো? এই বৃদ্ধ বয়সেও? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাআলা ওদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং আল্লাহ তাআলা যার ভাইকে তার অধীন করে দেন, সে নিজে যা খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়। সে নিজে যা পরে, তাকেও যেন তা পরায়। আর তার ওপর যেন এমন কোনো কাজ না চাপায়, যা তার শক্তির বাইরে। আর যদি তার ওপর এমন কঠিন ভার দিতেই হয়, তাহলে সে নিজেও যেন তাকে সাহায্য করে। (বুখারি, হাদিস : ৬০৫০)</p> <p>কর্মচারীরা কোনো ভুল করে ফেললেই তাকে শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! শ্রমিককে কতবার ক্ষমা করব? নবীজি চুপ থাকলেন। লোকটি আবারও জিজ্ঞেস করলে নবীজি (সা.) চুপ থাকলেন। লোকটি তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করলে নবীজি (সা.) বললেন, প্রতিদিন ৭০ বার হলেও তার অপরাধ ক্ষমা করবে।’ (আবু দাউদ : ২/৭৬৩)</p> <p>রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুশয্যায় যে অসিয়ত করে যান তা ছিল—‘সাবধান থাকবে নামাজ ও তোমাদের অধীনস্থদের বিষয়ে।’ (ইবনে মাজাহ : ১/৫১৯)</p> <p>তাই অধীনদের সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ রাখা মালিকের দায়িত্ব।</p>