<p style="text-align:justify">১১ বছর আগে প্রাইভেট কার পোড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে সাতজনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরবসহ সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেওয়া এই রাজনৈতিক মামলার সাজা টেকেনি।</p> <p style="text-align:justify">আপিল শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন রায়ে আসামিদের খালাস দিয়েছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ছাত্রসংগঠনগুলোর দূরত্ব বাড়ছে ‘বৈষম্যবিরোধী’দের সঙ্গে!" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/07/1733538452-e7011721b1aa88493bcd4de9f07f6898.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ছাত্রসংগঠনগুলোর দূরত্ব বাড়ছে ‘বৈষম্যবিরোধী’দের সঙ্গে!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/12/07/1454771" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">শুধু এই মামলা নয়, আপিলের রায়ে অনায়াসে রাজনৈতিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। আপিল মামলার রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন, এসব মামলার ঘটনা, পারিপার্শ্বিকতা ও প্রসিকিউশনপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য সঠিকভাবে মূল্যায়ন ও বিচার-বিশ্লেষণ করতে ব্যর্থ হয়ে আইন ও তথ্য উভয় ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তর্কিত রায়ে বেআইনিভাবে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছিল।</p> <p style="text-align:justify">তেজগাঁও থানার গাড়ি পোড়ানোর মামলায় পাঁচজনের সাক্ষ্য নেন আদালত। মামলার বাদী জাহাঙ্গীর হোসেন তার জবানবন্দিতে নির্দিষ্টভাবে কোনো আসামির নাম বলেননি। সাক্ষী মো. সালাউদ্দিন তার জবানবন্দিতে বলতে পারেননি অভিযুক্ত আসামিরা প্রাইভেট কারে আগুন দিয়েছে কি না। এ ছাড়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিযুষ কুমার সরকার মামলা হওয়ার আগেই জব্দ তালিকায় মামলার নম্বর দিয়ে নিয়মের ব্যত্যয় করেছেন। তার দেওয়া একজন সাক্ষীও প্রসিকিউশনপক্ষের বক্তব্য সমর্থন করে সাক্ষ্য দেননি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/07/1733538611-1a6fcda445d68d1a332e182be8ef2409.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/12/07/1454772" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি সঠিকভাবে তদন্ত না করেই অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। এতে প্রসিকিউশনপক্ষ কোনো উপযুক্ত সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারেনি।</p> <p style="text-align:justify">আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশের কাজে বাধা, গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের দায়ে ২০১১ সালের ৪ জুন গুলশান থানায় মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।</p> <p style="text-align:justify">গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির সাবেক নেতা মেজর (অব.) মো. হানিফসহ আট নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সাতজনের সাক্ষ্য নেন আদালত। পাঁচজন তাদের জবানবন্দিতে সাজাপ্রাপ্ত কোনো আসামির নাম বলেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গতানুগতিক সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্য সাক্ষী পুলিশ হওয়ায় তাকে স্বার্থসংশ্লিষ্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আজ ৭ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/07/1733537430-db8e74df8d74f3efdd249a3fd3a466da.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আজ ৭ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/12/07/1454769" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এসব বিষয় আলোকপাত করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক মো. আবুল কাশেম বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করেন। একই সঙ্গে আসামিদের খালাস দেন। এই রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, বিচারিক আদালত সঠিকভাবে সাক্ষ্য পর্যালোচনা করেননি। ফলে তর্কিত রায় আইনগত ও তথ্যগতভাবে সঠিক হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">এ ছাড়া গত ২৭ নভেম্বর নিউ মার্কেট থানার নাশকতার মামলায় দেড় বছরের সাজা থেকে আপিলে খালাস পেয়েছেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর শরাফত আলী। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক মুহাম্মদ আলী আহসান আপিল শুনানি শেষে রায় দেন। বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, মামলার বাদী এএসআই খলিলুর রহমান আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় মীর শরাফত আলী সপুর নাম বলেননি। এতে প্রমাণিত হয়, এ মামলার সঙ্গে সপুর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আগের বিচারক সঠিকভাবে পর্যালোচনা না করে এ মামলার রায় দিয়েছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আজ ৭ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/07/1733537430-db8e74df8d74f3efdd249a3fd3a466da.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আজ ৭ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/12/07/1454769" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সূত্র বলছে, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে গণহারে মামলার সাজা দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। সাজা দিতে গিয়ে মৃত ব্যক্তিও বাদ পড়েনি। তখন নাশকতা, পুলিশকে কাজে বাধা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানা অভিযোগে করা রাজধানীর ৪০টি থানার ১৬৩টি মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীকে সাজা দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।</p> <p style="text-align:justify">এর মধ্যে আগস্টে দুটি, অক্টোবরে ১২টি, নভেম্বরে ৫০টি, ডিসেম্বরে ৮৭টি এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে চারটি মামলায় রায় হয়। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল,</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জন্মের আগে-পরে পাল্টায় শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্রম" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/07/1733536824-423a684d08a4b732a8dd1638047c1193.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জন্মের আগে-পরে পাল্টায় শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্রম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/12/07/1454768" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব এবং উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাইফুল আলম নিরবের সাতটি এবং ইসহাক সরকারের ছয়টি মামলায় কারাদণ্ড হয়।</p> <p style="text-align:justify">বর্তমানে এসব মামলায় দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে আপিল করছেন দণ্ডিত ব্যক্তিরা। এ ক্ষেত্রে আপিল শুনানি শেষে তারা খালাস পাচ্ছেন। সাইফুল আলমের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সাইফুল আলমকে সাতটি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। চারটি মামলায় তিনি আপিলে খালাস পেয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">অন্য তিনটি মামলা আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এসব মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে আসামি করা হয়। কোনো সাক্ষী আদালতে তার নাম বলেনি। তাকে সাজা দেওয়ার কোনো উপাদান ছিল না। আপিল করলে বিচারক আইনগত দিক বিবেচনা করে তাকে খালাস দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো আদালতে ন্যায়বিচার ছিল না। এখন ন্যায়বিচার হচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">ইসহাক সরকারের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশনায় আইনের তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে তৎকালীন বিচারকরা সাজা দিয়েছেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা ছাড়াই সরকারকে খুশি করতেই এই ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে, যা মামলার আপিল রায়ে উঠে এসেছে।</p> <p style="text-align:justify">বিএনপির সহআইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, ‘সাজা দিতে হলে সাক্ষীদের জবানবন্দিতে আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। কিন্তু বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া এবং অপরাধের কোনো উপাদান না থাকা সত্ত্বেও বিচারকরা সরকারের নির্দেশ মোতাবেক সাজা দিয়েছেন। তবে আপিলে আইনগতভাবে কোনো উপাদান না থাকায় এখন এই সাজা টিকছে না।’</p> <p style="text-align:justify">ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার গায়েবি মামলা দিয়ে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চেয়েছেন। তার অংশ হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া গণহারে সাজা দিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">তখন স্বাভাবিক বিচারপ্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে প্রতিদিন সাক্ষ্য নিয়েছে। এমনকি পুলিশ দিয়ে সাক্ষীকে ধরে এনে জোরপূর্বক সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এসব রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় তড়িঘড়ি করে বিচার করা হয়েছে, যা আপিলে এসে টিকছে না। তবে এখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’</p>