<p>দেশে বৈধ-অবৈধ বিদেশি কর্মীর সংখ্যা কত, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যেসব পদে বিদেশি কর্মীরা কাজ করছেন, সেসব পদের বিপরীতে দেশে যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা কত, তাও জানাতে চেয়েছেন আদালত। পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে তা জানাতে বলা হয়েছে।</p> <p>আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) এসংক্রান্ত এক রিট আবেদনে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।</p> <p>অননুমোদিত কর্মীসহ অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। অর্থসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।</p> <p>আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ, আনিচ উল মাওয়া।</p> <p>আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাওয়া একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু যোগ্যতা থাকার পরও দেশের শিক্ষিত যুবসমাজ কাজ পাচ্ছে না। বেকারত্ব চরম আকার ধারণ করেছে। দেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।’</p> <p>এ আইনজীবী বলেন, ‘বেকারত্বের এমন দশার মধ্যেও প্রচুর বিদেশি দেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে কাজ করছে। তাদের কতজনের কাজের অনুমোদন (ওয়ার্ক পারমিট) আছে, কতজন বৈধ বা অবৈধ, তার কোনো হিসাব আমাদের জানা নেই। ফলে বিদেশিরা প্রতিবছর দেশের কত টাকা নিয়ে যাচ্ছে, তাও আমরা জানি না। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা চার শিক্ষিত বেকার এ রিটটি করেন। শুনানির পর আদালত রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।’ কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এবং সুনির্দিষ্টভাবে কোন বা কোন কোন বিবাদীকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে, তা জানাতে পারেননি এই আইনজীবী। </p> <p>গত বছর ১৯ নভেম্বর বিবাদীদের আইনি নোটিশ দেন ঢাকার বাসিন্দা মোয়াহতাসিম ইসলাম, নওশিন নাওয়ার নূরজাহান, মুমতাহিনা আলম, মাইশা মুনাওয়ারা। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক-সম্মান পাস করে এখন শিক্ষিত বেকার।</p> <p>ওই নোটিশে তারা দেশে বৈধ-অবৈধ বিদেশি কর্মীর সংখ্যা জানতে চেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন, অননুমোদিত বিদেশি কর্মী ও অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে বিদেশি আইন-১৯৪৬, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫২, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আইন-১৯৪৭ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ অনুসারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তারা।</p> <p>সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, গত বছরের শেষ তিন মাসে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে ৪০ হাজার। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ২৩ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ১৫ লাখ ৭০ হাজার আর নারী বেকারের সংখ্যা সাত লাখ ৮০ হাজার। চলতি বছর শুরুর দিকে এ জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিএস।</p>