চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার উদালিয়া ত্রিপুরাপল্লীতে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ছয় দিনে চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে এক পরিবারের তিন সন্তান রয়েছে। সর্বশেষ আক্রান্ত ২২ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জ্বরের পাশাপাশি তাদের শরীরে র্যাশের চিহ্ন রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে চিকিত্সকরা রোগের ধরন শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
সূত্র জানায়, ত্রিপুরাপল্লীতে এক সপ্তাহ ধরে শিশুমৃত্যুসহ অজানা রোগ নিয়ে আলোচনা হলেও তারা বাইরে যোগাযোগ করেনি। কিছুটা দুর্গম এলাকা হওয়ায় গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন ঘটনা জানতে পারে। ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর পশ্চিম উদালিয়া ওয়ার্ডের সোনাইরকুল ত্রিপুরাপল্লীতে শিশুদের রোগাক্রান্ত হওয়ার তথ্য জেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার উন নেছা শিউলী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এর পর বেশ কিছু শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ত্রিপুরাপল্লীতে যেতে প্রায় চার কিলোমিটার হাঁটতে হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও সেখানে তারা চিকিত্সা নিতে যায় না। গত ২১ আগস্ট থেকে অন্তত চার শিশুর মৃত্যুর কথা জানা গেছে।
ফরহাদাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ত্রিপুরাপল্লীতে প্রায় দেড় শ পরিবার বসবাস করে। রবিবার সকালে অন্নবালা ত্রিপুরা (৭) নামে এক শিশু মারা গেছে। এর আগে ২১ আগস্ট অন্ন রায় ত্রিপুরা (৫), কিশামনি ত্রিপুরা (৩) ও ২৪ আগস্ট সৌম্য রায় ত্রিপুরা (৪) মারা গেছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে মোট ২২ শিশুকে। তাদের বয়স এক থেকে ১০ বছরের মধ্যে।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, মারা যাওয়া শিশুরা জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। তাদের শরীরে র্যাশ ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের সবার শরীরে একই লক্ষণ রয়েছে। তারা সকলেই মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। গুরুতর আক্রান্ত তিনজনসহ পাঁচজনের রক্তের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
গত বছর জুলাইয়ে সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরাপল্লীতে অজানা রোগে ৯ শিশুর মৃত্যু ঘটে। আক্রান্ত হয় অর্ধশতাধিক। প্রায় অভিন্ন লক্ষণ ছিল সেসব আক্রান্তের মাঝে। তখন শিশুরা হামে আক্রান্ত হয়েছিল বলে নমুনা পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা অভিমত দেন।