নতুন পরিচালক বাপ্পারাজ। কাল মুক্তি পাবে তাঁর 'কার্
৫ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ | পড়া যাবে ৪ মিনিটে
বছর দুই আগের কথা। পরিচালক সমিতির সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছেন অভিনেতা বাপ্পারাজ। আবেদনপত্র পেয়ে সমিতির সিনিয়র সদস্যরা খুব খুশি। সাধুবাদ জানালেন কেউ কেউ।
বিজ্ঞাপন
গল্প এবং নায়ক নির্বাচন হয়েছিল আগেই। সম্রাটের পাশাপাশি নিপুণ ও সোহান অভিনয় করবেন সেটা বাপ্পাই ঠিক করেছিলেন। কিন্তু গণ্ডগোল পাকাল মূল নায়িকা। কে অভিনয় করবেন এ চরিত্রে! অনেকের সঙ্গেই কথা হলো। কিন্তু মনের মতো হচ্ছিল না। এদিকে প্রথম ছবি বলে কথা। কোনোভাবেই ফেল করা চলবে না। অবশ্যই অভিনয় জানা, ভালো নাচ জানা এমন কোনো মেয়েই চরিত্রটির জন্য দরকার। হঠাৎ মনে হলো রিক্তার কথা। রিক্তা তখন ৩০টির ওপর বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে ফেলেছেন। তাঁর অভিনীত অন্তত ১২টি সিরিয়াল প্রচারিত হয়েছে বিভিন্ন চ্যানেলে। নাচও জানেন ভালো। রিক্তাকে ফোন দিলেন বাপ্পা। পাণ্ডুলিপিটা শোনালেন তাঁকে। আর যায় কোথায়! রাজলক্ষ্মী টেলিফিল্মের ছবি। তার ওপর বাপ্পারাজের প্রথম পরিচালনা। সঙ্গে আছেন সম্রাট ও নায়ক রাজ্জাক স্বয়ং। না করার তো প্রশ্নই আসে না। রিক্তা একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন। শুরু হলো শুটিং। তবে শুটিংয়ের আগে যতটা উৎফুল্ল ছিলেন সোহান ও রিক্তা, শুটিং করতে গিয়ে ঠিক ততটাই ভয় পেলেন। সোহান বলেন, 'ক্যামেরা ওপেন হওয়ার আগে এবং ক্লোজের পরে বাপ্পা ভাইকে যে চেহারায় দেখেছি, ক্যামেরা চলাকালে ঠিক উল্টোটা। যতক্ষণ দৃশ্যটি মনের মতো না হতো ততক্ষণ কোনো ছাড় দিতেন না। রাত ১২টা বেজে গেলেও রক্ষা নেই। দৃশ্যটি ওকে করে তবে বাঁচা। প্রথম প্রথম খুব বিরক্ত হতাম। পরে মানিয়ে নিয়েছিলাম। ' সোহানের কথায় একমত প্রকাশ করলেন রিক্তাও-'যখন আমাদের শট এনজি হতো, বাপ্পা ভাইয়ের দিকে তাকানো যেত না। মুখ কালো করে থাকতেন। কিছু জিজ্ঞেস করলেই চড়া গলায় উত্তর দিতেন। খুব ভয়ে ভয়ে থাকতাম। শুটিং শেষ হলেই আবার তিনি আগের মতো হাসিখুশি। আমাকে আর সোহানকে তো প্রতি পাঁচ মিনিট পর পর বোকা বানাতেন। '
'কার্তুজ' দেখে দারুণ খুশি সেন্সর বোর্ড সদস্যরা। শিল্পীদের অভিনয়, পরিচালনা-সব কিছুই তাঁদের পছন্দ হয়। বিনা কর্তনে একটি প্রশংসাপত্রসহ ছাড়পত্র পায় 'কার্তুজ'। এমন খবরে পুরো ইউনিটও দারুণ খুশি হয়েছিল।
অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে। কাল থেকে একসঙ্গে ৬০টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখতে পাবে দর্শক। চাইলে আরো অন্তত ২০টি প্রেক্ষাগৃহ বাড়াতে পারতেন বাপ্পা। কিন্তু তাতে নাকি লাভ হতো কম-'এই ৬০টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে একটা সম্মানজনক রেন্টাল পাওয়া যায়, যা নিয়ে প্রযোজক খুশি হন। কিন্তু এর বাইরে যদি একটি প্রেক্ষাগৃহও বুকিং করা হয়, তাহলে সেটা বোকামি। কারণ এই প্রেক্ষাগৃহগুলো থেকে যে টাকা আসে তা প্রিন্টের খরচের সমানই। হয়তো পাঁচ-দশ হাজার টাকা লাভ থাকে। কিন্তু সেটা অফিস খরচেই চলে যায়। এতে প্রযোজকের পকেটে কোনো টাকা তো ঢোকে না, বরং পাইরেসি আতঙ্কটাই বাড়ে। '
ছবি মুক্তি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা এঁটেছেন সোহান ও রিক্তা। কালকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের সঙ্গে বসে ছবি দেখবেন তাঁরা। পরের দিন যাবেন ঢাকার বাইরের প্রেক্ষাগৃহগুলোয়। অবশ্য এর একটা কারণও আছে। রিক্তা বলেন, 'এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু সব কয়টি ঝুলিয়ে রেখেছি। দর্শকরা আমাকে কিভাবে গ্রহণ করছে সেটা আগে দেখতে চাই। গ্রহণযোগ্যতা পেলেই চলচ্চিত্রে নিয়মিত হব। নইলে এটিই শেষ ছবি। '
তবে সোহানের হাতে আরো কিছু ছবি আছে। এত তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে একটা জায়গা করে নিতে চান। সিরিয়াল ও নাটকে তো তিনি নিয়মিত অভিনয় করছেনই।