<p>চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ৫৪০ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্প শেষের দিকে। রানওয়ে ট্যাক্সিওয়ে শক্তিশালীকরণসহ বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ এ প্রকল্পে রয়েছে। অথচ বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট পরিচালনা একের পর এক বন্ধ হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৩টি বিদেশি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ হয়েছে। সর্বশেষ ৮ মার্চ থেকে ওমান এয়ার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়।</p> <p>গত বছরের অক্টোবরের শেষদিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করেছে দুটি এয়ারলাইনস। এরা হলো ভারতভিত্তিক স্পাইস জেট বিমান এবং কুয়েতভিত্তিক এয়ারলাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ। ৮ মার্চ থেকে বন্ধ করে ওমান এয়ার। ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম-মাস্কট রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর কার্যক্রম শুরু করেছিল ওমান এয়ার।</p> <p><img alt="বিদেশি সংস্থার বিমান পরিচালনা কমছে আন্তর্জাতিক রুটে" height="211" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/03.March/23-03-2024/Ri/24-03-2024-P7-6.jpg" style="float:left" width="330" />বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইনস কর্মকর্তারা জানান, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় এই রুটে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইট পরিচালনা গুটিয়ে নিচ্ছে।</p> <p>ওমান এয়ারওয়েজের চট্টগ্রাম স্টেশন প্রধান মো. আসিফ চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম থেকে ওমান এয়ারের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঢাকা থেকে যথারীতি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। শুধু ‘নেটওয়ার্ক রি-রাউটিংয়ের কারণে এই রুটে ফ্লাইট সাময়িক বন্ধ হচ্ছে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন সময় চালু থাকা যেসব বিদেশি ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে, সেগুলো হলো থাই এয়ার, থাই স্মাইল এয়ার, কুয়েত এয়ার, ফুকেট এয়ার, মালিন্দো এয়ার, রোটানা এয়ার, হিমালয়ান এয়ার, রাস আল কাইমা (আরএকে) এয়ার, টাইগার এয়ারওয়েজ, সিল্ক এয়ার, ভারতভিত্তিক স্পাইসজেট বিমান ও  কুয়েতভিত্তিক এয়ালাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ।</p> <p>বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক রুটে দুটি দেশিসহ মোট ছয়টি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এগুলো হলো বাংলাদেশ বিমান, ইউএস বাংলা, এয়ার আরাবিয়া, সালাম এয়ার ও ফ্লাই দুবাই। এর মধ্যে গত ৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে ওমান এয়ার। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ পর্যন্ত ১৩টি বিদেশি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে পরিচালনা বন্ধ হলেও বেশি পরিমাণের ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় চালু থাকা এয়ারলাইনসগুলো। তবে তারা দিনক্ষণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জানা গেছে, ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি চেন্নাই ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।</p> <p>বিমানবন্দরের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ২০০০ সালে বিদেশি বিমান সরাসরি চালুর পর যাত্রীর সংখ্যা বার্ষিক ছয় লাখ থেকে বেড়ে ১৬ লাখে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালে এই বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রী চলাচল বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ৯ লাখ ৬৮ হাজার যাত্রী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গন্তব্যে গেছেন।</p> <p>ভারতভিত্তিক স্পাইসজেট বিমান ও কুয়েতভিত্তিক এয়ালাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের স্টেশন ম্যানেজার সুমিত বিশ্বাস বলেন, জাজিরা এয়ারওয়েজ আগামী আগস্ট মাসে আবার চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ফ্লাইট পরিচালনা করবে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ফ্লাইট পরিচালনার সমস্যা নিয়ে সুমিত বিশ্বাস বলেন, বিমানবন্দরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অবকাঠামো। তার মধ্যে প্যাসেঞ্জার বিল্ডিংয়ের সক্ষমতা কম। ছয় লাখ যাত্রীর সক্ষমতা দিয়ে ১৬ লাখ হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। এতে করে যাত্রী ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে।</p> <p>চট্টগ্রাম বিমানবন্দর রানওয়ে দিয়ে এখন বাংলাদেশে আসা সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ ‘বোয়িং ৭৭৭’ কিংবা ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ এবং ‘এয়ারবাস এ ৩২০’ নামতে পারে। রানওয়ের সমস্যা নেই।</p> <p>তবে একসঙ্গে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টার নেই। ব্যাগেজ বেল্টও পর্যাপ্ত নেই। বিমানবন্দরে থাকা দুটি লাগেজ বেল্ট একসঙ্গে কাজে লাগিয়েও যাত্রী সামাল দেওয়া যায় না। বেল্টকক্ষেই যাত্রীদের জটলা লেগে যায়। আর যাত্রী বেশি হওয়ায় একেকটি লাগেজ পেতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এয়ারলাইনস কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল করে না। সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ফ্লাইট চলে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রুটের বেশির ভাগ বিমান সংস্থাই রাতের বেলায় ফ্লাইট চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।</p> <p> </p>