বুধবার । ১১ ডিসেম্বর ২০১৯। ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৬। ১৩ রবিউস সানি
অতঃপর
—তুমি আর আমাকে মিস কোরো না?
—না।
—কেন? তুমি না বলেছিলে আমি ব্লক করে দিলেও রোজ আমাকে খুঁজবে?
—হ্যাঁ, খুঁজতে গিয়েই তো বিপত্তি বেধেছে।
—মানে কী?
—মানে হলো, তুমি তো আমাকে ব্লক করে দিয়ে লাপাত্তা। রোজ রোজ তোমার নাম লিখে সার্চে দিই। তোমার নামে অনেক অনেক আইডি আসে। তুমি আসো না। একদিন কিনা কী মনে করে তোমার নামের অন্য একজনকে রিকোয়েস্ট পাঠালাম। সে অ্যাকসেপ্টও করল। টুকটাক কথা শুরু করলাম। তোমার সঙ্গে যেভাবে কথা শুরু হয়। তারপর কিভাবে যেন আমরা প্রেমে পড়ে গেলাম। এখনো পড়েই আছি। উঠতে পারছি না। ভালো থেকো, সে নক করেছে।
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ
স্যারের চশমা
আবুল স্যার কখনো চোখে আবার কখনো নাকের ডগায় চশমা পরেন। এই নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা একটু বিভ্রান্তিতে আছে যে আসলে ওনার কিসে সমস্যা! চোখে, না নাকে! পরের দিন উনি সব কিছু ছাড়িয়ে মাথার ওপর চশমা দিয়ে এলেন। আজ তাদের বুঝতে বাকি রইল না ওনার আসলে কিসে সমস্যা!
—সাবিহা আক্তার
লাইফ
১. School life —কুছ কুছ হোতা হে, ২. Collage life —কাহোনা পেয়ার হে, ৩. Versity life —মেরি আশিকি আব তুমহিও, ৪. Job life —মুজছে শাদি করোগি
মুকুল আহমেদ
মুশকিল
রিকশাওয়ালার চোখাচুখি হওয়াটাই মুশকিলের ব্যাপার এখন। হলেই ঘাড় নেড়ে ইশারায় জানাতে চায়, যাবেন? কাছে এলে মুখ ফুটে জিজ্ঞেস করে, কই যাবেন?
সেদিন এক রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, কই যাবেন? আমি ইশারায় দেখিয়ে বললাম, রাস্তার ওইপারে যাব! সে আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে রইল, আমি সোজা চলে এলাম।
আরকানুল ইসলাম
রাগ
আমরা ‘রাগ’ পুষি। কিন্তু পোষা প্রাণীর তালিকায় সেটির নাম নেই।
পলাশ মাহবুব
গান
গতকাল রাতে রিমঝিম বৃষ্টি হচ্ছে। এমন সময় একটা মেয়ে ফোন দিয়ে বলল—ভাইয়া, কী চমৎকার বৃষ্টি হচ্ছে, দেখেছেন! কিন্তু জানেন ভাইয়া, আমার মনটা না খারাপ।
আমি বললাম, জোকস শোনাব!
মেয়েটা বলল—না, ভাইয়া; একটা গান শোনান।
(মরছি) আচ্ছা তুমি আগে একটা গান শোনাও!
সুন্দরী : আমি ডানাকাটা পরি, আমি ডানাকাটা পরি এ এ এ উ উ উ...। এবার আপনি শোনান।
আমি শিং ছাড়া জিন, আমি শিং ছাড়া জিন, আমি নাচি তা ধিন তা ধিন!
তার পর থেকে যতবারই ফোন করি ততবারই শুনি, দুঃখিত, এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ফজলুল হক সাকি
নর-নারী
নারীদের যত আইডি রয়েছে ফেসবুকের ভেতর
অর্ধেক তার খুলিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
অরূপ রতন চৌধুরী
শত্রু
কাজ আর ট্রাভেল দুজন দুজনের প্রিয় শত্রু। প্ল্যান করবেন তো খাম্বার মতো সামনে এসে দাঁড়াবে।
সাজ্জাদ
গতি
আলোর গতিবেগ শব্দের চেয়ে বেশি। তাই কিছু কিছু সুন্দরী দূর থেকে দেখতেই সুন্দর। মুখ খুললেই সব শ্যাষ।
সন্দীপন বসু
অনেক দিন পর সেদিন রাতে পুরনো অফিসের এক কলিগ ফেসবুকের ইনবক্সে মেসেজ করল, ‘কই আছেন এখন?’
—রুমে।
—না, মানে এখন কোথায়?
—রুমে।
—আমি জানতে চাচ্ছি, এখন কোথায় থাকেন?
—রুমে।
—আসলে আমি বলতে চাচ্ছি, এখন কোন স্থানে থাকেন?
—রুমে।
—দূর মিয়া, বুঝতেছেন না কেন? যেখানে থাকেন, তার নাম কী?
—রুম।
নীরব চন্দন
সিনক্রিয়েট
সিনক্রিয়েট করলে রাস্তায় করো, ইনবক্সে seen ক্রিয়েট করার তো কোনো মানে নেই!
সামিউল আজিজ সিয়াম
অন্তর জ্বলে
বুকের ভেতর অন্তর আমার জ্বলে
সবাই তারে গ্যাসের ব্যথা বলে।
অনুপম হোসাইন পূর্ণম
চায়ের দোকানে
১০ মিনিট চায়ের দোকানে বসলেই বোঝা যায়, বাংলাদেশে কী পরিমাণে রাজনীতিবিদ আছেন।
জাহিদ বিন আজিজ
ডিজিটাল বিয়ে
খুব হুলুস্থুল কাণ্ড পাকিয়ে আমাদের এলাকার ডিজিটাল ছেলে নাঈম বিয়ে করল। মজার ব্যাপার হলো, বিয়েতে বউই উপস্থিত ছিল না। এলাকার মুরব্বিরা বললেন, ‘কী যুগ পড়ছে বাবা! মোবাইলেই এহন বিয়া-শাদি হয়। আমাগো সময় এইগুলা ভাবিও নাই। আমরা ভাবছি, কবে বউয়ের মুখ দেখমু আর নতুন বউ লইয়্যা বাড়িত যামু!’
শুনে নাঈম হেসে ফেলে। সে ভেবে পায় না, মোবাইলে দুজন দুজনকে কবুল বলেছে, কাজি সাহেব শুদ্ধভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সব কিছুই তো ঠিকঠাক হলো। তাহলে মুরব্বিদের সমস্যা কোথায়?
তবুও সে কাজি সাহেবকে জিজ্ঞেস করল—‘আচ্ছা কাজি সাহেব, মুরব্বিরা তো সমালোচনা করছেন। বিয়ে কি শুদ্ধ হয়েছে?’
কাজি সাহেব একগাল হেসে বললেন, ‘বিয়ের সবই ঠিকঠাকমতো হইছে। কুনু প্রবলেম নাই।’
নাঈমও একগাল হেসে বলে, ‘দোয়া রাখবেন। এক মাস পরই বাড়িতে বউকে নিয়ে আসব।’
ঠিকই এক মাস পরেই বউ হাজির! নাঈমের বিয়ে যেমন হুলুস্থুল ফেলে দিয়েছিল, তেমনি নাঈমের বউও হুলুস্থুল ফেলে দিল। দেখা গেল, নাঈমের বউ কথা বলতে জানে না। জন্ম থেকে বোবা। মুরব্বিরা রেগে বললেন, ‘মোবাইলে বিয়ে-শাদি করছস, ভালো কথা। দেখবি না বউ কথা কইতে জানে কি না!’
নাঈম মাথা চুলকে বলল, ‘একটা ব্যাপার তো বুঝলাম না। মেয়ে বোবা হলে মোবাইলে কবুল বলল কে?’
জাহিদ হাসান শিশির
বৃষ্টি বিড়ম্বনা
দুপুর ২টা ৫০ মিনিট। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। কাজিনের সঙ্গে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের সামনে একটা রিকশাওয়ালা আয়েশি ভঙ্গিতে রিকশার ভেতর বসে আছে আর মনের সুখে বিড়ি ফুঁকছে। রিকশাওয়ালাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ওই মামা...মতিঝিল যাইবা?’
রিকশাওয়ালা : না।
আমি : যাইবা না ক্যান?
রিকশাওয়ালা : কী বৃষ্টি! দেখছেন?
আমি : বাড়াইয়া দিমু, মামা... চলো!
রিকশাওয়ালা : না, মামা! যামু না।
কথাটা বলেই আবার জমিদারি স্টাইলে বিড়ি টানা শুরু করল। আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার বিড়ি টানা দেখছি। এভাবে প্রায় পাঁচ-সাত মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর কোথা থেকে যেন ছাতা মাথায় একটা মেয়ে এসে আমাদের সামনে দাঁড়াল। এসেই রিকশাওয়ালাকে বলল—‘এই খালি, যাবা?’
রিকশাওয়ালা : কই যাইবেন?
মেয়ে : ফকিরাপুল।
রিকশাওয়ালা : আইয়েন।
রিকশাওয়ালার কথা শুনে আমরা থ হয়ে গেলাম। আমাদের আবুল বানিয়ে চোখের সামনে দিয়ে ওই মেয়েকে নিয়ে চলে গেল সে।
মো. আতিকুর রহমান মুকুল
ঘটনা কাল্পনিক
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ একটি পোস্টার দেখে থমকে দাঁড়ালাম। পোস্টারের ছেলেটির বয়স বেশি হলে ২৫-২৬ বছর হবে। ছেলেটির নামের পরেই বড় করে লেখা—‘দোয়া প্রার্থী’। কৌতূহল নিয়ে পুরোটা পড়তে গিয়ে দেখি, বাকি অংশটুকু কারা যেন ছিঁড়ে ফেলছে। আবার হাঁটা শুরু করলাম; কিন্তু বারবার পোস্টারের ছেলেটির কথা মনে পড়তে লাগল। ছেলেটি নিশ্চয়ই এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী, তাই সবার কাছে দোয়া চাই। মনটাই খারাপ হয়ে গেল। আমার বয়সের একটা ছেলে আজ টাকা ইনকাম করে কাউন্সিলর নির্বাচন করছে আর আমি এখনো সেই টিউশনি করেই দিন পার করছি।
নিজের ওপর রাগ হলো। মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি। এতগুলো বছর কী করেছি জীবনে, এখনো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলাম না। এই জীবন রাখার চেয়ে আত্মহত্যা করাই শ্রেয়।
কিভাবে আত্মহত্যা করা যায়, তা ভাবতে ভাবতে অন্য আরেক জায়গায় ওই একই পোস্টারটা দেখে আবার থমকে দাঁড়ালাম। এবার সম্পূর্ণ পোস্টারটা পড়লাম। পড়ে আমার অন্তর-আত্মা শুকিয়ে গেল। কারণ পোস্টারের পরের অংশে লেখা ছিল...
জনাব হাবলু,
চতুর্থবারের মতো HSC পরীক্ষার্থী।
সবার দোয়া প্রার্থী।
কিছুক্ষণের জন্য বেকুব হয়ে গেলাম। পরে ঠোঁটের কোণে মুচকি হেসে মনে মনে বললাম, ‘আমার টিউশনিই ভালো, অন্তত চারবার HSC পরীক্ষা দিতে হয়নি।
শিহাব রিপন
মন্তব্য