<p>‘ভূস্বর্গ কাশ্মীর’ অনেক দিন থেকেই এক অভিশপ্ত এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ, সহিংস প্রতিবাদ, পাকিস্তানের অব্যাহত উসকানি অন্যদিকে সেখানে মোতায়েন ভারতীয় সেনাবাহিনীর দমননীতি। ফলে রক্তে ভিজে লাল সবুজ কাশ্মীর উপত্যকা।</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2016/print-2016/August/04-08-2016/kalerkantho_editorial_1.jpg" style="float:left; height:300px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:283px" />এ জন্য কাকে দায়ী করবেন নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক? অবশ্যই দায়ী বিভাগোত্তর ভারত সরকার ও সেই ধারাবাহিকতায় কংগ্রেসসহ একাধিক রাজনৈতিক মতাদর্শের সরকার। বেশ কয়েক বছর আগে কাশ্মীরে সেনা মোতায়েন এবং সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সহিংসতায় অবস্থা ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র বিভাগ যতই দাবি করুক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে, অবস্থা আদৌ শুভবার্তা বহন করে না।</p> <p>সমস্যা শুরু ১৯৪৭ সালের আগস্টের পর থেকে দেশীয় রাজ্যগুলোর ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিয়ে গণ্ডগোলের সূচনা। কাশ্মীর রাজ দুর্বলচিত্ত হরি সিং নানা বাস্তব ঘটনার চাপে ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেনের বারবার তাগিদ সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করছিলেন। সম্ভবত এই সুযোগে পাকিস্তান সরকারের উসকানিতে সেখানকার উপজাতীয় হাজার পাঁচেক যোদ্ধা হঠাৎ করে কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে। সঙ্গে বেশ কিছুসংখ্যক পাকিস্তানি ন্যাশনাল গার্ড।</p> <p>অভিযানের সময় সুপরিকল্পিত, শীত আসন্ন। ২২ অক্টোবর নাগাদ মুজাফফরাবাদ তাদের দখলে চলে আসে। শহরটিকে পুড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের দিকে যাত্রা করে। এরই মধ্যে ঘটে অনেক ঘটনা। পুঞ্চে অবস্থিত গোলযোগে মহারাজার স্বল্পসংখ্যক সৈন্য ও পুলিশ পর্যুদস্ত। কাশ্মীর রাজ মহাবিপাকে। ঘটনা পাকিস্তানের স্থপতি মি. জিন্নাহ এবং প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে জানানো সত্ত্বেও তাঁদের দিক থেকে যুক্তিগ্রাহ্য সাড়া মেলেনি। কারণ মুসলমানপ্রধান কাশ্মীর পাকিস্তান ডোমিনিয়নে যোগ দেবে এ আশঙ্কা পাকিস্তানি নেতারা কেউ গোপন করেননি। জুনাগড় দ্বন্দ্ব তো ছিল কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করার কৌশলমাত্র। কাশ্মীরের একাংশ দখল করে ‘আজাদ’ কাশ্মীর নাম দিয়ে পাক শাসনের অন্তর্গত করেও তৃপ্তি হয়নি পাক শাসকদের, তাদের ‘অবসেশন’ পুরো কাশ্মীর হাতে পাওয়া এবং তা জিন্নাহ থেকে ভুট্টো ও পরবর্তী শাসক সবারই। ভুট্টো তো কাশ্মীর দখল করতে ভারতের সঙ্গে হাজার বছরের যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।</p> <p>দুই.</p> <p>ভারত বিভাগ পরিকল্পনার নীতিতে ছিল এমন ধারা যে দেশীয় রাজ্যগুলোকে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। তাদের স্বাধীন অস্তিত্বের কোনো সুযোগ নেই বাস্তবতা এমনই ছিল। কিন্তু তাদের অনেকেরই ইচ্ছা পরাধীনতামুক্ত ভারতে স্বাধীন মর্যাদা ভোগ, বিশেষ করে ভুপাল, হায়দরাবাদের মতো কয়েকটি দেশীয় রাজ্য সে ইচ্ছা গোপন করেনি। কাশ্মীর রাজ হরি সিংও তাঁদের একজন।</p> <p>ভারত ভাগের সঙ্গে যেমন অনেক রাজনৈতিক সমস্যা জড়িত ছিল, তেমনি ছিল দেশীয় রাজ্যগুলোতেও। বিশেষত ধর্মীয় ভিত্তিতে দেশ বিভক্ত হওয়ার কারণে। যেমন হায়দরাবাদে শাসক মুসলমান কিন্তু জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশ হিন্দু, একই ঘটনা ভূপালে। অন্যদিকে কাশ্মীরের মতো দেশীয় রাজ্যের শাসক হিন্দু, কিন্তু জনসংখ্যার প্রধান অংশ মুসলমান।</p> <p>ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ বিভাগ কতটা অবাস্তব পরিকল্পনা তা পদে পদে বোঝা যাচ্ছিল। দেশের সর্বনিম্ন ইউনিট গ্রাম পর্যন্ত হিন্দু-মুসলমান জনতার এমন মিশ্র বসবাস যে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ ছিল কার্যত এক অসম্ভব পরিকল্পনা। জবরদস্তির সে ভাগ অবিশ্বাস্য রক্তপাতের কারণ হয়েছে, এমনকি এখনো হচ্ছে। সে দুর্ভাগ্য পাঞ্জাবের পর সবচেয়ে বেশি কাশ্মীরের।</p> <p>পাকিস্তানের উপজাতীয় মুজাহিদ যোদ্ধাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কাশ্মীর রাজের কানে পানি। ধীরচিত্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ হারিয়ে রাজার নজর নয়াদিল্লির দিকে। এর আগে কাশ্মীরের জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা, ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের প্রধান শেখ আবদুল্লাহকে কারাগারে পাঠিয়ে শান্তি খুঁজেছিলেন রাজা। শেখ আবদুল্লাহকে মুক্তি দিয়ে তাঁর সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে নিতে জওহরলাল নেহরুর পরামর্শ অগ্রাহ্য করেছিলেন কাশ্মীর রাজ এক ধরনের ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে।</p> <p>এবার জান বাঁচাতে, মান বাঁচাতে, রাজ্য বাঁচাতে কাশ্মীর রাজ হরি সিংকে শেষ পর্যন্ত ঘোলা পানিতেই মুখ ডোবাতে হলো। লর্ড মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শে কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন রাজা এবং সেই সঙ্গে জননেতা শেখ আবদুল্লাহকেও মুক্তি দিতে হলো। ভারতের সামরিক সাহায্য চাইলেন কাশ্মীর রাজ, সরদার প্যাটেলের জন্য সুযোগ এসে গেল কাশ্মীরকে ঘরে এনে তোলার এবং তা জুনাগড় ইস্যুকে মাথায় রেখে।</p> <p>শ্রীনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তখন পাকিস্তানি উপজাতীয়দের আক্রমণ, লুটতরাজ ও তাদের হাতে ইজ্জতহানির আশঙ্কায় ব্যাপক ভীতি ও আতঙ্ক, চলছে শহর ছাড়ার উদ্যোগ, যে যেদিকে পারে। রাজা নিজেও তাঁর পরিবার নিয়ে আতঙ্কিত। অপেক্ষা কখন ভারতীয় সৈন্য এসে তাঁকে বাঁচাবে, রাজ্যের শান্তি ফিরিয়ে দেবে।</p> <p>এ ব্যাপারে মহারাজার উদ্বিগ্ন আবেদনে দিল্লি সাড়া দিতে দেরি করেনি। এ সিদ্ধান্তে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সমর্থন ছিল কাশ্মীরে অবস্থানরত ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার কথা ভেবে। মহারাজাকে প্রধানমন্ত্রী নেহরুর পরামর্শ অবিলম্বে জননেতা শেখ আবদুল্লাহর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার জন্য, যাতে জনমত বিপরীত দিকে চলে না যায়।</p> <p>শেষ পর্যন্ত হরি সিংয়ের কাশ্মীর রক্ষা পেল ভারতীয় সামরিক সহায়তায়, কাশ্মীর ভারতীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হলো বিশেষ কিছু সুবিধাসহ, পাকিস্তানি উপজাতীয় যোদ্ধাদের লক্ষ্য অর্জন না করেই ফিরে যেতে হলো, তবে তা আজাদ কাশ্মীর পাকিস্তানে রেখে। এরই মধ্যে দিল্লি জাতিসংঘে অভিযোগ জানিয়ে রাখল কাশ্মীর আক্রমণে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ভূমিকা সম্পর্কে। আপাত শান্তি সত্ত্বেও হুতোমের ভাষায় বলতে হয় ‘তবু হুজুগ মিটল না।’</p> <p>তিন.</p> <p>হুজুগ না মেটার কারণ মূলত কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধাদিবিষয়ক শর্ত পূরণে নয়াদিল্লির ব্যর্থতা, শেখ আবদুল্লাহর সঙ্গে রাজনৈতিক সংঘাতে প্রবৃত্ত হওয়া, সেই সঙ্গে মুসলিম লীগ রাজনীতির প্রভাবে কাশ্মীরের মুসলমান জনতার একাংশে বিরাজমান পাকিস্তানপ্রীতি, আর রাজনীতি সচেতন অংশের স্বাধীন কাশ্মীরের আকাঙ্ক্ষা। একাধিক ধারায় রাজনৈতিক চেতনা জোর কদমে মাথাচাড়া দিয়ে উঠত না যদি নয়াদিল্লির রাজনৈতিক পদক্ষেপ কাশ্মীর সম্পর্কে গণতান্ত্রিক সুশাসননীতির পরিচয় দিতে পারত।</p> <p>ফলে কাশ্মীরি জনতার মধ্যে অসন্তোষ ও বিক্ষোভ স্থায়ী বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কেন্দ্রের দাবার ঘুঁটি চালার ফলে সেখানে বারবার শাসন কর্তৃত্বের পরিবর্তন ঘটেছে, এমনকি নেহরুর রাজনৈতিক বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় নানা চালে শেখ আবদুল্লাহকে কারাগারে যেতে হয়েছে। ফের ক্ষমতায়, আবার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কারাগারে। দিল্লি সেখানে পুতুল সরকার বসাতে আগ্রহী। রাজনীতির এ জাতীয় অবাঞ্ছিত খেলা এবং প্রয়োজনীয় আর্থসামাজিক উন্নয়নে ঘাটতি, রাজনৈতিক ন্যায়নীতির অভাব ইত্যাদি মিলে রাজনৈতিক দাবা খেলার শিকার হতে হতে অশান্ত হয়েছে কাশ্মীর। জন্ম নিয়েছে একাধিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানপন্থী লস্কর-ই-তৈয়বার মতো ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন। রয়েছে স্বাধীনতাপন্থী সংগঠনও। লস্করের মূল ঘাঁটি প্রকাশ্যেই পাকিস্তানে।</p> <p>এ পর্যায়ে সংলাপ, সমঝোতা ও ন্যায়নীতির বদলে এ উপত্যাকার সমস্যা মেটাতে এখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল বড় রকম রাজনৈতিক ভুল, যার মাসুল গুনেছে ভারত সরকার। দীর্ঘস্থায়ী সেনা মোতায়েন মানে অত্যাচার, অবিচার, অনাচার যা জনমনে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, দেখা দেয় ঘৃণা ও বিদ্বেষবিরূপতা। কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে প্রতিক্রিয়াশীলতা ও সন্ত্রাসবাদ। ছোট্ট তুলনা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েনের জেরে অশান্তি।</p> <p>নব্বইয়ের দশকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সম্মেলন উপলক্ষে আগত দু-একটি ভারতীয় সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া জরিপের বিবরণ থেকে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নর-নারী নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনাবলি। এর চেয়ে ছোট ফ্রেমের হলেও আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েনের পরিণাম আমরা জানি, জানি স্থানীয় জনমনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠন জন্ম নেওয়ার কথাও।</p> <p>কাশ্মীরি জনমনে ভারতবিরোধী বিরূপ প্রতিক্রিয়াই এখন প্রবল, যা মাঝেমধ্যে সহিংসতার ভয়াল রূপ নিয়ে প্রকাশ পায়। রক্ত ঝরে উভয় পক্ষের অসহিষ্ণু আচরণে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সেখান থেকে সমঝোতা নিয়ে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। কাশ্মীর নিয়ে ভারত এখন এমনই এক গাড্ডায় পড়েছে যে সেনাবাহিনী তুলে নিলে বিপদ, না নিলেও বিপদ বাড়ছে বৈ কমছে না। মাঝখানে এ অবস্থায় কাশ্মীরে পাকিস্তানপ্রীতি বাড়ছে। যদিও পাকিস্তানে যাওয়া তাদের জন্য আদৌ কোনো সমাধান নয়।</p> <p>চার.</p> <p>কাশ্মীর সমস্যার সমাধান এখন কঠিন জটিলতায় বাঁধা। অবস্থা শাঁখের করাতের মতো। সম্প্রতি কাশ্মীরে সংঘটিত বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সেখানে ক্রমাগত কার্ফ্যু, গুলি ও রক্ত ঝরার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সংসদ সদস্যদের একাংশের বোধোদয়, গত ষাট বছরের পথ বদলাতে হবে। ১৯৫০ সালে সংবিধানে গৃহীত ৩৭০ ধারার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিশ্রুত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সশস্ত্র সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে। আইন সংশোধন করতে হবে। নিরাপত্তা রক্ষার দায় রাজ্য সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হোক ইত্যাদি।</p> <p>সম্প্রতি কথাগুলো বলেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম। তাঁর মতে, ‘কাশ্মীর উপত্যকার মানুষের মন জয় করতে হবে।’ কিন্তু কয়েক দশক ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে নারী ধর্ষণ, নর-নারী হত্যা, বীভৎস নির্যাতনের যে গভীর ক্ষত কাশ্মীরি জনগণের মনে তৈরি করেছে তার অন্তর্জ্বালা কী সহজে জুড়োবে, ক্ষত শুকোবে?</p> <p>এরই মধ্যে বিলম্বে অনেক রক্ত-জল গড়িয়ে গেছে। পাশার দান অনেক দিন আগেই পড়ে গেছে। সমাজে অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। শেখ আবদুল্লাহর রাজনৈতিক অনুসারীরা কি এখন পূর্ব ধারার রাজনীতি ধারণ করে? বরং ঐতিহ্যমাফিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি আজাদির দাবিতে পরিণত, যা ভারত সরকারের পক্ষে গ্রহণ করা কঠিন। সমঝোতার মধ্যবর্তী ব্যবধান অনেক অনেক বড় হয়ে গেছে। অনেক আঞ্চলিক শক্তি কাশ্মীরে শিকড়-বাকড় ছড়িয়ে শক্তি সঞ্চয় করে ফেলেছে। কাশ্মীরের জনচেতনা এখন একাধিক ধারায় বিভক্ত।</p> <p>কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকার সেই ১৯৪৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারেনি। শুরুতে হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলেছে। এমনকি ইংরেজের কুখ্যাত ‘ভাগ করো, শাসন করো’ নীতিও কাজে লাগিয়েছে। যখন সমঝোতা সম্ভব ছিল তখন তা বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দিয়েছে। এখন শেষ সমাধান হিসেবে সাহস করে স্বাধীন কাশ্মীর দাবিও মেনে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইবে না ভারত, পাছে স্বাধীন কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। বিষয়টি অবশ্য নির্ভর করে কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর তুলনামূলক শক্তির ওপর, বিশেষ করে সশস্ত্র সংগঠনের শক্তির ওপর। তাই কাশ্মীর সমস্যা সহজে মেটার নয়। তাহলে চিদাম্বরমের প্রস্তাব ভারত সরকারের ভেবে দেখা উচিত। এ ব্যবস্থায় যদি কাশ্মীরিদের কিছুটা আস্থা ফেরে, তাহলে পূর্ণ সমাধানের পথ তৈরি হতে পারে।</p> <p> </p> <p>লেখক : কবি, গবেষক ও ভাষাসংগ্রামী</p>