<p>সারা দুনিয়ার কাছে থেরন নামে পরিচিত হলেও দেশের মানুষের কাছে তিনি থ্রোন। আফ্রিকান ভাষায় তাঁর নামের সঠিক উচ্চারণ এটাই। এখন ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা হলেও ৪২ বছর বয়সী অভিনেত্রীর জন্ম হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে। ‘অনেকেই আমাকে আমেরিকান ভেবে ভুল করে। কিন্তু আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে আমি আসলে একজন দক্ষিণ আফ্রিকান এবং এতে আমি গর্বিত,’ বলেন অভিনেত্রী। শুধু কথায় নয়, কাজেও দেখিয়েছেন দেশের প্রতি ভালোবাসা। ২০০৪ সালে ‘মনস্টার’ ছবিতে অভিনয় করে জিতেছিলেন অস্কার। সেটা উদ্‌যাপন করতে ছুটে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেখা করেন প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। ম্যান্ডেলার আতিথেয়তা পেয়ে চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি।</p> <p>জাতে প্রোটিয়া হলেও থেরন যেভাবে ইংরেজিতে কথা বলেন, শুনে কে বলবে তিনি আমেরিকান নন! এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে হলিউডের সিনেমা আর গান নিয়ে মেতে থাকতাম। টিভি আর রেডিও নিয়ে থাকতে থাকতেই আমেরিকান ইংরেজি আয়ত্তে এনেছি।’</p> <p>এতক্ষণ পর্যন্ত থেরনের জীবনটা সুখের মনে হলেও বাস্তবে মোটেও তা নয়। তাঁর বাবা ছিলেন মারাত্মকভাবে মাদকাসক্ত। অশান্তির পরিবারে একপর্যায়ে থেরনের মা-ই বাবাকে গুলি করে মারেন। তাতে মায়ের কোনো শাস্তি হয়নি। কারণ আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল, গুলিটা আত্মরক্ষা করতেই ছোড়া হয়েছিল। ১৯৯১ সালের ঘটনা এটা। এরপর মায়ের ইচ্ছাতেই মডেলিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন থেরন। ব্যক্তিগত জীবনে অম্ল-মধুর নানা অভিজ্ঞতা থাকার কারণেই কি না পর্দায় নানা ধরনের চরিত্র তুলে ধরতে দারুণ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। ‘দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট’, ‘দ্য ইটালিয়ান জব’ থেকে ‘ম্যাড ম্যাক্স : ফিউরি রোড’—নিজের কাজ দিয়ে মুগ্ধ করেছেন বারবার।</p> <p>অভিনেত্রীর একটি অদ্ভুত পছন্দ আছে। পোষা প্রাণী হিসেবে মানুষ সাধারণত কুকুর-বেড়াল পছন্দ করলেও থেরনের পছন্দ ছাগল! এ নিয়ে সিনেমাপাড়ার লোকজনও আড়ালে-আবডালে হাসাহাসি করে। কিন্তু ওসব থোড়াই তোয়াক্কা করেন তিনি, ‘ওটা আমাকে বেশ ভালো সঙ্গ দেয়। ও আমার অনেক ভালো বন্ধু!’</p> <p>প্রাণী পছন্দের ব্যাপারে নিজের পছন্দ ব্যতিক্রমী হলেও অভিনেতার ক্ষেত্রে অবশ্য তিনি ‘গতানুগতিক’। টম হ্যাংকস বলতে বরাবরই পাগল থেরন। একেবারে ছোটবেলা থেকেই। মজার ব্যাপার, এই থেরনই হ্যাংকসের প্রথম পরিচালিত ছবি ‘থিংকস ইউ ডু’ ছবিতে সুযোগ পেয়েছিলেন।</p> <p>এবার মুক্তি পাচ্ছে থেরনের নতুন ছবি ‘টুলি’। রোমান্টিক থ্রিলার ধাঁচের ছবিটি পরিচালনা করেছেন জেসন রেইটম্যান। ভ্যাংকুভারে ছবিটির শুটিং শুরু হয় ২০১৬ সালে, যা অবশেষে আলোর মুখ দেখতে চলেছে।</p>