<p>তৌকীর আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’য় সর্বশেষ দেখা যায় নিপুণকে। তাও বছর দেড়েক হয়ে গেল। ‘ধূসর কুয়াশা’ দিয়ে ফের বড় পর্দায় হাজির হবেন এ নায়িকা। আরো আগেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ছবিটি। দীর্ঘদিন সেন্সর বোর্ডে পড়ে থাকায় সম্ভব হয়নি। সেন্সর বোর্ডের অভিযোগ ছিল, ছবিটির গল্প অবিন্যস্ত ও অসংলগ্ন। দেখানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ঘটছে একের পর এক অপরাধ। এ ছাড়া আছে পঙ্গু শিশু, ধর্ষণ, নারী পাচার ও নিলামে তোলার দৃশ্য। ডিসেম্বরে সেন্সর বোর্ডের নির্দেশনা মেনে কিছু দৃশ্য কর্তন ও পরিমার্জন করে জমা দেওয়ার পরও খুশি হতে পারেননি সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা। আরো সংশোধনীর পর ফেব্রুয়ারিতে মেলে ছাড়পত্র।</p> <p>কথার শুরুতেই নিপুণ বলেন, ‘আমি যে অংশটুকুর শুটিং ও ডাবিং করেছি, সেখানে কোনো ঝামেলা নেই। একজন দায়িত্ববান অভিনেত্রী হিসেবে এটুকু গ্যারান্টি দিতে পারি। কিন্তু অন্য যে সমস্যা ছিল সে ব্যাপারেও খোঁজ নিয়েছি। পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু দৃশ্য ছিল। পরিচালক সেগুলো কর্তন করতে চাননি বলেই হয়তো ঝামেলাটা হয়েছে।’</p> <p>ছবিতে দেখা যাবে নিপুণের একটা স্কুল আছে। সেই স্কুলের এক তরুণী গায়েব হয়ে যায়। দুদিন পর একটা বাচ্চা গায়েব। ইন্টারনেটের ভুল ব্যবহারের কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, ছবির মূল বিষয়বস্তু তা-ই। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগত মুন্না। সহশিল্পী প্রসঙ্গে নিপুণের অকপট মন্তব্য, ‘উনি আসলে এখনো একটি ছবির মূল চরিত্র করার জন্য পারফেক্ট হননি। উনি ছবিতে বিনিয়োগ করছেন, নিজেই হিরো হয়েছেন। আমার মনে হয়, কেউ যদি বিনিয়োগ করে নায়ক হতে চান তাতে সমস্যা নেই। তবে কাজটা তো খুব সহজ নয়। অভিনয়ে পারদর্শী হয়ে নামলে বিনিয়োগ সার্থক হয়। তবু যতটুকু সম্ভব উত্তমদা করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আসলে দর্শকের কখন কাকে ভালো লাগে সেটাও বলা মুশকিল। হয়তো তাঁর অভিনয়ের ধরনটাই দর্শক পছন্দ করে ফেলল!’</p> <p>অনেক দিন ধরেই শোবিজ থেকে বলতে গেলে দূরে আছেন। মাঝখানে আরটিভির অনুষ্ঠান ‘আলোকিত নারী’ করেছেন। ব্যস্ততাটা ব্যবসায়। নিপুণ ও তাঁর বোন মিলে এ বছরের শুরুতে লন্ডনে একটি রেস্টুরেন্ট দিয়েছেন—‘টেস্টি ফুড’। দেশ-বিদেশ করেই কাটছে তাঁর সময়। ‘শোবিজে যখন কাজ শুরু করি তখন আমেরিকায় ছিলাম। একটা সময় একেবারেই দেশে চলে এলাম। এখন তো মাসে একাধিকবার দেশ-বিদেশ করতে হয়। তবে টানা এক সপ্তাহের বেশি দেশের বাইরে থাকতে পারি না। ঢাকায় অনেক জ্যাম, অনেক মশা। তবু মনে হয় ঢাকায় শ্বাস নিতেই ভালো লাগে’—বললেন নিপুণ।</p> <p>ব্যবসার কারণেই কি শোবিজ থেকে দূরে আছেন? ‘ব্যবসা ব্যাপারটাই এমন। কর্তৃত্ব হাতছাড়া করা যায় না। সময় না দিলে ব্যবসা লাটে ওঠে।’</p> <p>ইচ্ছা আছে ছবি প্রযোজনা করার। তবে তাঁর মনে অনেক প্রশ্ন, সেগুলোর উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। বলেন, ‘জায়েদ খান ও পরীমণি সিনেমা প্রযোজনা করছেন। অবশ্যই এর জন্য তাঁরা ধন্যবাদ প্রাপ্য। আমি খোঁজার চেষ্টা করেছি, আসলে এখন ব্যবসাটা হয় কিভাবে? আমার এমন ফেলানো টাকা নেই যে দু-চারটা সিনেমা করব, কিন্তু সেখান থেকে পুঁজি না তুলতে পারলেও চলবে! কিভাবে সম্ভব? আমাকে যদি কেউ বোঝাতে পারে, এভাবে ব্যবসা করা সম্ভব। তাহলে প্রযোজনা করতে রাজি।’   </p> <p>যৌথ প্রযোজনা নিয়ে বরাবরই কথা বলেন। সেই প্রসঙ্গও বাদ গেল না, ‘এখন দেশীয় সিনেমার সময় ভালোর দিকেই যাচ্ছে। এই যে যৌথ প্রযোজনায় ছবি হচ্ছিল, সেখানে বাংলাদেশি কিছুই ছিল না। একটা উদাহরণ দিই, আমার পার্লারে থাইল্যান্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের মেয়েরাও কাজ করে। বাংলাদেশিরা ওদের কাছ থেকে শিখে অনেকাংশে ওদের চেয়েও ভালো করছে। আমি যদি থাইল্যান্ডের মেয়েদের ওপরই নির্ভর করে থাকতাম, আমার দেশের পাঁচটি মেয়ে দাঁড়াতে পারত না। যারাই যৌথ প্রযোজনা করছে তাদের এ দিকটা খেয়াল রাখা উচিত। সিনেমা শুধু এন্টারটেইনমেন্টই নয়, এর পেছনে অনেকের রুটিরুজিও জড়িত।’</p>