<p><strong>আগুন</strong></p> <p>১৯৮২-৮৩ সালের কথা। আমার বয়স তখন ১১ কি ১২। খালা সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় একটি মেয়ের সঙ্গে দেখা। নাম ফারহানা খান তান্না। সে তখন ক্লাস টু কি থ্রিতে পড়ে। প্রথম দেখেই মেয়েটার প্রতি অন্য রকম এক ভালো লাগা তৈরি হয়। খালার বাসার পাশেই তাদের বাসা। খালার বাসায় গেলে তার সঙ্গে দেখা করতাম, কথা বলতাম। একটা সময় টেলিফোনেও কথা বলা শুরু হলো। ফোন করলে কেউ যাতে তাকে চিনতে না পারে এ জন্য আমি তাকে বৃষ্টি নামটি ব্যবহার করতে বলি। কিছু না বুঝেই নামটি দেওয়া। এরপর থেকে নামটি আমার কাছে অনেক আদরের ও প্রিয় হয়ে ওঠে। আমার অনুভবের সঙ্গে নামটি কিভাবে যে মিশে আছে বলে বোঝাতে পারব না। বৃষ্টি নাম দিয়ে কত গান যে লিখেছি তার শেষ নেই।</p> <p>‘আমার স্বপ্নগুলো’ গানে তাঁকে নিয়ে একটি লাইন আছে, ‘এক সুখের বৃষ্টি এসেছিল’। একবার আরেকজনের লেখা গানের রেকর্ডিংয়ে গিয়ে একটি লাইন বদলে আমি লিখি ‘ও বৃষ্টি তুমি সৃষ্টি আমার’। বৃষ্টি নাম নিয়ে এমন অনেক পাগলামি করেছি। শেষ পর্যন্ত ভালো লাগার মানুষটিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। মানুষটির মতো এই নামটিও আমার কাছে অনেক মূল্যবান।</p> <p><strong>মেহরীন</strong></p> <p>১৯৯৮ সালের জুন মাসের কথা। গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে বন্ধু দিলরুবার মাধ্যমে ইন্তেখাব মাহমুদের সঙ্গে পরিচয়। তখন আমরা দুজনই ব্যস্ত। তবে মনে মনে কাউকে খুঁজছিলাম। প্রথম দেখাতেই দুজনকে দুজনার ভালো লাগে। বলা যায়, প্রেমেরও শুরু। প্রেমটা এতই গভীর ছিল যে মাত্র ছয় মাসের মাথায় ১২ ডিসেম্বর আমরা বিয়ে করি ফেলি। প্রেমের ক্ষেত্রে আমি খুব অস্থির ছিলাম। একেক সময় তাঁকে একেক নামে ডাকতাম।</p> <p>সবচেয়ে টিকেছিল ও এখনো মনে আছে যে নামটি তা হলো, বেবসকি! বেবি থেকে বেব। আর পরের অংশটা রাশিয়ান। জাস্ট ভালো লাগা থেকেই নামটি দেওয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, আমাদের বন্ধুমহলেও নামটি খুব পরিচিত। অনেকেই নামটি নিয়ে আমার সঙ্গে ঠাট্টা করত। ইন্তেখাব কিন্তু আমাকে কোনো নামেই ডাকত না। এখনো ডাকে না। এমনকি মেহরীন নামেও না। সে আসলে কথা কম বলে। যা বলার আমিই বলি। সে শুধু উত্তর দেয় (হাসি)।</p> <p><strong>তপু</strong></p> <p>আমার স্ত্রীর নাম নাজিবা সেলিম। প্রথম প্রথম ওর সঙ্গে যখন ভাব তখন সে জানিয়েছিল পরিবারের সবাই ছোটবেলায় তাকে বাবু নামে ডাকত। শুনেই নামটা মনে ধরে যায়। নামটার মধ্যে আদর আদর ভাব আছে। এরপর থেকে নাজিবা না ডেকে আমি তাকে বাবু নামে ডাকা শুরু করলাম। এটা ওর পরিবারের লোকজনও জানে। সাধারণত সে আমাকে তপু নামেই ডাকে। তবে মাঝেমধ্যে বাবুও বলে। এই নামটা আমরা দুজনেই বেশ এনজয় করি।</p> <p><strong>এলিটা</strong></p> <p>ভালোবেসে আমরা একে অন্যকে যে নামে ডাকি সেটা নিজেদের নামেরই সংক্ষিপ্ত রূপ। আশফাকের (আশফাক নিপুণ) ইংরেজি বানানের প্রথম তিন বর্ণে হয় অ্যাশ। আর এই নামেই শুরু থেকে তাকে ডেকে আসছি। সে-ও আমার মতো করে আমার নামকে শর্ট করে এলি বলে ডাকে। সেই যে শুরু হলো, আর কোনো থামাথামি নেই। আমরা দুজন এখনো একে অন্যকে ওই নামেই ডাকি। এটা আমাদের ট্রেড মার্ক।</p> <p><strong>সাব্বির</strong></p> <p>রিমির (রেহানা আক্তার) সঙ্গে আমার পরিচয় অনলাইনে। শুরুতে টুকটাক কথা হতো। তবে সরাসরি দেখা হওয়ার পর থেকে ভালো লাগার শুরু। এরপর যোগাযোগটাও বেড়ে যায়। মুঠোফোনে, ইনবক্সে নিয়মিত এসএমএস চালাচালি হতে থাকে। এক সময় তা পরিণত হয় প্রেমে। কথা বলতে বলতে কখন যে একে অন্যের নাম দিয়ে দিই বাবু টেরই পেলাম না! নামটা দুজনেরই খুব পছন্দের। আমরা ছাড়া এ নামটা আর কেউ জানে না। আজ বলে দিলাম! বিয়ের পরও বাবু নামেই বেশি ডাকা হয়। আশপাশে কেউ থাকলে অবশ্য রিমি ডাকি।</p> <p><strong>সালমা</strong></p> <p>আমার স্বামীর নাম শিবলী সাদিক। দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে ঘুরতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা, পরিচয়। কয়েক দিনের মাথায় সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বলতে গেলে প্রেমটা হয়ে ওঠার আগেই আমাদের সানাই বেজে গেছে। তবে বিয়ের আগের ওই কয়টা দিন আমি তাকে ভাইয়া বলে ডেকেছি। এরপর নাম ধরেই ডাকা হতো। আমাদের মেয়ে স্নেহার জন্মের পর থেকে ডাকি স্নেহার বাপ বলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডাকায় পরিবর্তন (হাসি)।</p> <p>অনুলিখন : রবিউল ইসলাম জীবন</p>