<p>চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রূপচাঁদা মাছ বলে দেদার বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা। পিরানহা ১২০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হচ্ছে। তবে পিরানহা ক্রয়-বিক্রয়, খাওয়া, পরিবহন, চাষ, বাজারজাত, সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা মাহমুদ।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাইকারি মৎস্য বাজারের মধ্যে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ধেররা আর বেলচোঁ অন্যতম। ভোর ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে এ বাজারে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মাছ প্রতিদিন পাইকারি ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। উপজেলার বাইরে শরীয়তপুর থেকে পাঙ্গাশ ও রুই মাছ আর কুমিল্লার বরুড়া থেকে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ প্রতিদিন এসব বাজারে আসে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য। বিশেষ করে কুমিল্লার বরুড়া থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে ড্রামে বা ককশিটের বাক্সে করে পিরানহা নিয়ে আসে গুটি কয়েক অসাধু পাইকারি বিক্রেতা। ধেররা বা বেলচোঁ বাজার থেকে আকার ভেদে ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হয় পিরানহা। পাইকারি দরে কিনে এক শ্রেণির ক্রেতা ককশিটের মাধ্যমে মাথায় বা ভ্যানে করে গ্রামে নিয়ে যায় আর সেখানে রূপচাঁদা বলে প্রকাশ্যে বিক্রি করে।</p> <p>হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার টোরাগড় গ্রামের বাসিন্দা হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘রূপচাঁদা বলে প্রায় সময় এগুলো আমাদের বাড়িতে নিয়ে যায় খুচরা বিক্রেতারা। যারা চেনে তারা প্রতিবাদ করে, আর যারা চেনে না তারা ঠিকই ১৩০-১৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেয়।’</p> <p>বেলচোঁ বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব জানান, বাণিজ্যিকভাবে এখানে পিরানহা চাষ হয় না। অনেকে শখ করে কিছু পালন করে, আবার অনেক সময় পোনার সঙ্গে চলে আসে। পোনার সঙ্গে চলে আসা পিরানহাগুলো বড় হয়ে গেলে সুন্দর দেখায় বলে কেউ কেউ শখ করে পুকুরে রেখে দেয়।</p> <p>ধেররা মৎস্য বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী রাধাকান্ত দাস রাজু জানান, আগের মতো এখন আর অহরহ পিরানহা আসে না। যা আসে, তা না দেখিয়ে গুটি কয়েক ব্যবসায়ী বিক্রি করে আবার চলে যায়। কুমিল্লার বরুড়া থেকে আসা এই পিরানহা বিক্রি বন্ধে তাঁরা বেশ সচেতন।</p> <p>এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা মাহমুদ বলেন, ‘মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পিরানহা কোনো মাছ নয়। এটি আমাজন এলাকার এক ধরনের মাংসাশী জলচর প্রাণী। আমাদের দেশে এটি ক্রয়-বিক্রয়, চাষ, খাওয়া, পরিবহন, সংরক্ষণসহ সব কিছুই নিষিদ্ধ। যে এসব বিষয় অমান্য করে পিরানহা বাজারে আনবে, তার বিরুদ্ধে জেল-জরিমানাসহ উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।’</p> <p> </p>