<p>‘আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্র খালেদা জিয়ার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে যাতে কাউকে বন্দি থাকতে না হয় সে আহ্বানও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও রাষ্ট্রদূত মাইকেল কে কোজাক এ মন্তব্য করেন। ২০১৭ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডাদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। জবাবে ওই মন্তব্য করেন কোজাক।</p> <p>মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০১৭ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে শুক্রবার রাতে ওয়াশিংটনে ফরেন প্রেস সেন্টারে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় জাস্ট নিউজ বিডির সম্পাদক এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারির দায়িত্ব পালনকারী মুশফিকুল ফজল প্রশ্ন করেন। এতে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের বিষয়টিও তোলা হয়। জবাবে মাইকেল কে কোজাক বলেন, ২০১৭ সালের ঘটনাগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ বছরের ঘটনাগুলোর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে আগামী বছর। বিএনপি চেয়ারপারসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্র খালেদা জিয়ার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানিয়েছে।’</p> <p>মাইকেল কোজাক বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা দেশটিতে (বাংলাদেশে) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণসহ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছি। গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতা ও উন্মুক্ততা পুনঃ প্রতিষ্ঠা বা উৎসাহিতকরণে এটি আপনাদের চেষ্টার একটি উপায় হতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা কিভাবে কমানো বা দূর করা যায় সে ব্যাপারে আমরা প্রায়ই বাংলাদেশ সরকারকে বলেছি। ক্রসফায়ারে কারো নিহত হওয়ার বিষয়টি বৈধ সামরিক কর্মকাণ্ড কি না তা নিয়েও আলোচনা হয়। তবে এটি আমাদের কাছে উদ্বেগের বিষয়। আমরা এ নিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলছি।’</p> <p>মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো বিশেষ ইউনিটের নির্যাতন-নিপীড়নের বিষয়ে যদি আমাদের কাছে তথ্য থাকে তবে সেগুলোর হোতাদের বিচারের উদ্যোগ না নেওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিই না বা সরঞ্জাম সরবরাহ করি না। বাংলাদেশসহ অন্য সব দেশের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য।’ এসব ক্ষেত্রে পরিস্থিতির উন্নতিতে উৎসাহিত করতেই যুক্তরাষ্ট্র এসব ব্যবস্থা নিয়ে থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন।</p> <p>মুশফিকুল ফজল তাঁর প্রশ্নে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১৬০ জন ব্যক্তি ক্রসফায়ারে ও ১১৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমনই। ২০১৪ সালের নির্বাচন শুধু বিএনপিই বর্জন করেনি, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে দেখা গেছে, এটি কোনোভাবেই নির্বাচন ছিল না। বর্তমানে প্রধান বিরোধী নেত্রী কারাগারে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা ও বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করবে?’</p>