সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের পিটুনি ও ছররাগুলিতে আহতদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কেউ কেউ হাসপাতাল ছাড়লেও গুরুতর আহত অন্তত ১০ জন এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। এর মধ্যে চারজনের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরিবারের অর্থেই চিকিৎসা বলছে তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহনের আশ্বাস দিলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে আহতদের অবস্থা জানাতে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সকাল ১০টায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল্লাহ নূর।
আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমানের পেটে গুলি লেগেছিল। সেটি এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আশিকুরের কয়েকজন বন্ধু জানায়, আশিকের পেটে গুলি লাগলেও সেটি ভেদ করে বেরোতে পারেনি। দুইবার এক্স-রে করা হলে গুলির অবস্থান আলাদা স্থানে পাওয়া যায়। এমন স্থানে রয়েছে, অপারেশনের জন্য খুুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আগে বেডে রাখা হয়েছিল; কিন্তু এখন আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
আহত আরেকজন শাহরিয়ার শাকিল একই বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর পিঠে গুলি লেগেছিল। এ ছাড়া একাধিক ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া নাট্যকলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সৈকতের চোখে রাবার বুলেট লেগেছে। পিটুনিতে মাথা ফেটে গেছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এখনো চিকিৎসাধীন সৈকত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আরেফিনের চোখে স্প্লিন্টার লেগেছে। চিকিৎসকরা একটি চোখে অপারেশন করেছেন। আরেকটিতেও অপারেশন করতে হবে।
কোটা সংস্কার চেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রত্যাশী বেকাররা। গত ৮ এপ্রিল শাহবাগ মোড় অবরোধ করার পর তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। ছররাগুলিও ছোড়া হয়। পরদিন ৯ এপ্রিল সকালে দোয়েল চত্বর এলাকায় মিছিল বের হলে আবারও পুলিশি আক্রমণের শিকার হয় আন্দোলনকারীরা। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক আন্দোলনকারী কমবেশি আহত হয়।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুলিশ অন্যায়ভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, যারা খুবই গরিব ঘরের সন্তান। কেউ টিউশনি করে নিজের খরচ জোটায়। তারা আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। আন্দোলনের সময় অনেকেই সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও কেউ আসেনি।’
আরেক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তবে তাঁরাও তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আহতরা ব্যক্তিগত টাকা দিয়েই চিকিৎসা খরচ চালাচ্ছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের ব্যয়ভার বহন করার আহ্বান জানান।
মন্তব্য
আলোচিত সংবাদ
ব্যাখ্যা ছাড়া সর্বসাধারণের পক্ষে কোরআন বোঝা সম্ভব নয়
আমাদের জাহিদ গুগলের ম্যানেজার
বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণে ভিসা লাগে না...
সিগারেট তৈরির একটি মূল উপাদান ইঁদুরের বিষ্ঠা!
সারাদিন বিছানায় শুয়ে অন্যের রক্ত যোগাড় করেই দিন কাটে মিমের
সীমান্তে সেনা, অস্ত্রের মহড়া মিয়ানমারের