<p>রাজশাহীতে গত ৮ মার্চ গর্ভবতী এক নারী সমস্যা নিয়ে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে ঠিকমতো না দেখেই ভিটামিনজাতীয় ওষুধ লিখে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গুরুতর অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনার পর তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। চিকিৎসকরা বলছেন, এই নারীর গর্ভের সন্তানটি আসলে ওই দিনই মৃত অবস্থায় ছিল। জানা গেছে, নওগাঁর মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা কাউছার বকুলের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (২৩) চিকিৎসকের এই অবহেলার শিকার হয়েছেন।</p> <p>কাউছার বকুল বলেন, তাঁর স্ত্রী চার মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গর্ভধারণের পর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছিল তাঁর স্ত্রীর। কয়েক দফা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করানো হয় তাঁকে। গত ৮ মার্চ হঠাৎ করে পেটে হালকা ব্যথাসহ কিছু সমস্যা দেখা দেয় তাঁর। ওই দিন রাতে রাজশাহী নগরের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক শায়লা জেসমিন শিল্পীকে দেখানো হয় মাহফুজাকে। চিকিৎসক দ্রুত দেখেই কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে ভিটামিনজাতীয় কিছু ওষুধ লিখে দেন। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধগুলো খাওয়ানোও হচ্ছিল। কিন্তু সমস্যা না কমে আরো বেড়ে যায়। গত বুধবার রাতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় মাহফুজাকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে।</p> <p>কাউছার জানান, ভর্তি করার পর চিকিৎসকরা পরীক্ষা করতে দেন। নগরের ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা করা হয়। প্রতিবেদনে চিকিৎসক নাজমা জেসমিন উল্লেখ করেন গর্ভধারণের ৯ সপ্তাহ পরেই মাহফুজার গর্ভের সন্তানটি মারা গেছে। এরপর তাঁর মৃত সন্তান প্রসব করানো হয়।</p> <p>কাউছার বকুল অভিযোগ করে বলেন, ৮ মার্চ যখন মাহফুজাকে চিকিৎসক শায়লা জেসমিন শিল্পীকে দেখানো হয় সেদিন পরীক্ষা করলে আর এ সমস্যা হতো না। তিনি বলেন, ‘এই অবহেলার কারণে আমার স্ত্রীর যে অবস্থা হয়েছিল, তাতে তিনি মারাও যেতে পারতেন। আমি চিকিৎসকের এই অবহেলার বিষয়টি নিয়ে আইনের আশ্রয় নেব।’</p> <p>গতকাল সন্ধ্যায় চিকিৎসক শায়লা জেসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এই ধরনের সমস্যা হলে প্রসূতির স্বজনরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারত; কিন্তু যেহেতু আমার কাছে এই ধরনের কোনো অভিযোগ করা হয়নি, কাজেই কিছুই বলতে পারব না।’</p> <p> </p> <p> </p>