যে মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলম জমি ও ভবন ফিরে না পেলেও পাচ্ছেন প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ‘আপিল বিভাগ’ তাঁকে ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি বছরের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে তিন কিস্তিতে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। আদেশের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ২৫ কোটি, এরপর দুই মাসের মধ্যে আরো ২৫ কোটি এবং বাকি টাকা ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। আপিল বিভাগের এই আদেশের মধ্য দিয়ে ১৮ বছর ধরে চলা এক আইনি লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি হতে চলেছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। মুন সিনেমা হলের মালিক ইটালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মাকসুদুল আলমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ড. তৌফিক নেওয়াজ, ব্যারিস্টার এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অ্যাডভোকেট সাইফুল্লাহ মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ইটালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম ছিলেন মুন সিনেমা হলের মূল মালিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্পত্তিটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে মালিকানা দাবি করে মাকসুদুল আলম ২০০০ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট এক রায়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। রায়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সামরিক শাসন জারির পর থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক শাসনামলের সব আদেশ, ঘোষণা ও আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি ৬০ দিনের মধ্যে জমি রিট আবেদনকারীর অনুকূলে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক রায়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন। তবে এ রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে মুন সিনেমা হল ইটালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডকে ফেরত দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
মালিক দীর্ঘদিনেও জমি ফেরত না পাওয়ায় ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি আদালত অবমাননার মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে মাকসুদুল আলম সম্পূরক একটি আবেদন করেন। এ অবস্থায় আপিল বিভাগ গত বছর ১৫ জানুয়ারি জমি ও ভবনের মূল্য এবং ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে বুয়েটের সাবেক ভিসি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এরপর এই কমিটি পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। কমিটি সর্বমোট ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা নির্ধারণ করে। এ অবস্থায় এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদালত অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর কমিটির সুপারিশের আলোকে ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন।
মন্তব্য
আলোচিত সংবাদ
ব্যাখ্যা ছাড়া সর্বসাধারণের পক্ষে কোরআন বোঝা সম্ভব নয়
আমাদের জাহিদ গুগলের ম্যানেজার
সারাদিন বিছানায় শুয়ে অন্যের রক্ত যোগাড় করেই দিন কাটে মিমের
সিগারেট তৈরির একটি মূল উপাদান ইঁদুরের বিষ্ঠা!
পরকীয়া প্রেমিকের স্ত্রী-কন্যার মারধরের শিকার চিত্রনায়িকা রাকা
বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণে ভিসা লাগে না...