<p>রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের পর আবারও মারমুখী অবস্থান নেওয়ায় কলেজের একটি ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কলেজের কাজী নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার মধ্যে ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।</p> <p>এর আগে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে গোটা কলেজেই এ নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কলেজে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।</p> <p>প্রসঙ্গত, র‌্যাগ ডে উদ্যাপনের জন্য চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার মাঝরাতে কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়। পুলিশ শিবিরের পাঁচজনকে আটকও করে। তবে এ নিয়ে কোনো পক্ষই থানায় মামলা করেনি।</p> <p>কলেজের উপাধ্যক্ষ নওসাদ আলী কালের কণ্ঠ’কে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে আজও (গতকাল) উত্তেজনা দেখা দেয়। এ কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কলেজের কাজী নজরুল ইসলাম হোস্টেলটি বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হোস্টেলটি বন্ধ থাকবে।’</p> <p>প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার জের ধরে গতকাল সকাল ১০টার দিক থেকেই কলেজে মহড়া দিতে শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তাঁদের মারমুখী আচরণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরই মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত পিংকু ছাত্রাবাসে ভাঙচুর করতে পারে।</p> <p>পরে খবর পেয়ে রাজপাড়া থানার ওসি আমান উল্লাহর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পিংকু ছাত্রাবাসের সামনে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কলেজ চত্বর থেকে মিছিল বের করে পিংকু ছাত্রাবাসের দিকে গেলেও পুলিশের অবস্থানের কারণে তাঁরা আবার ফিরে আসে।</p> <p>জানা গেছে, কলেজের দুটি ছাত্রাবাসের মধ্যে পিংকু ছাত্রাবাসটি ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত। এ ছাত্রাবাসে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন একটি কক্ষে ছাত্রশিবির কার্যালয় করে রেখেছিল। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিবিরের ওই কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বইপত্র জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে কার্যালয়টি বন্ধ করে দিয়ে ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।</p> <p>জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু বলেন, ‘ছাত্রশিবির কলেজে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এ কারণেই ছাত্রলীগ প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে। তাদের কলেজের কোথাও আর শক্তি প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে না। এরই অংশ হিসেবে আমরা মিছিল করেছি।’</p>