<p>‘সেই রেললাইনের ধারে মেঠো পথটার পারে দাঁড়িয়ে/এক মধ্যবয়সী নারী এখনো রয়েছে হাত বাড়িয়ে/খোকা ফিরবে, ঘরে ফিরবে, কবে ফিরবে, নাকি ফিরবে না/দৃষ্টি থেকে তার বৃষ্টি গেছে কবে শুকিয়ে...।’ একাত্তরে রণাঙ্গনে যাওয়া সন্তানের জন্য প্রতীক্ষারত এক মায়ের আকুতি এভাবেই গানের সুরে মেলে ধরেছেন গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। স্বদেশের ভাবনাতাড়িত এমন গানের পাশাপাশি লিখেছেন অনেক রোমান্টিক ও নানা অনুভূতির গান।</p> <p>গতকাল রবিবার উদ্্যাপিত হলো প্রখ্যাত এই গীতিকবির ৭৫তম জন্মদিন। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে গান আর কথায় সাজানো এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল গানের দল নিবেদন। অনুষ্ঠানে বরেণ্য গীতিকবি রফিকউজ্জামানকে জানানো হয় ফুলেল শুভেচ্ছা, তুলে দেওয়া হয় সম্মাননাপত্র।</p> <p>অনুষ্ঠানের শুরুতেই আলোচনা পর্বে অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, গণসংগীত শিল্পী মাহমুদ সেলিম ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন নিবেদনের সাধারণ সম্পাদক সুমা রায়।</p> <p>অনুভূতি প্রকাশ করে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বলেন, ‘বয়স যত বাড়ে লেখার মাঝেও তত বেশি পরিবর্তন আসে। এক গানের মধ্যে শুধু আনন্দের কথা বলতাম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আনন্দের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে বিরহ ও বেদনা। তবে সংগীত রচনায়  ছন্দ ও অন্তঃমিল প্রয়োগের ক্ষেত্রে সব সময় শুদ্ধতার পথে হেঁটেছি। তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান, তারাও যেন গান লেখার ক্ষেত্রে শুদ্ধতা অনুসরণ করে।’</p> <p>অনুষ্ঠানে রফিকউজ্জামানের লেখা ‘যে আমার হৃদয় করলো চুরি’, ‘সবাই বলে সর্বনাশের মূল’, ‘দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক’, ‘জনম জনম ধরে প্রেম পিয়াসী’, ‘শুক পাখিরে পিঞ্জিরা তোর’. ‘আমার বাউল মনের একতারাটা’ এমন আরো কয়েকটি তুমুল জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।</p>