বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং এতে তিনি কোনো বক্রতা রাখেননি। [সুরা : কাহফ, আয়াত : ১ (প্রথম পর্ব)]
তাফসির : এখান থেকে সুরা কাহফ শুরু। কোরআন অবতরণের ধারাক্রম অনুযায়ী এটি কোরআনের ১৮তম সুরা। সুরাটি মক্কি তথা হিজরতের আগে অবতীর্ণ হয়েছে। এর রয়েছে ১১০টি আয়াত ও ১২টি রুকু। এই সুরার অবতরণ প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কার কুরাইশরা নজর বিন হারিস ও উকবাহ বিন আবু মইতকে মদিনার ইহুদি আলেমদের কাছে পাঠিয়েছে। তারা তাদের উভয়কে বলেছে, তোমরা মদিনায় যাও এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞেস করো—তিনি সত্যি আল্লাহর নবী কি না? কেননা তারা আহলে কিতাব। তাদের কাছে নবী-রাসুলদের সম্পর্কে এমন জ্ঞান আছে, যা আমাদের কাছে নেই। নজর বিন হারিস ও উকবাহ মদিনায় গিয়ে ইহুদি আলেমদের কাছে রাসুল (সা.) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।
ইহুদি আলেমরা তাদের বলেছেন, তোমরা তাঁকে তিনটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো। তিনি যদি প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিতে পারেন, তাহলে তিনি সত্য নবী। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন, তাহলে বুঝবে, তিনি একজন মিথ্যাবাদী। প্রশ্নগুলো হলো—এক. তোমরা তাঁকে সেসব যুবক সম্পর্কে (আসহাবে কাহফ) জিজ্ঞেস করো, যারা অতীতে দ্বিন নিয়ে পলায়ন করেছিল। তাদের অবস্থা কী হয়েছিল? কেননা তাদের ঘটনাটি ছিল সত্যি বিস্ময়কর। দুই. তোমরা তাঁকে আল্লাহর সেই মুমিন বান্দা (জুল কারনাইন) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো, যিনি পূর্ব ও পশ্চিমের সব দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর খবর কী? তিন. তোমরা তাঁকে রুহ বা আত্মা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো। তিনি যদি তোমাদের প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেন, তাহলে তিনি একজন সত্য নবী। তাহলে তাঁর অনুসরণ করো। আর জবাব দিতে না পারলে মনে করবে তিনি মিথ্যাবাদী। অতঃপর তোমরা তাঁর ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারো।
প্রশ্নগুলো নিয়ে নজর ও উকবাহ মক্কার কুরাইশদের কাছে ফিরে আসে। তারা কুরাইশদের বলল, আমরা মুহাম্মদ ও তোমাদের মধ্যে ফয়সালাকারী একটি বিষয় নিয়ে এসেছি। এই বলে তারা প্রশ্নগুলো সম্পর্কে কুরাইশদের অবগত করে। তারা বলে, মদিনার ইহুদি আলেমরা আমাদের বলেছেন, আমরা যেন প্রশ্নগুলো মুহাম্মদের সামনে পেশ করি। তারা এসে মহানবী (সা.)-এর কাছে প্রশ্ন তিনটি উপস্থাপন করে। প্রশ্নগুলোর জবাবে মহানবী (সা.) বলেছেন, আগামীকাল আমি তোমাদের প্রশ্নগুলোর জবাব দেব। কিন্তু তিনি ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে ভুলে গিয়েছেন। কাফিররা আগামীকালের ওয়াদা নিয়ে চলে যায়। ‘ইনশাআল্লাহ’ না বলার কারণে ১৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও এ ব্যাপারে কোনো অহি আসেনি। জিবরাইল (আ.)ও আগমন করেননি।
এদিকে মক্কার কুরাইশরা বলাবলি করতে লাগল, মুহাম্মদ আগামীকালের ওয়াদা করেছেন। আর আজ ১৫ দিন হলো। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রশ্নগুলোর কোনো জবাব দিতে পারেননি। এতে মহানবী (সা.) ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ১৫ দিন পর জিবরাইল (আ.) সুরা কাহফ নিয়ে হাজির হয়েছেন। এই সুরায় আসহাবে কাহফের ঘটনা, জুল কারনাইন বাদশাহর ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। রুহ বা আত্মা সম্পর্কে সুরা বনি ইসরাঈলে উল্লেখ করা হয়েছে। (ইবনে কাসির ও আত-তাফসিরুল মুনির)
গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ
মন্তব্য
আলোচিত সংবাদ
ব্যাখ্যা ছাড়া সর্বসাধারণের পক্ষে কোরআন বোঝা সম্ভব নয়
আমাদের জাহিদ গুগলের ম্যানেজার
সারাদিন বিছানায় শুয়ে অন্যের রক্ত যোগাড় করেই দিন কাটে মিমের
সিগারেট তৈরির একটি মূল উপাদান ইঁদুরের বিষ্ঠা!
পরকীয়া প্রেমিকের স্ত্রী-কন্যার মারধরের শিকার চিত্রনায়িকা রাকা
বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণে ভিসা লাগে না...