<p>ভুল চিকিৎসায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগে গ্রেপ্তার সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. এম এ কাশেমের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এ আবেদন মঞ্জুর করেন।</p> <p>পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী আফিয়া জাহানের মৃত্যু হয়। এ খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডেঙ্গু হলেও ভুলে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়ার কারণেই ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক আবুল কাশেমসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ডা. আবুল কাশেমকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এক হাজার টাকা বন্ডে এবং স্থানীয় দুজন জামিনদারের জিম্মায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।</p> <p>স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিবৃতি : সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী আফিয়া জাহান চৈতীর মৃত্যু-পরবর্তী ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। গতকাল গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি আফিয়ার অকালমৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।</p> <p>স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীর মৃত্যুর জন্য ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে ডাক্তার লাঞ্ছনা বা হাসপাতাল ভাঙচুরের মতো পরিস্থিতি মোটেও কাম্য নয়। হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় ভুল বা অবহেলার অভিযোগ থাকলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) বরাবর অভিযোগ করতে পারেন। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আনীত যেকোনো অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব ও পূর্ণ ক্ষমতা বিএমডিসির ওপর অর্পিত হয়েছে।</p> <p>সংক্ষুব্ধ স্বজনদের বিএমডিসি বরাবর অভিযোগ করার অনুরোধ করে মন্ত্রী বলেন, বিএমডিসি স্বাধীন অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাই  যেকোনো ভুল চিকিৎসার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য মন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানান।</p> <p>চিকিৎসকের কোনো ভুল হয়নি : এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ও সেন্ট্রাল হাসপাতালের ভিজিটিং অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মৃত্যু চিকিৎসকের কোনো ভুলে হয়নি। বরং ওই রোগী জটিল এক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে একেবারেই শেষ পর্যায়ে ছিলন। আর হাসপাতালে আনার পর রোগীর মূল চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। বরং চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ওই রোগীর রোগের ধরন বের করতে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।</p> <p>ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, যে অভিযোগ তুলে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন হলে চিকিৎসকরা স্বাভাবিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন।</p> <p>সংশোধনী ও দুঃখ প্রকাশ : এ ঘটনা নিয়ে গতকাল কালের কণ্ঠ’র শেষ পৃষ্ঠায় নগর সংস্করণে ‘চিকিৎসাধীন ছাত্রীর মৃত্যু/হাসপাতাল ভাঙচুর’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের সঙ্গে আফিয়া জাহানের নামে যে ছবি ছাপা হয়েছে সেটি আসলে তাঁর নয়। ভুলবশত আফিয়ার স্থলে অন্য একজনের ছবি ছাপা হয়ে গেছে। অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের জন্য কালের কণ্ঠ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পাঠকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছে।</p>