<p>বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে নিম্ন আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।</p> <p>বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। খালেদা জিয়ার করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।</p> <p>নাইকো দুর্নীতি মামলা নিয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের করা আবেদন হাইকোর্টে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।</p> <p>গতকাল আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।</p> <p>আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, এ আদেশ স্থগিতের জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।</p> <p>এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পুনরায় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া গতকাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন। এ ছাড়া এ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের ওপর আজ বুধবার হাইকোর্ট আদেশ দেবেন।</p> <p>নাইকো দুর্নীতি মামলা  খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের ওপর শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া নাইকো দুর্নীতির বিষয়টি ওয়াশিংটনের সালিসি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই সালিসি আদালত গত বছরের ১৯ জুলাই এক আদেশ দেন। আদেশে ওই আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলাকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। এ আদেশ সংযুক্ত করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি স্থগিতের আবেদন করেন মওদুদ আহমদ। নিম্ন আদালত গত বছর ১৬ আগস্ট মওদুদ আহমদের আবেদন খারিজ করে দেন। এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন মওদুদ আহমদ। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছর ১ ডিসেম্বর মওদুদের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। আপিল বিভাগ গত বছর ১১ ডিসেম্বর ওই আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এ রুল এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন।</p> <p>এরই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া গত বছর নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। ওই আদালত গত ১৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল আদেশ দেন হাইকোর্ট।</p> <p>কানাডিয়ান কম্পানি নাইকোর সঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে দুদক। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা ২০১০ সালের ১১ মার্চ হাইকোর্ট বাতিল করে রায় দেন। তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা চলমান।</p> <p><strong>জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা</strong></p> <p>জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক রমনা মডেল থানায় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলা করে। মামলায় খালেদা জিয়া এবং তাঁর দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে বিচারাধীন। মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে। এ অবস্থায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানান খালেদা জিয়া। কিন্তু বিচারক এ আবেদন গত ২ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ৮ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এ আবেদনের ওপর গত ৫ মার্চ শুনানি সম্পন্ন হয়। আজ বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।</p>