<p>আগামী ২০১৭ সালের জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অনলাইনে ভ্যাট প্রদানের এই নিয়ম চালু হলে ব্যবসায়ীরা খুব সহজে ভ্যাট দিতে পারবে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সে সম্পর্কে অবহিত করতে সেমিনারের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এই সেমিনারো আয়োজন করা হয়।</p> <p>অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অনলাইনে ভ্যাট আবেদন নিতে ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার স্থাপন করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দেশের ভ্যাটদাতা ১৩৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফাইবার কেবল বা তারের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ওয়েবসাইটে গিয়ে ভ্যাট নিবন্ধন, আবেদন, রিটার্ন দাখিল করতে পারবে। দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটে পৃথক অফিস স্থাপন করে সেই সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এটি করা হবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে।</p> <p>সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘দেশে সত্যিকার করদাতার সংখ্যা নগণ্য। দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে আমরা যদি কর ও ভ্যাট দেওয়ার মানসিকতা গড়ে না তুলি তাহলে দেশ এগোবে কিভাবে।’ </p> <p>আ জ ম নাছির উদ্দিন উদাহরণ দিয়ে আরো বলেন, ক্রিকেট খেলায় একজনের পারফরম্যান্স ভালো হলেও দল যদি না জেতে তাহলে তাতে কোনো সুফল আনে না। তেমনি ব্যবসা করে কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হলেও দেশ যদি এগিয়ে না যায় তাতেও কোনো সুফল বয়ে আনে না। ফলে সম্মিলিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে পারলেই সবাই উপকৃত হবে। এ জন্য ভ্যাট, কর দেওয়া জরুরি।</p> <p>অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম কর আপিল অঞ্চলের কমিশনার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘একটি আইন বাস্তবায়নের সময় স্বস্তি ও অস্বস্তি দুটোই থাকতে পারে, কিন্তু এই আইন দেখে ভীতি ছড়ানোর কোনো কারণ দেখছি না।’</p> <p>বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার এ এফ এম আবদুল্লাহ খান বলেন, ‘ভিয়েতনামের এক-তৃতীয়াংশ লোক ট্যাক্স দেয়, কিন্তু আমাদের দেশের জনগণ দেয় মাত্র এক শতাংশ। ২০০৯ সালে ৫৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে, আর ২০১৬ সালে এসে তা বেড়ে এক লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। এই ট্যাক্স দিয়েই পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল ও পায়রা বন্দরের মতো মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা এখন যথাযথ ও সঠিক নেতৃত্বের পথেই আছি, ফলে সরকারের এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ট্যাক্স দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।’</p> <p>অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান প্রমুখ। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাটের অতিরিক্ত কমিশনার ড. আবদুর রউফ। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের প্রচুর ব্যবসায়ী অংশ নেন।</p>