<p>বিশ্বে চামড়াজাত পণ্যের বাজার ২৩০ বিলিয়ন ডলারের। এতে বাংলাদেশের অবদান ১ শতাংশেরও কম। দেশের ৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের মাত্র ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন আসে চামড়া খাত থেকে। পরিবেশদূষণের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ট্যানারিশিল্পকে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থাপিত আধুনিক ট্যানারিপল্লীতে আসতে সময় লেগেছে ১০ বছর। অথচ যে কারণে এই ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ স্থানান্তর, সেই কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারই (সিইটিপি) এখনো অসম্পূর্ণ। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্থানান্তরের মূল উদ্দেশ্য। পরিবেশগত বাধ্যবাধকতা না মানলে উন্নত বিশ্বে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির পথ রুদ্ধ হবে। কার্যকরভাবে সিইটিপি চালুর পাশাপাশি ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি, ট্যানারিপল্লীতে জমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, চাহিদামতো গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করলে এই খাতে নামি-দামি ব্র্যান্ডের বিনিয়োগ আসবে, ২০২১ সালে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের পথ সুগম হবে—এ আশাবাদই ফুটে উঠল আলোচকদের কথায়। কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। গোলটেবিল সমন্বয় এবং বিশেষ এই ক্রোড়পত্র গ্রন্থনায় <strong>মাসুদ রুমী, এম সায়েম টিপু, শেখ শাফায়াত হোসেন</strong> ও <strong>রফিকুল ইসলাম</strong>। ছবি তুলেছেন <strong>লুৎফর রহমান</strong></p> <p> </p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-2.jpg" style="float:left; height:189px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" />এই খাতের উন্নয়নে সরকার আরো সহায়তা দেবে</strong></p> <p>এম এ মান্নান</p> <p>পরিবেশবান্ধব শিল্পের জন্য পরামর্শ সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে বয়ে নিয়ে যাওয়া আমার দায়িত্ব। সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের কানে পৌঁছানোর কাজটি আমি প্রায়ই করে থাকি। এর ফলে একটি ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সিইটিপি বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে। সাভারের ট্যানারিপল্লী নিয়ে প্রথম আলোচনা হয় ২০০৩ সালে। সে সময় আমি বিসিকের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমার সময়ই এর কাজ শুরু হয়। এটা এখনো ঝুলছে। আলোচনায় মনে হলো, অত্যন্ত সংগত সংশয় রয়েছে। আমার আশা, সরকার এই প্রকল্পের কাজ  দ্রুত সমাধান করবে। বর্তমান শিল্পসচিব এটাকে শক্তভাবে বয়ে নিয়ে যাবেন। একটি আদর্শ মডেলের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করবেন। এই খাতে ৭০ শতাংশ নারী শ্রমিক কাজ করে। এই নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। প্রয়োজনে এই খাতের কর্মীদের উন্নয়নে সরকার আরো সহায়তা করবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-3.jpg" style="float:left; height:189px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>সম্ভাবনাময় পাদুকাশিল্প এগিয়ে নিতে হবে</strong></p> <p>ইমদাদুল হক মিলন</p> <p>আমরা প্রতিনিয়তই বিশেষ বিশেষ বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আমরা পাঠককে জানাতে চাই, ওই বিষয়টি দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই ধারাবাহিকতায় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। তিন-চার বছর আগে টোকিওতে একটি দোকানে স্যান্ডেল কিনতে ঢুকি। সেখানে পছন্দের স্যান্ডেল কিনে দেশে ফিরে দেখি লেখা রয়েছে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। এতে আমি খুবই গৌরব বোধ করলাম। এভাবে আমেরিকা কিংবা অন্য দেশে গিয়ে গার্মেন্টপণ্যের ক্ষেত্রে বহুবার দেখেছি আমাদের দেশে তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ যত এগিয়ে যাবে, ততই ভালো লাগবে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নিয়ে নানা কথা চলেছে; বিশেষ করে ট্যানারি সরানো নিয়ে কথা হয়েছে। এটা সরানো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। একসময় পুরান ঢাকায় ছোট ছোট জুতার কারখানা ছিল। ঈদের আগে অনেকে অর্ডার দিয়ে জুতা বানাত। পাড়া-মহল্লায়ও মুচিরা কাজ করত। এক শ্রেণির মানুষ জুতা পলিশেরও কাজ করত। সেসব এখন আর নেই। কারণ একটাই, সব মিলিয়ে আমরা একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়াতে পেরেছি। ১০০ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জুতা নিয়ে কবিতা লিখেছেন। সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-4.jpg" style="float:left; height:189px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>সংকট আছে, তবে সম্ভাবনার জায়গাও বিশাল</strong></p> <p>মোস্তফা কামাল</p> <p>কালের কণ্ঠ সময় বার্নিং ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে। আর সেই বিষয়ে আমরা রীতিমতো ক্যাম্পেইন করি, যেন সরকার বা নীতিনির্ধারণী মহলের উপকারে আসে। সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও ব্যবসায়ী বা বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে কিছু বিষয় উঠে আসতে হয়। হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি সরানো নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে। তবে যেখানে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল ট্যানারিপল্লী যথাযথ প্রস্তুত করার কথা, সেটা হয়নি। পরিবেশ নিয়েও ভাবছে ব্যবসায়ীরা। কাঁচা চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য কিনতে আসা উন্নত দেশগুলোও দেখে পরিবেশ ঠিক আছে কি না। পরিবেশগত ত্রুটি দেখলে তারা সেটি নিতে চায় না। ব্যবসায়ীরাও নতুন অর্ডার পাচ্ছে না বলে শোনা যাচ্ছে। এটা একটা সংকট। তবে সম্ভাবনার জায়গাও বিশাল। সেই সম্ভাবনা আমরা কাজে লাগাতে পারছি না কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যে আমাদের কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বা সিইটিপি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। আমরা চাই, এটার সমাধান হোক। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ রাজ্যে রাজ্যে চামড়াশিল্প স্থাপন করছে। এটার সম্ভাবনা বড় হওয়ায় তারা করছে। আশা করছি, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।</p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-23.jpg" style="float:right; height:935px; margin:12px; width:232px" /></strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-5.jpg" style="float:left; height:189px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>সিইটিপি সমস্যার সমাধান করা হবে</strong></p> <p>মোহাম্মদ আবদুল্লাহ</p> <p>চামড়াশিল্প থেকে গত অর্থবছরে ১২৩ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়। ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি ডলার। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ২০৩০ সালে ৮০০ কোটি ডলার এবং ২০৪১ সালে এই খাত থেকে আয় হবে দুই হাজার কোটি ডলার। সরকার এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এই রূপকল্প সামনে রেখে সাভারে এক হাজার ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ট্যানারিপল্লী করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকার অনুদান হিসেবে দিয়েছে ২৬০ কোটি টাকা। ইতিবাচক বিষয় হলো, সব ট্যানারি রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে। সবাই স্থাপনাও নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া ১০০টি কারখানা উৎপাদনে গেছে। কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে এসব সমাধান করা যাবে না এমন নয়। সিইটিপি প্রকল্পের সমস্যা সমাধানে শিল্পমন্ত্রীও বর্তমান চীনা ঠিকাদারের পরিবর্তে তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে কাজ করানোর কথা ভাবছেন। কিন্তু এ অবস্থায় তা কিছুতেই সম্ভব নয়। এর ফলে সংকট আরো বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবেও দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। এই খাতের দক্ষ প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখন চীনের ঠিকাদারকে দিয়েই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চীনা ঠিকাদারের জামানত ও বকেয়া বিলের পাওনাও আমাদের কাছে আছে। ট্যানারিপল্লীর সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন আমাদের সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, ২০০৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ২০১৯ সালের মধ্যেই শেষ হবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-6.jpg" style="float:left; height:171px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>নীতি সহায়তা পেলে চামড়া উদীয়মান শিল্পে পরিণত হবে</strong></p> <p>মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন)</p> <p>আমাদের পণ্যের ভালো বাজার আছে বলেই অ্যাডিডাস ও নাইকির মতো বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো এখানে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে এই শিল্পের জন্য যে পথনকশার কথা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে যথাযথ সমন্বয় সাধনের প্রয়োজন রয়েছে। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে পোশাক খাতের মতো চামড়াশিল্পও উদীয়মান শিল্পে পরিণত হতে পারে। বাংলাদেশে শ্রমবাজার সস্তা নয়, প্রকৃত অর্থে এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক জায়গা। দক্ষতা বিবেচনায় নিলে এরই মধ্যে শ্রমিকের মজুরি অনেক বেড়েছে। তবে প্রযুক্তি এবং দক্ষতা উন্নয়নে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। হাজারীবাগ থেকে সাভারের চামড়াপল্লীতে যেতে সময় বেশি লাগারই কথা। পানি সরে যাওয়ার সরু ড্রেন, নিম্নমানের বর্জ্য শোধনাগারের ফলে ট্যানারির মালিকরা সময়মতো যেতে পারেনি। এসব জায়গায় জবাবদিহিরও অভাব ছিল। অভিযোগ আছে, ট্যানারি মালিকদের কাছে অনেক টাকা পাওনা। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে গেলে আমার বিশ্বাস এই শিল্প আরো বিকশিত হবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-7.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>শুধু ব্যবসাবান্ধব হলে চলবে না পরিবেশবান্ধবও হতে হবে</strong></p> <p>জিয়াউল হক</p> <p>আমরা সবাই-ই চাই, অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধি হোক, সম্ভাবনা বাড়ুক। কিন্তু সেটা পরিবেশ ধ্বংসের বিনিময়ে নয়। আমাদের শুধু ব্যবসাবান্ধব হলে চলবে না, পরিবেশবান্ধবও হতে হবে। ছোট্ট একটি দেশ। এখানে যদি বাতাস নষ্ট হয়ে যায়, পানি নষ্ট হয়ে যায়, মাটি নষ্ট হয়ে যায়; এখানে যদি জীববৈচিত্র্য না থাকে, তাহলে   ১০-১৫ বছর পর কী হবে আপনারা কেউ চিন্তাই করতে পারবেন না। আমরা বলছি সমৃদ্ধি হচ্ছে, অর্থনৈতিক মূল্যায়নের দিক দিয়ে। কিন্তু নান্দনিকতার দিক দিয়ে যে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি, সেটা আমরা ভাবছি না। সে ক্ষেত্রে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিশিল্পকে সাভারে স্থানান্তর করাটা যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ। এটার জন্য ১৫ বছর সময় লেগেছে। এখন এই শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছে এটা পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো পরিবেশের প্রতি কমপ্লায়েন্ট করা, নিয়মিত তদারক করা। তবে পরিবেশ নিয়ে ভাবার দায়িত্ব বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও আছে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-8.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>কমপ্লায়েন্সের ওপর জোর দিতে হবে</strong></p> <p>শেখ ফজলে ফাহিম</p> <p>তৈরি পোশাক খাতের মতো চামড়াশিল্পেরও বেশ সম্ভাবনা আছে। এ জন্য সফল খাতগুলোর সাফল্যের কারণগুলো চিহ্নিত করে এই খাতে কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার জন্য পণ্যের মূল্য সংযোজন, কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে কারখানার কমপ্লায়েন্সের ওপর জোর দিতে হবে। শিল্পে অটোমেশনের বিপ্লবের ফলে তৈরি পোশাক, চামড়া খাতসহ অগ্রসরমাণ শিল্প খাতে বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের চাকরি হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই এর আগেই দেশের জনশক্তিকে মৌলিক কারিগরি শিক্ষায় স্বনির্ভর করে তুলতে হবে। এটা করা না গেলে দক্ষ মানবশক্তির অভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শিল্পের ভ্যালু চেইন এবং সার্টিফিকেশনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-9.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>পরিবেশের উন্নতি হলে নামকরা অনেক কম্পানি আসবে</strong></p> <p>আলী আহমদ</p> <p>হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরাতে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হলো। সবাইকে সরতে বাধ্য করতে গ্যাস, ইউটিলিটি—সব বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হলো। তারা সবাই সাভার গেল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়েছে কি? ব্যবসায়ীরা বলছে, সিইটিপি লাগবেই। কিন্তু সেটি না হওয়ায় সলিড ওয়েস্ট বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা ব্যর্থ হচ্ছি যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে। আমাদের একদিকে ভারত, অন্যদিকে চীন। একসময় ভিয়েতনামের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু তারা এখন কত ওপরে চলে গেছে। তাদের ম্যানেজমেন্ট ভালো। আমাদেরও সেটা করতে হবে। সরকারের কাজ ব্যবসা করা নয়, তাদের কাজ দেশে ব্যবসা করার পরিবেশ সৃষ্টি। চামড়াশিল্পসংশ্লিষ্ট সিইটিপির উন্নতি ও সমাধান করতে হবে। তাহলে নামকরা অনেক কম্পানি এ দেশে আসবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-10.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>দ্রুত সিইটিপি সমস্যার সমাধান করতে হবে</strong></p> <p>সাইফুল ইসলাম</p> <p>জন্মলগ্ন থেকে চা, পাট ও চামড়া—তিনটি পণ্য রপ্তানিতে আমরা নির্ভরশীল ছিলাম। ধীরে ধীরে প্রথাগত (ট্র্যাডিশনাল) পণ্য বাদ দিয়ে অপ্রথাগত (নন-ট্র্যাডিশনাল) পণ্য রপ্তানিতে সামনে চলে আসে। চামড়াশিল্প ১৯৮০ সালের দিকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। তবে গত ১০ বছরে অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা একটিমাত্র পণ্য পোশাক বা গার্মেন্টপণ্য রপ্তানিতে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। ৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশই এসেছে পোশাক খাত থেকে। বাকি ১৮ শতাংশ এসেছে বৈচিত্র্যময় পণ্য থেকে। এর মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চামড়াশিল্প খুবই শ্রমঘন। অনেক লোকের প্রয়োজন হয়। এই শিল্পের বিকাশ হলে কর্মসংস্থান হবে। বিশ্বে চামড়ার বাজার ২৩০ বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে ১৩৪ বিলিয়ন ডলার জুতার দখলে। তবে আমরা এর ১ শতাংশও ধরতে পারছি না। চামড়াশিল্পে আমাদের এগিয়ে যেতে পরস্পরের প্রতি দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কী কী করণীয় আছে, কী ভুল হয়েছে সেটি বাদ দিয়ে সিইটিপি সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর এটি করা হলেই ৮০ শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সিইটিপি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কনসালট্যান্ট দিয়ে সিইটিপি প্রকল্প অডিট করাতে হবে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করণীয়, তা করতে হবে। সিইটিপি এমনভাবে দাঁড় করাতে হবে, যাতে আমরা রাসায়নিক ও তরল বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এটি সম্পন্ন করতে পারলে আমরা পরিবেশগতভাবে কমপ্লায়েন্ট হব। আমরা যদি পরিবেশগত বিষয়টির দ্রুত সমাধান করি, তাহলে ২০২১ সালে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে, তা অর্জন করতে সক্ষম হব। চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য যারা বিশ্বের বড় বড় বন্দর পরিচালনাকারী অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের নিয়োগ করতে হবে। তাহলে বর্তমান অবকাঠামো দিয়েই চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা তিন গুণ বেড়ে যাবে। শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যই দেশের জিডিপি ১ শতাংশ বেড়ে যাবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-11.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>বাংলাদেশই হবে বৈশ্বিক জুতার বিকল্প উৎস</strong></p> <p>মো. রুহুল আমিন মোল্লা</p> <p>এই শিল্পের মূল উপকরণই হলো চামড়া। এই শিল্পের অনেক সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। ওই আলোচনায় আমি যাব না। আমি যেহেতু ফুটওয়্যার খাত নিয়ে কাজ করি, সেহেতু এই খাত নিয়ে কিছু ধারণা দিতে পারি। এই খাতের কী সম্ভাবনা আছে এবং আমাদের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে আগামী দিনগুলোতে কী করতে হবে। তা নিয়ে বলব।</p> <p>দেশের জুতার বাজার অন্যতম একটি পুরনো বাজার। মূলত ঔপনিবেশিক আমলেই এই বাজারের উত্থান শুরু হয়েছিল। কিন্তু আধুনিকায়ন হয়েছে আশির দশকের শেষ দিকে। আমাদের দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার ৫০০ জুতা উৎপাদন প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ১১০ থেকে ১১৫টি, যেগুলোকে আমরা মেকানাইজড বা সেমিমেকানাইজড ফ্যাক্টরি বলি। এই শিল্পে সরাসরি প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের মতো ফুটওয়্যার খাতের ৭০ শতাংশ কর্মীই নারী।</p> <p>আমরা হয়তো জানি না, এত পুরনো একটি শিল্প সত্ত্বেও আমরা কেন পিছিয়ে রয়েছি? আমরা যদি বিশ্বের ফুটওয়্যার উৎপাদনের চিত্রটা দেখি, ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার ইয়ার বুক অনুযায়ী, ২০১৬ সালে আমরা তিন হাজার চার কোটি ৩০ লাখ জোড়া জুতা উৎপাদন করেছি। বিশ্বের মধ্যে ফুটওয়্যার উৎপাদনে বাংলাদেশ ৮ নম্বরে। এ সত্ত্বেও আমরা মাত্র ১২৩ কোটি ডলার রপ্তানি আয় করছি এই শিল্প থেকে। আমি মনে করি, আমাদের সম্ভাবনা অনেক।</p> <p>কেন? বলা হয় ‘ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি ইজ নটোরিয়াস ফর ইটস চিপ লেবার’। আমরা যদি ফুটওয়্যার খাতের ইতিহাস দেখি, ষাটের দশকে জাপান ছিল জুতাশিল্পের বৈশ্বিক রপ্তানিতে নেতৃস্থানীয় দেশ। শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় এই বাজারটা পরবর্তী সময় চলে যায় তাইওয়ানের হাতে। পরে তাইওয়ানের হাত থেকে চীনের হাতে এবং তারা এই শিল্পে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত চীনই এই শিল্পে ডোমিনেট করছে। তাদের কাছ থেকে এটা এখন ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড চলে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশেই জুতাশিল্পে সবচেয়ে সস্তা শ্রম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে বৈশ্বিক জুতার উেসর জন্য বাংলাদেশই হবে একমাত্র বিকল্প গন্তব্য। এটা শুধু আমার কথা নয়, আন্তর্জাতিক বড় ব্র্যান্ডগুলো এই সম্ভাবনার কথা বলছে।</p> <p>আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ দক্ষ মানবসম্পদ। কাঁচামাল আছে; কিন্তু সেখানেও একটি কমপ্লায়েন্স ইস্যু আছে। এ ছাড়া ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অনুমোদনের জন্যও অনেক সময় লেগে যায়। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো আমদানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক শুল্কও অনেক বেশি। এ দেশে যে সাড়ে তিন হাজার জুতার কারখানা আছে, সেগুলোর বেশির ভাগই নিজেদের মূলধনে করা। এই শিল্পের জন্য আমরা যখন ঋণের জন্য ব্যাংকে যাচ্ছি, সেখানেও আমরা গুরুত্ব পাচ্ছি না। এই বিষয়গুলোতে সরকারের কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার আছে বলে আমি মনে করি।</p> <p>আমরা যদি ফুটওয়্যার ব্যবসার ধারাটা দেখি, ২০১৬ সালে সারা বিশ্বে ফুটওয়্যারের রপ্তানির মধ্যে চীনের অংশ ছিল ৩৭ শতাংশ। পরিমাণ ছিল ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এর আগের বছর ২০১৫ সালে চীনের ফুটওয়্যার রপ্তানি ছিল প্রায় ৫৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরে চীনের রপ্তানি বাজার কিন্তু প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার কমেছে। ভিয়েতনাম এই বাজারে প্রবেশ করেছে আশির দশকের শেষ দিকে। তাদের মূল্য সংযোজন মাত্র ৩৩ শতাংশ।</p> <p>আমরা যদি মূল্য সংযোজনের কথা বলি, আমরা ভিয়েতনামের থেকেও বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারব। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য সংযোজন আমরা করতে পারব। যেখানে আমরা এখন শুধু ভিয়েতনামের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছি।</p> <p>সুতরাং আমাদের সম্ভাবনা অনেক। আমরা যে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির দেশে প্রবেশ করতে চাই, এটা কোনো কল্পনাবিলাস নয়। এটাই বাস্তবে রূপান্তর সম্ভব।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-12.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা ৪৫০ কোটি টাকা</strong></p> <p>মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন</p> <p>ট্যানারি সরানোকে কেন্দ্র করে গত চার বছরে ট্যানারি মালিকদের কাছে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা হয়েছে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা।</p> <p>পুঁজির অভাবে অনেক কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী একেবারে পথে বসে গেছে। কারণ ট্যানারি মালিকরা সাভারে কারখানা করতে গিয়ে আমাদের টাকা ফেরত না দিয়ে ওই টাকা সেখানে খাটিয়েছে। কিছু ট্যানারি মালিকের ওপর আমাদের আস্থা আছে, তারা দুই বছর পর হলেও আমাদের টাকা ফেরত দেবে। অন্য ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় করতে আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।</p> <p>২০২১ সাল নাগাদ আমরা যদি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ৫০০ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে দেশে পশুপালনও বাড়াতে হবে। এটা না করে আমরা যদি শুধু রপ্তানি বাড়াতে যাই, তাহলে চামড়া বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। এখন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে যেখানে ১৫ শতাংশ অর্থ কেমিক্যাল আমদানি করতে হচ্ছে, চামড়া আমদানি করতে হলে শতভাগ অর্থই বিদেশে চলে যাবে।</p> <p>এ কারণে আমরা চাই, ট্যানারি মালিকদের সাভারের জমি দ্রুত রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হোক এবং হাজারীবাগের জমিও তাদের দিয়ে দেওয়া হোক। তাহলে তারা হাজারীবাগের জমির টাকা দিয়ে সাভারে ব্যবসা শুরু করতে পারবে এবং আমরা আমাদের অনাদায়ি টাকা আদায় করতে পারব।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-13.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>সাভারে জমি রেজিস্ট্রি না হওয়ায় কেউ ঋণ নিতে পারছে না</strong></p> <p>শামসুর রহমান</p> <p>আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন সিইটিপি। এটা না হওয়া পর্যন্ত সাভারের ট্যানারির চামড়া আমাদের নিজেদের কারখানায় ব্র্যান্ডের জুতা তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারছি না। কেননা বিদেশি ক্রেতারা বলছে, তোমাদের সিইটিপিটা বিশ্বমানের হয়নি।</p> <p>চট্টগ্রামে আটটি বড় জুতার কারখানা হয়েছে, যেখানে বিদেশিদের যৌথ উদ্যোগ রয়েছে এবং বিদেশিদের নিজস্ব কারখানা আছে। কোনো প্রতিষ্ঠানই সাভারের চামড়া ব্যবহার করে না। শুধু সিইটিপি না থাকার কারণে।</p> <p>জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিসিকের শর্ত অনুযায়ী আমরা কিস্তিতে সব টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়নি। আমরা এই সিইটিপিটাকে জমির সঙ্গে না জড়ানোর অনুরোধ করছি। সিইটিপির জন্য যদি টাকা দিতে হয়, সরকার যেটা ধার্য করবে তা আমরা দেব। জমি রেজিস্ট্রি না করতে পারায় কেউ ঋণ নিতে পারছে না। সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করতে গিয়ে হাজারীবাগে যে চামড়াগুলো প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ে ছিল, সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। একেকটি প্রতিষ্ঠানের ৫০-৬০ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। সাভারে এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি। হাজারীবাগে ছিল তিন টন বয়লার, সাভারে ১৪ টন। কিন্তু গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে তিন টন বয়লারের। বলা হচ্ছে, হাজারীবাগে যতটুকু গ্যাস সংযোগ ছিল, ততটুকু দেওয়া হবে। আমরা যদি কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী চামড়া কারখানা করতে পারি তাহলে এখানে অনেক জুতার কারখানা গড়ে উঠবে। তৈরি পোশাকের মতোই জুতার কারখানায় অনেক শ্রমিকের কাজ হয়। এটাও একটি শ্রমঘন শিল্প। আমরা চীনের হাতছাড়া হওয়া বাজারটাও ধরতে পারব, যেটা ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারে চলে যাচ্ছে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-14.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>বড় ক্রেতারা চলে গেছে পরিবেশগত কারণে</strong></p> <p>টিপু সুলতান</p> <p>দেশের চামড়াশিল্পের মোট উৎপাদনের মাত্র ১০ শতাংশ ফিনিশড চামড়া রপ্তানি হয়। আমি ইউরোপের বাজারে অন্যতম বড় রপ্তানিকারক ছিলাম, আজ থেকে চার বছর আগে। গত চার বছরে আমার বেশির ভাগ বড় ক্রেতা চলে গেছে পরিবেশগত কারণে। আমরা এত বছর পর হলেও ট্যানারি মালিকরা সাভারে চলে এলাম; কিন্তু তিনটি অংশের প্লান্টের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে শুধু সিইটিপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় ক্রোম রিকভারি প্লান্ট ও ডাম্পিং ইয়ার্ড অংশ দুটি সম্পন্ন হয়নি।</p> <p>রাতের বেলা তারা ওই বর্জ্যগুলো নদীতে ফেলে দেয়। আমার পর্যবেক্ষণ হলো, যে চীনা ঠিকাদারকে এই কাজটি দেওয়া হয়েছে, তাকে দিয়ে এই কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তার ওই রকম কোনো জ্ঞান নেই। সে যে ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতি এখানে এনেছে, সেগুলো প্লান্ট চালু করার আগেই অকেজো হয়ে গেছে। তরল বর্জ্য বের করে দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু লবণের পরিমাণ অনেক বেশি। আমাদের দাবি, ইউরোপের কোনো পরামর্শক এনে পুরনো যন্ত্রপাতি ফেলে দিয়ে নতুন করে প্লান্ট করেন। এই প্লান্ট না হলে আমাদের পক্ষে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি করা সম্ভব নয়।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-15.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>চামড়াশিল্পকে স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত করতে হবে</strong></p> <p>নাজনীন আহমেদ</p> <p>সিইটিপি নিয়ে জটিলতার কারণে চামড়াপণ্য বিশ্ববাজারে বিক্রি করতে না পারলে অনেক উদ্যোক্তা মনে করতে পারে, দেশের বাজারে বিক্রি করবে। কিন্তু এতে পরিবেশ নিয়ে দুর্ভাবনা যাচ্ছে না। নদীদূষণ থেকে শুরু করে স্থানীয় বাজার থেকে যে জুতাটি কিনে আমি ব্যবহার করছি, সেটাতেও কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। অনেক নারী উদ্যোক্তা এখন জুতার ব্যবসা করছে। তাদের জুতা তৈরির ক্লাস্টার আছে অনেক।</p> <p>তারাও কিন্তু স্থানীয় বাজার থেকে চামড়া কিনে আনছে। সেখানেও কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এই গোটা শিল্পটিকে একটি আদর্শ জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। তা ছাড়া দক্ষ মানবসম্পদের দরকার আছে। আমরা যেহেতু ট্যানারি থেকে বৈচিত্র্যময় চামড়াজাত পণ্যের দিকে যেতে চাইছি, সেখানে শুধু দক্ষ কর্মী হলেই চলবে না, কিভাবে পণ্যগুলো শোকেসিং করব, সে জন্যও দক্ষ মানবসম্পদ লাগবে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছর দেশের চাহিদা মেটাতে দুই কোটি ৪০ লাখ জোড়া জুতা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এর পেছনে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আমরা কিন্তু এই অর্থটা দেশেই রাখতে পারি, যদি এই পরিমাণ জুতা আমরা স্থানীয়ভাবে তৈরি করতে পারি। সেখানেও কিন্তু চামড়া উৎপাদনের কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলো দেখতে হবে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-16.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>ট্যানারি সরায় হাজারীবাগের পরিবেশের উন্নতি হয়েছে</strong></p> <p>আফতাব আলী শেখ</p> <p>সাভার ট্যানারিপল্লীতে সিইটিপি উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়নে একে অপরকে দোষ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ট্যানারি সরে যাওয়ায় হাজারীবাগের পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। সাভার ট্যানারিপল্লীতে যত্রতত্র ময়লা ফেলে না রাখলে পরিবেশ ভালো থাকবে। এখানে সলিড ম্যাটেরিয়াল খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। নিটিং করতে ক্রোমিয়াম ব্যবহার করা হয়। এটা থ্রি স্টেজ থেকে সিক্স স্টেজে গেলে খুবই ক্ষতিকর হবে। মাটি ও পানিতে গেলে পরিবেশ দূষিত হবে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ট্যানারির সলিড ওয়েস্টকে যথাযথভাবে রাখতে হবে। তা না হলে এই বর্জ্য পানিতে মিশবে আর এলাকার মানুষের মারাত্মক ক্ষতির ধারণ হবে। ২০১৫ সালে আমি লেদার টেকনোলজির দায়িত্ব নিয়েছি। এই খাতের দক্ষ মানবশক্তি তৈরিতে জোর চেষ্টা চলছে। আমরা চাই চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের দক্ষ মানবশক্তি দিয়ে সহযোগিতা করতে। সবাই মিলে এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই তৈরি পোশাক শিল্পের মতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে যাব।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-17.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>অ্যাডিডাস এ দেশে রিটেইল ব্যবসা করতে চায়</strong></p> <p>কাজী জামিল ইসলাম</p> <p>আমি বাংলাদেশে লোটো ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা জুতাশিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমাদের একটি প্রতিষ্ঠান আছে। সম্প্রতি আমার কাছে এসেছে জার্মানির অ্যাডিডাস গ্রুপ। তারা বাংলাদেশে রিটেইল ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু এখানে কোনো কারখানা তারা করতে চায় না। প্রতিটি মানুষের দুটি পা, জুতা সবাই পরে। এত বড় একটি বাজারকে বিদেশি কম্পানিগুলোও গুরুত্ব দিচ্ছে।</p> <p>চামড়া শিল্প নগরীতে ঠিক কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে, তা আমার খুব ভালো জানা নেই। আমরা ছোটখাটো প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। আমাদের নিজেদের কারখানা আছে পুবাইলে। সম্প্রতি কাপাসিয়ায় কারখানার জন্য বেশ খানিকটা জমি কিনেছি। তবে সেটা দখল নিতে যে পরিমাণ ধকল পোহাতে হচ্ছে, মনে হচ্ছে, কেন ব্যবসা করতে এলাম? চাকরি করতাম ভালো ছিলাম। সম্প্রতি ওই জমির তারকাঁটার বেড়া কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এখানে আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাই না। একা একা যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আমি মাত্র ১৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ব্যবসা এখন অনেক বড় হয়েছে। এখন পর্যন্ত কারো কাছে সাহায্য চাইতে হয়নি। সরকারের কাছেও আমার চাওয়ার কিছু নেই। ব্যাংকের কাছেও কোনো সহযোগিতা চাই না। আমি শুধু শান্তিতে ব্যবসা করতে চাই। আমি শুধু শান্তি চাই।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-18.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>চামড়া খাতে আরো সফল উদ্যোক্তা প্রয়োজন</strong></p> <p>খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম</p> <p>আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানির একটি লক্ষ্যমাত্রার কথা শুনছি। যেটা সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বলা আছে, সেটা উল্লেখ করছে উদ্যোক্তারা। কিন্তু আমরা উদ্যোক্তাদের মুখ থেকে শুনতে চাই, তারা ১০ বা ১৫ বছর পর এই খাতকে কোথায় দেখতে চায়। আমরা অনেক ছোট ছোট সমস্যার কথা শুনে আসছি এই খাতে, বিক্ষিপ্তভাবে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সেই ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে তোলার জন্য যা যা করণীয়, সেই জায়গাগুলোতে সামগ্রিকভাবে লক্ষপাত করা দরকার।</p> <p>এই খাতের বেশির ভাগ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। সরাসরি প্রথম পক্ষের ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারছি না। সুতরাং এখানে সেই মানটি গড়ে তুলতে হবে, যাতে এখানে বড় বড় ব্র্যান্ড আসে, বড় বড় রিটেইলার আসে। আমরা হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোর অনেক সমালোচনা করেছি। সাভারে স্থানান্তরের কথা বলেছি। ট্যানারি মালিকরা বলেছে, সাভারে সব কিছু প্রস্তুত হয়নি। তখনো আমরা ট্যানারি মালিকদের বলেছি, আপনারা আগে সেখানে যান, তারপর সরকারকে চাপ দিন। এখন আমরা বলতে চাই, এখন দায় সরকারের। এখন কেন সব কিছু প্রস্তুত না? কেন এখন শুনতে হচ্ছে যে কঠিন বর্জ্য অপসারণের কোনো ব্যবস্থা ওই প্রকল্পের মধ্যে ছিল না। সর্বশেষ কথাটি হলো, ২০২৪ সালের পর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে। তখন আমরা পরিবেশসম্মতভাবে পণ্য উৎপাদন করছি কি না, তা জানতে চাইবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ক্রেতারা।</p> <p>অথচ এই সময়ে চামড়াশিল্পের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় যাওয়ার কথা বাংলাদেশের। কেননা চীনের থেকে বাজার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-19.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /><strong>টাকা দিয়েও রেজিস্ট্রেশন মেলেনি চামড়া শিল্প নগরীতে</strong></p> <p>শাহীন আহমেদ</p> <p>হাজারীবাগ থেকে সাভারে এই শিল্প সরানো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। জাতির কাছে একটা ভুল ধারণা রয়েছে, আদেশের পরও আমরা এক যুগ এখান থেকে সরে যাইনি। কিন্তু আমরা সরে যেতে চাই বলেই ২০০৩ সালে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করি। চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগও করেছি।</p> <p>এরই মধ্যে ১০৫টি ট্যানারি সাভারে চলে গেছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে চলে যাবে। সাভারে গেলেও অনেকে কাজ শুরু করতে পারেনি। সিইটিপি নিয়ে আমাদের সমস্যা। চীনা কম্পানির এক হাজার ৭০ কোটি টাকার প্রকল্পে কাজ হচ্ছে কি না, তা মূল্যায়ন করার সময় হয়েছে। সরকারের এটা করার কথা। কিন্তু এখন আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>ফুটওয়্যারে প্রবৃদ্ধি থাকলেও চামড়ায় প্রবৃদ্ধি কমছে। প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমেছে কাজ শুরু করতে না পারায়। সিইটিপির বর্জ্য নদীতে ও উন্মুক্ত স্থানে ফেলায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ ঠিক না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারাও আসছে না। তারা আস্থা পাচ্ছে না। সিইটিপি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাই উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ফেলছে। সিইটিপি সমস্যার সমাধান করতে না পারলে মুখ থুবড়ে পড়বে এই শিল্প। আমাদের দেশীয় র ম্যাটেরিয়ালস ভালো হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা কিনতে আগ্রহী। তবে সেটা বিক্রি না করে আমরাই কাজে লাগাতে পারি। জমির টাকা দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা এখনো রেজিস্ট্রেশন পায়নি। আর জমি মর্টগেজ দিতে না পারায় ব্যাংকঋণও পাওয়া যাচ্ছে না। অতীতের দাম ধরেই ট্যানারি মালিকদের জমি দ্রুতই বুঝিয়ে দিতে হবে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৪০ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।</p> <p> </p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-20.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /></strong><strong>চামড়াশিল্পের পথনকশা অনুযায়ী এগোতে হবে</strong></p> <p>কাজী রওশন আরা</p> <p>চামড়াশিল্পের জন্য একটি পথনকশা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এটা করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই শিল্পকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন, তার পরপরই এই পথনকশা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কমপ্লায়েন্সের অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রানা প্লাজা ধসের অনেক আগে থেকেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এর থেকে আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির প্রতিষ্ঠানও বাদ যায় না। এ জন্য অনেক সময় শুনতে হয়, আমরা সরকারি অ্যাসোসিয়েশনের থেকেও মন্দ অ্যাসোসিয়েশন। বিদেশি ক্রেতা আনার জন্যও আমরা কাজ করছি। আমরা সম্প্রতি ব্রিজ শো নামে একটি প্রদর্শনী করি, যেখানে ৫০টি ক্রেতা ও ১০০টি দেশ অংশ নিয়েছিল। এ ছাড়া কারো সাহায্য ছাড়াই আমরা একটি মিনি ফায়ার ব্রিগেড করব।</p> <p> </p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-21.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /></strong><strong>চামড়াজাত পণ্যের মান নির্ধারণে সংস্থা নেই</strong></p> <p>মোহাম্মদ ইজাবুল হক</p> <p>লেদার ও লেদারপণ্য নিয়ে আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক মানের কোনো নীতিমালা বা অ্যাসেসমেন্ট নেই। এটা না থাকায় আমরা বলতেও পারছি না কোন কোন জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। সরকার ও বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা মিলে একটি যথাযথ নীতিমালা তৈরি করতে হবে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়া খাতের অবদান ০.৫ শতাংশ। আর বৈশ্বিকভাবে উৎপাদিত চামড়ায় আমাদের অংশগ্রহণ মাত্র ২.৫ শতাংশ (আমদানীকৃত চামড়াসহ)। এ জন্য একটা লাইফ সাইকল অ্যাসেসমেন্ট (এলসিএ) ডাটা তৈরি করা প্রয়োজন। এটা হলো একটি গরু লালন-পালন থেকে শুরু করে চামড়া সংগ্রহ, পণ্য তৈরি ও লেদারের ডাম্বিং পর্যন্ত অ্যাসেসমেন্ট। এটা বাংলাদেশে কখনো হয়নি। এটা করতে পারলে নীতিমালা বা পলিসি তৈরি করতে সহায়ক হবে। এই পলিসি থেকেই একটি স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করা যাবে। দেশে চামড়া খাতের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নেই। তাই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না। ইউরোপ, চীন ও জাপানের চামড়া নিয়ে ইকো-লেবেলিং আছে। সিইটিপি সমস্যার সমাধান অতি দ্রুত প্রয়োজন। প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষের কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এটি করাতে হবে। তা না হলে চামড়াশিল্পে যেকোনো সময় বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।</p> <p> </p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-22.jpg" style="float:left; height:190px; margin-left:12px; margin-right:12px; width:150px" /></strong><strong>সাভারে একটি ডাম্পিং ইয়ার্ড দরকার</strong></p> <p>আতিকুল ইসলাম</p> <p>অনেকেই সমস্যার কথা বলেছেন। করণীয় কী, আমি সে বিষয়ে দুটি কথা বলতে চাই। সিইটিপি হওয়ার পর সাভারে একটি ডাম্পিং ইয়ার্ড দরকার। ওখান থেকে যেসব বর্জ্য বের হবে, সেগুলো রাখার কোনো জায়গা নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় বিষয়। কঠিন বর্জ্য চলে আসছে, সেটার একটা স্ল্যাপ দরকার। ট্যানারিতে ব্যবহার করা যায় এমন পানি দরকার। আমাদের ফুটওয়্যার এবং সাভারে একটি ট্যানারি ইউনিট আছে। আমাদের ইটিপি আছে, যেটা এইচডাব্লিউবি গোল্ড রেটেড সার্টিফায়েড। এটা করতে গিয়ে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়েছি, এর সবই আমরা অতিক্রম করেছি। সব কিছুই করা সম্ভব, যদি সরকার ও উদ্যোক্তা—দুই পক্ষই এগিয়ে আসে।</p> <p> </p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/Print- 2018/02 February/20-02-2018/Gooltable/kalerkantho-2018-02-20-P-24.jpg" style="height:463px; width:800px" /></p>