রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির শোক কাটতে না কাটতেই এবার আগুনে পুড়ল গুলশান ১ নম্বরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটের কাঁচাবাজার। গতকাল শনিবার সকালের এ অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর আগেও একবার এই বাজারে আগুন লেগেছিল।
বনানীর পর গুলশানে আগুন
- আবার পুড়ল ডিএনসিসির কাঁচাবাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে বাজারের ১৮৮টি দোকানের সব পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আগুনে ডিএনসিসি কাঁচাবাজারের সামনের পাঁচতলা গুলশান শপিং সেন্টারের তিনটি দোকানের আংশিক পুড়ে গেছে।
একই দিন বিকেলে গুলশান ২ নম্বরে ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স ভবনের পাঁচতলায় আগুন লাগে। তবে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারায় অন্তত ৭০ জন। আর গত বৃহস্পতিবার বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে এখন পর্যন্ত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছে।
গুলশানে ডিএনসিসির কাঁচাবাজারে আগুন : গতকাল ভোরের দিকে এ কাঁচাবাজারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।
ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
এর আগে ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি ডিএনসিসির এই মার্কেটে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেন, তখনো অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছিল না। এখনো অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা নেই।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী মতিউর রহমান বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মার্কেটে আগুন দেখতে পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ অফিস ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। তাঁর ধারণা, পানের দোকান বা বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত।
পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও এগিয়ে আসেন। সকাল ৯টার মধ্যে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এরপর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক এনায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগুনে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম পুড়লেও কেউ মারা যায়নি।
তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও কিছু অংশ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন ব্যবসায়ীরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পুুরোপুরি নিভিয়ে ফেলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ আহজারি করছিলেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন কেউ কেউ। তাঁরা বলছিলেন, আগেরবারের আগুনে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ধারদেনা করেছিলেন। অনেক কষ্টে আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছেন; কিন্তু দুই বছরের মধ্যে আবার আগুন লেগে তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেন। আগুনে কারো কারো এক থেকে দেড় কোটি টাকার মাল পুড়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন।
এ সময় তাঁদের কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেন, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাঁরা বিশদ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
ডিএনসিসি মার্কেটের দোতলা ভবনের পূর্ব পাশ ঘেঁষে লোহার কাঠামোর ওপর টিন আর রড দিয়ে তৈরি কাঁচাবাজারটি।
ডিএনসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এস এম তালাল রিজভী বলেন, মাছ, মাংসের দোকান ছাড়াও আমদানি করা খাদ্যপণ্য, প্রসাধনী, হার্ডওয়্যার, বিভিন্ন ধরনের খাবার ও প্লাস্টিকের খেলনার অনেক দোকান ছিল। সব মিলিয়ে ১৮৮টির মতো দোকান ছিল। সবই পুড়ে গেছে। তবে পাশের দোতলা মার্কেটটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
তালাল বলেন, পুনর্বাসনের জন্য সরকারের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। দুই বছর আগে অগ্নিকাণ্ডের পর তেমন সহায়তা পাননি তাঁরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যা বললেন : ফাহিম জেনারেল স্টোর নামের দোকানের মালিক শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এই মার্কেটে তাঁর চারটি দোকানে দেড় কোটি টাকার মাল ছিল। সবই পুড়ে গেছে। আগেরবারের আগুনে তাঁর দুই কোটি টাকার মাল পুড়ে গিয়েছিল।
রাহাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ভোরে খবর পেয়ে দোকানে এসে দেখেন আগুন জলছে। তখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। ঘড়ি, বেল্ট, ব্যাটারিসহ তাঁর দোকানের প্রায় ১২ লাখ টাকার মাল পুড়ে গেছে বলে তিনি দাবি করেন।
আমিনুল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী দাবি করেন, আগুনে তাঁর দোকানের ১০ লাখ টাকার মাল পুড়েছে। রিপন নামের একজন বলেন, তিনি পাইকারি মসলার ব্যবসা করতেন। দোকানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মসলা ছিল। সৈয়দা রাবেয়া সুলতানা নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, তাঁর পাঁচটি দোকান ছিল। ১২ লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন। আগুনে তাঁর সবই পুড়ে গেছে।
আগুনে বাজারের ২২টি মাছের দোকান পুড়ে গেছে। এই দোকানগুলোতে ডিপ ফ্রিজ ছিল ১৬টি। এসব ফ্রিজে সংরক্ষিত ছিল সামুদ্রিক মাছ।
মাছ ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁর প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ আগুনে পুড়েছে। মতিউর রহমান নামের আরেক ব্যবসায়ী দাবি করেন, আগুনে তাঁর আট লাখ টাকার মাছ পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রতিমন্ত্রী : ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচাবাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আর শ্রমিকদের ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মানবিক দিক বিবেচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
ঘটনাস্থলে মেয়র : অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই মার্কেটে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ঘটনার পর অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে তিন থেকে চারবার মার্কেট কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ গুলশান কাঁচাবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মার্কেটটি ভেঙে আন্তর্জাতিক মানের শপিং মল করার কথা ছিল। যেকোনো কারণে এটা হয়নি। কিন্তু এখন জনগণের স্বার্থে যেকোনো মূল্যে এটাকে ভেঙে মার্কেট তৈরি করতে হবে।’ এর আগে তিনি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের সান্ত্বনা দেন।
তদন্ত কমিটি : সাফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক শামীম হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স ভবনে আগুন : বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ভবন ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স ভবনে আগুন লাগে। টিউবলাইট থেকে আগুন লেগেছিল বলে ভবন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যাওয়ার আগেই আগুন নিভে যায়। আগুনে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ধানমণ্ডিতে ভবনে আগুন, ছড়ায় ভুয়া খবরও
গতকাল রাতে ধানমণ্ডির ১১/এ নম্বর সড়কের ৬৩ নম্বর বাড়িতে আরেকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন লাগার কিছু সময় পরই তা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের টেলিফোন অপারেটর ফায়ারম্যান মো. রোমান জানান, পাঁচতলা ভবনটির তৃতীয় তলার আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়। ফায়ারম্যানরা যাওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন সেটি নিভিয়ে ফেলে।
ধানমণ্ডি থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলে, ‘সিগারেট খাওয়ার পর তা ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হলে সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই। তবে অগ্নিনির্বাপক (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) দিয়ে বাড়ির বাসিন্দারাই আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস-কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা জানান, রাতে প্রায় একই সময় ধানমণ্ডির ৫ নম্বর রোডের ২২ নম্বর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ভুয়া খবর দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, একজন ডাক্তার মহিলা, পান্থপথে উনার অফিস থেকে আমাদের ফোন করে জানান, তার বাড়িতে আগুন লেগেছে। উনার গাড়ির ড্রাইভার ফোন করে নাকি উনাকে এটা জানিয়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিক সেখানে যাই। কিন্তু ওই বাসার লোকজন আগুন লাগার বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি।
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।