<p>রাজধানী ঢাকার অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। বাংলায় সাইনবোর্ড লেখা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের হলেও তা কার্যকরে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। চলতি বছরের শুরুতে নামমাত্র একটি অভিযান পরিচালনা করে দায়িত্ব সেরেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বাংলার পরিবর্তে অন্য ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও (ডিএসসিসি)।</p> <p>সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের রায় এবং বেশ কিছু সরকারি আদেশ ও পরিপত্র জারি করে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। একই সঙ্গে সব প্রতিষ্ঠানের (বিদেশি দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা ও এসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া) নামফলক, সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ও ব্যানার বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করে তা নিশ্চিত করতে দুই সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করার সময় বাংলায় সাইনবোর্ড লিখতে বলে আসছে দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না। আইন মানতে ব্যবসায়ীদের বাধ্য করতে তেমন তৎপরতাও চোখে পড়ে না।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মতিঝিল, পল্টন, ধানমণ্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝুলছে ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড। একই দৃশ্য দেখা গেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গুলশান, বনানী ও উত্তরা এলাকায়। রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে আসবাবপত্রের দোকানসহ বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে ঝুলছে ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড।</p> <p>সূত্র মতে, সাইনবোর্ডে বাংলা লেখার বিষয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা রয়েছে। দুই সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ও ইস্যু করার সময় বাংলায় সাইনবোর্ড লিখতে কাগজপত্রে সিল দেয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানছে না।</p> <p>ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড সরাতে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি বনানী ও গুলশান এলাকায় অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি সাইনবোর্ড অপসারণ করা হয়। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। কিন্তু এরপর আর কোনো এলাকায় অভিযান চালায়নি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। অন্য বছরগুলোতে ফেব্রুয়ারি মাসে ইংরেজি সাইনবোর্ড অপসারণে উত্তর সিটি করপোরেশনকে তৎপর দেখা গেলেও এবার এখনো দেখা যায়নি।</p> <p>ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বনানী ও গুলশান এলাকায় অভিযানের পর কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। তবে গুলশান, বনানীর বাইরে অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। চলতি মাসে আরেকটি অভিযান পরিচালনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে গুলশান, বনানীর বাইরেও অভিযান পরিচালনা করে ইংরেজি সাইনবোর্ড অপসারণ করা হবে।’</p> <p>ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সর্বস্তরে বাংলা ভাষা নিশ্চিত করতে অভিযান চালানো উচিত। তবে অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ইংরেজি বা অন্য ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড অপসারণে কাজ করা হয়ে ওঠে না। বিষয়টি আমার নজরে আনলেন। সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে অভিযান চালাব।’</p>