ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

সুস্থ জীবনে ফিরতে চাইলে সুযোগ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সুস্থ জীবনে ফিরতে চাইলে সুযোগ দিন

দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেছেন, যারা সুস্থ জীবনে ফিরতে চায়, তাদের জন্য সেই সুযোগও সৃষ্টি করতে হবে।

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর পরিদর্শনের অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি মন্ত্রণালয় ও  মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আনসারসহ বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতি দেশে কালব্যাধির মতো ছেয়ে আছে। এর গোড়াপত্তন পঁচাত্তরের পরের শক্তি করেছে। জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে ওই সময়কার সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল। সমাজকে এই কালব্যাধি থেকে মুক্ত করতে হবে।

সেই লক্ষ্য অর্জনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবাইকে কাজ করতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতির মতো কালব্যাধি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে একটা মাদকাসক্ত আছে, সে পরিবারের যে কী কষ্ট, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। সে কারণে অভিযানটাকে আমাদের আরো ব্যাপকভাবে পরিচালনা করে যেতে হবে।

এ ক্ষেত্রে মাদকাসক্তির খারাপ দিকটি মানুষের সামনে তুলে ধরে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং সমাজের সব স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে প্রচার চালানোর ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। অপরাধীরা কেন অপরাধে সম্পৃক্ত হয়, সেটা খুঁজে বের করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র তাদের (অপরাধী) বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলেই যে তারা ভালো হয়ে যাবে তা না; বরং তাদেরকে সমাজের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারাটাও কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

সম্প্রতি আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সুন্দরবনের জল ও বনদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা এবং সরকারের তরফ থেকে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করার কথাও এ প্রসঙ্গে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে অপরাধী আবার অপরাধের জীবনে ফিরে যায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযান, সেটা অব্যাহত থাকতে হবে। সাথে সাথে মাদকমুক্ত করা, মাদক কারা আনে, পাচারকারী, কারা সেবন করে—এখানে কিন্তু বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।

যারা সুস্থভাবে সমাজে ফিরে আসতে চাইবে, সংসারে ফিরে আসতে চাইবে, তাদেরকেও সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।’

মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তাদের অধিক নজর দেওয়ার জন্য তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মাদক শনাক্তকরণ মেশিন কেনার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া বেসরকারি মাদক নিরাময়কেন্দ্রগুলো কিভাবে চলছে তা নজরদারি এবং নিরাময়কেন্দ্রের সেবা বিস্তৃত করার পরামর্শ দেন। তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দরকার।’ পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা সৃষ্টির নির্দেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ কী কী কাজ করেছে সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তাঁর বক্তব্যের পর একে একে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা বক্তব্য দেন।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, আনসার বাহিনীর প্রধান প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান আনসার বাহিনী নামটি পরিবর্তন করার বিষয়ে। তিনি বলেন, নামটির কারণে বিদেশে বাহিনীটির নাম নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। আনসার আল ইসলাম, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। তাঁর বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার বাহিনী বহু পুরনো। নামটি পরিবর্তন করতে হলে মাঠপর্যায়ের আনসার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা রাজি হলে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

বৈঠকে পুলিশের চিকিৎসাসেবা নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন পুলিশ বাহিনীতে একটি মেডিক্যাল ইউনিট করার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ফায়ারম্যান নামে অভিহিত করা হয়। এই নামটি পরিবর্তন করে অন্য কোনো নাম দেওয়া যায় কি না সেটি নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সারা দেশে কারাগারগুলোতে ৭৫ হাজারের বেশি বন্দির জন্য চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র আটজন। কারাগারে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়নোর বিষয়ে মত দেন প্রধানমন্ত্রী।

সড়কে পথচারী ও চালকদের অসচেতনতা এবং অনিয়মতান্ত্রিক চলাচলে দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না, কেন আমাদের দেশের মানুষ নিজের নিরাপত্তাটা বোঝে না। ট্রাফিক জ্যাম একটা বিরাট সমস্যা, এতে কোনো সন্দেহ নাই। এখানে আমি যেটা লক্ষ করি, ট্রাফিক জ্যামের জন্য বা দুর্ঘটনার জন্য যারা আমাদের রাস্তায় চলাচল করে তারাও যেমন দায়ী, চালকরাও দায়ী। ফুট ওভারব্রিজ করা হয়েছে, ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে না গিয়ে কোথায় একটু ফাঁকফোকর সেখান দিয়ে যাওয়া।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ছবি দেখে আমি ঘাবড়ে গেলাম। রাস্তায় বেড়া দেওয়া, সেখানে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে। খোদা না করুক যদি ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেত তাহলে ওই বাচ্চা কিন্তু ওখানে মারা যাবে। তখন কাকে দোষ দেবে। অথবা গাড়ি আসছে, দিল মাঝখান দিয়ে দৌড়।’ তিনি আরো বলেন, ‘গাড়ি যাচ্ছে, মানুষ যাচ্ছে একসঙ্গে। তারপর দুর্ঘটনা হলে গাড়ি ভাঙো, ড্রাইভারকে মারো। ড্রাইভারকে মারতে মারতে খুনই করে ফেলে দেয়। সে জন্য ড্রাইভার থামেও না। একজন পড়ে গেল, তার পরও গাড়ি চালিয়ে চলে যাওয়া। এই বিষয়গুলো আমাদের ভালোভাবে দেখা উচিত।’

ট্রাফিক জ্যামকে বিরাট সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধামন্ত্রী বলেন, ‘সড়কে যানজট কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের অর্থনীতি যত ভালো হচ্ছে, মানুষের সুযোগ-সুবিধাও বাড়ছে। গাড়ি কেনা ও মানুষের চলাচলও বাড়ছে। ট্রাফিক জ্যাম একটা বিরাট সমস্যা, এতে আমাদের কোনো সন্দেহ নাই। এ সমস্যার সমাধানে আরো আন্ডারপাস ও ফুট ওভারব্রিজ করতে হবে। সাধারণ মানুষ ও চালকদের সচেতন হতে হবে।’

সকাল ১০টা ৫ মিনিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে স্বাগত জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরে তিনি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বৈঠক করেন। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান কর্মকর্তারা। দুপুর সোয়া ১টার দিকে মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থার মর্যাদা রাখবে : এদিকে পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণ আওযামী লীগের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন তার মর্যাদা রক্ষা করা হবে।’ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি মর্যাদা দেখিয়ে অত্যন্ত ধৈর্য ও সংযমের সঙ্গে চলতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে ব্যাপক উন্নয়নকাজ চলছে, এগুলো শেষ করতে হবে। পাশাপাশি নতুন নতুন উন্নয়নকাজ শুরু করতে হবে।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের নেতিবাচক মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া আসন থেকে তাঁকে পুনরায় নির্বাচিত করায় সেখানকার জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ব্যর্থ মেহেদী হাসান মিরাজ

শেয়ার
ব্যর্থ মেহেদী হাসান মিরাজ
পাকিস্তান সিরিজে প্রথমবার একাদশে সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ মেহেদী হাসান মিরাজ। গতকাল ৮ বলে ১০ রান করে ফিরে যান তিনি। তাঁর আউটের সঙ্গে দলের জয়ের সম্ভাবনাও ফিকে হয়ে যায়। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে ৭৪ রানে। ছবি : মীর ফরিদ
মন্তব্য

বেশি দামে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বেশি দামে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী করার ইঙ্গিত দিয়ে নিলামের মাধ্যমে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার দিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। তাঁর ভাষায়, আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজন হলে ডলার কিনব, আবার প্রয়োজন হলে বিক্রিও করব।

এই নীতির আলোকে এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু রাখলেও পরিস্থিতি অনুযায়ী নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনার মতো কৌশল গ্রহণ করছে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন বাজারে আপওয়ার্ড সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে চাহিদা-জোগানের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। এতে করে ডলারের রেট একদিকে পুরোপুরি বাজারের ওপর নির্ভরশীল থাকছে, অন্যদিকে প্রয়োজন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত উপস্থিতিও বজায় থাকছে। এই কৌশল মুদ্রাবাজারে অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ এবং আইএমএফের শর্ত পূরণ উভয় উদ্দেশেই সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী করার ইঙ্গিত দিয়ে নিলামের মাধ্যমে আরো ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার কিনেছে। গত ২৩ জুলাই এই নিলামে কাট-অফ রেট নির্ধারণ করা হয় ১২১.৯৫ টাকা, যা আগের তুলনায় ০.৪৫ টাকা বেশি। এর মাধ্যমে মাত্র আট দিনের ব্যবধানে নিলামে ডলারের রেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের দর দেখে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সায় এক কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। গভর্নর স্যার অনেকবার বলেছেন, প্রয়োজন হলে মার্কেট থেকে ডলার কেনা হবে। আবার চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশলগত পদক্ষেপ। এই নিলামে ডলারের কাট-অফ রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২১.৯৫ টাকা।

এর আগে ১৩ ও ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত নিলামে ১২১.৫০ টাকা রেটে যথাক্রমে ১৭৩ ও ৩১৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছিল। সব মিলিয়ে চলমান নিলাম প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।

ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ ও বাজারে প্রতিক্রিয়া : শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানায়। তবে এবার আগের মতো অনেক ব্যাংক আগ্রহ দেখায়নি। কারণ অনেক ব্যাংক ধারণা করছে, সামনে ডলারের দাম আরো বাড়বে। তাই তারা অপেক্ষা করছে। চড়া দর সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, বাজারে প্রত্যাশা কিভাবে গড়ে উঠছে।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ মনে করেন, এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলো চাচ্ছে, যে ডলার রয়েছে সামনে সেটা দিয়েই দায় পরিশোধ করবে। তা ছাড়া চলতি মাসেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। যে কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংক ডলার বিক্রি করতে তেমন আগ্রহী ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মারুফ বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে যা উদ্বৃত্ত ডলার ছিল তা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়েছে। এটা দিয়ে বোঝায় যে ব্যাংকের কাছে যে পরিমাণ উদ্বৃত্ত ডলার ছিল তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ে গেছে এবং যে পরিমাণ তারল্য রয়েছে, আসলে এত দরকার নেই।

বাজার পরিস্থিতি ও এলসির চাপ : পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, সম্প্রতি ডলারের বাজার কিছুটা টাইট। কারণ ব্যাংকগুলো আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ বাড়াচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে ডলারের প্রবাহ বাড়লে তারল্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, ডলারের বাজার স্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করে। সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। আগের অস্থিরতা অনেকটাই কেটে গেছে, তবে আরো কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা দরকার।

স্পট ও আন্ত ব্যাংক বিনিময় হার : বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ জুলাই স্পট বিনিময় হার ছিল ১২১.৯৪ টাকা। আন্ত ব্যাংক বাজারে ডলার লেনদেন হয় ১২১.৬০ থেকে ১২২.০২ টাকার মধ্যে। শীর্ষস্থানীয় আরেক ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, বুধবার আন্ত ব্যাংক বাজারেই ডলারের দাম ১২২ টাকা ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আপওয়ার্ড সিগন্যালের ফলে আগামীকাল এটি আরো বাড়তে পারে।

আইএমএফের শর্তে বাজারভিত্তিক নীতি : বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী এক কর্মকর্তা জানান, আইএমএফের ঋণচুক্তির আওতায় এখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি হস্তক্ষেপ করে নির্দিষ্ট রেটে ডলার কেনে না। মে মাস থেকে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হওয়ায় এখন নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা হয়। এতে করে ডলারের মূল্য নির্ধারণে বাজার প্রভাবশালী ভূমিকা রাখে।

তিনি বলেন, আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেরা রেট নির্ধারণ করত। এখন মার্কেট রেটেই লেনদেন হচ্ছে। এই পদ্ধতিই দীর্ঘ মেয়াদে বাজারকে আরো স্বচ্ছ করবে।

মন্তব্য
ফিরে দেখা ২৫ জুলাই ’২৪

মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব জাতিসংঘের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব জাতিসংঘের

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় জাতিসংঘ। ২০২৪ সালের ২৫ জুলাই জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে ভারতের নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে শিগগিরই শান্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়েছে বিএনপিও।

এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি করেন। অন্যদিকে এদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন শেষে বলেন, আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি।

এদিকে এদিনই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে প্রবাসী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে বিক্ষোভ করে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য চায় সরকার। বিশ্বের নানা দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস, হাইকমিশন এবং অনাবাসিক মিশনগুলোর মাধ্যমে হোস্ট গভর্নমেন্টের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের জরুরি নন, এমন কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা খোলা ছিল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস। রাজধানীতে দূরপাল্লার গণপরিবহনে যাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। কারফিউ বলবৎ থাকায় রাজধানীতে ছিল কঠোর সেনা টহল।

তবে শিথিল সময়ে অফিস-আদালত, বাজারঘাটে ফেরে কর্মচাঞ্চল্য। অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থায় ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। ক্রমে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কারফিউ শিথিলের সময়সীমা দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) তথ্য অনুযায়ী, এদিন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর কেবল কোটা সংস্কারের ইস্যুতে সীমাবদ্ধ নেই। তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপন জারির সঙ্গেই এই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটবে না।

ছাত্র-নাগরিক হত্যা ও গুম-খুনের বিচার, রাষ্ট্রীয় ক্ষয়ক্ষতির বিচার, মামলা প্রত্যাহার, ডাকসু সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তি, আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং সব ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী রাজনীতির উত্খাত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিচারের দাবিতে দফাভিত্তিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে ২৩ জুলাই (২০২৪) প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আংশিক বিজয় অর্জিত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানায় সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চ। বিবৃতিতে ৯১ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষর করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আটটি বার্তা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে হতাহতদের তালিকা তৈরি, হত্যা ও হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের সহযোগিতা, রংপুরের আবু সাঈদসহ নিহত সবার কবর জিয়ারত, রুহের মাগফিরাত কামনা এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো।

২৫ জুলাই সারা দেশে ইন্টারনেট চালু, কারফিউ তুলে দেওয়াসহ জরুরি চার দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়। তবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে না পারায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেনি তারা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে আরেক অংশের একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এর সমন্বয়ক হান্নান মাসুদের বরাত দিয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরদিন ২৬ জুলাই বাদ জুমা সারা দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা ও শোক মিছিল করা হবে।

নিহত ১৭০ জনের বেশি, আহত হাজারের বেশি জাতিসংঘ : জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হালনাগাদ তথ্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ১৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত এবং হাজারের বেশি আহত হয়েছে। তাদের অনেকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণদের প্রতিবাদ কর্মসূচির পর অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। অন্তত দুজন সাংবাদিক নিহত এবং আরো অনেকের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কয়েক শ লোকের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিনই এক যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্ণ জবাবদিহির আহবান জানান জাতিসংঘের ১৩ জন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ। তাঁরা বাংলাদেশে সহিংস দমন-পীড়নের অভিযোগ এনে তা বন্ধ করার আহবান জানান।

ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, বিচার চাইলেন জনগণের কাছে : এদিন সকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন ঘুরে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তাঁকে চোখের পানি মুছতেও দেখা যায়। পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণকে তাদের (দেশব্যাপী তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের) বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।

মামলা ও গ্রেপ্তার : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র দিয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলো জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে এদিনও অভিযান অব্যাহত ছিল। এদিন বিকেলে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মন্তব্য
প্রসঙ্গ শুল্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৯ জুলাই চূড়ান্ত আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৯ জুলাই চূড়ান্ত আলোচনা
সেখ বশির উদ্দিন

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান বাণিজ্য আলোচনাকারী সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) বাংলাদেশকে আগামী ২৯ জুলাই তৃতীয় ও চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সংবাদ সংস্থা বাসসকে এই তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, এর আগে বাংলাদেশ ২২ জুলাই ইউএসটিআরের কাছে নিজেদের অবস্থানপত্র পাঠায় এবং ২৬ জুলাই চূড়ান্ত দফার আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয়।

বাণিজ্যসচিব জানান, ইউএসটিআর ২৯ জুলাই দিন ধার্য করেছে।

ওই দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে তাদের অফিসে আলোচনা শুরু হবে। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। সাক্ষাতে আলোচনা হলে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ২৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবে। তবে আলোচনা ভার্চুয়াল হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই দফায় বেসরকারি খাতের কয়েকজন রপ্তানিকারক বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকতে পারেন। তবে তাঁরা সরকারি পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেবেন না।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য বিদ্যমান ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার হ্রাস করবে। কারণ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের জন্য ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার জন্য ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের জন্য ২০ শতাংশ এবং ফিলিপাইনের জন্য ১৯ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে।

ইউএসটিআরের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা এখন পর্যন্ত ভালোভাবে এগিয়েছে, তাই বাংলাদেশও উল্লেখযোগ্য শুল্কছাড় পেতে পারে।

বাংলাদেশ এরই মধ্যে মার্কিন পণ্য, যেমনতুলা, গম, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), বিমান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য শুল্কমুক্ত আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাংলাদেশ ২০ জুলাই মার্কিন গম সরবরাহকারীদের সঙ্গে সাত লাখ টন গম আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে সাংবাদিকরা শুল্ক আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে চান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে, এমন কোনো কাজ করা হবে না।

আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের একটি অনলাইন মিটিং রয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করব। এই নেগোসিয়েশনের জন্য সরকার লবিইস্ট নিয়োগ করেনি বলেও জানান তিনি।

শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রচারণা নাকচ করে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে আমরা কেন এমন কাজ করব? তাহলে তো আন্ত মন্ত্রণালয় মিটিংয়ের দরকার হয় না। কিছু জিনিস মেনে নিয়ে কাজটা করে ফেললেই তো হয়ে যায়। সম্পূরক শুল্কের মতো আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয়গুলোতে লবিইস্ট নিয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায় না।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ