<p>জাতিসংঘ নতুন এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। ধর্ষণসহ অন্যান্য যৌন সহিংসতার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ। নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের তৈরি করা একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি এ তথ্য জানায়। তবে এ কালো তালিকাভুক্তির ফলে কী হবে তা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।</p> <p>জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বর্বর যৌন সহিংসতার শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার তথ্য রয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী স্থানীয় মিলিশিয়াদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানোর সময় ওই যৌন সহিংসতা ঘটিয়েছে।</p> <p>এদিকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের দায়ে মিয়ানমারের বিচার করার এখতিয়ার চেয়ে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি  আদালতে (আইসিসি) একজন প্রসিকিউটরের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তর। তাদের দাবি, মিয়ানমারের বিচার করার কোনো এখতিয়ার আইসিসির নেই।</p> <p>নিরাপত্তা পরিষদের জন্য প্রস্তুত করা প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে মিয়ানমার বাহিনীর যৌন সহিংসতার কৌশল তথ্য তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘ব্যাপক হুমকি-ধমকি ও যৌন সহিংসতা ছিল তাদের মূল কৌশল। এর মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে অপমান, ভীতসন্ত্রস্ত ও সম্মিলিতভাবে শাস্তি দিতে চেয়েছে। এটি ছিল তাদের বাসভূমি থেকে তাড়ানো এবং ফেরা ঠেকানোর কৌশল।’</p> <p>জাতিসংঘ মহাসচিব ওই প্রতিবেদনে লিখেছেন, রোহিঙ্গা শিশুদের ওই নৃগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ হিসেবে এবং তাদের নৃগোষ্ঠীকে রক্ষা ও প্রসারের বাহন হিসেবে অন্তঃসত্ত্বা রোহিঙ্গা নারীদের দেখেছে মিয়ানমার বাহিনী। এ কারণে মিয়ানমার বাহিনী রোহিঙ্গা নারী বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা রোহিঙ্গা নারীদের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্মহার বেশি এবং তারা মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর জন্য হুমকি বলে যে প্রচারণা রয়েছে সেটি থেকে মিয়ানমার বাহিনীর সহিংসতার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।</p> <p>এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌন সহিংসতা প্রতিরোধবিষয়ক এই প্রতিবেদনটি নিয়ে আজ সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদনে কালো তালিকায় সরকারি, বিদ্রোহী ও উগ্রবাদী ৫১টি গোষ্ঠীর নাম রয়েছে। কঙ্গোর সামরিক বাহিনী ও পুলিশসহ ১৭টি সংস্থা, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোসহ সাতটি গোষ্ঠী, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও দক্ষিণ সুদানের সাতটি করে, মালির পাঁচটি, সোমালিয়ার চারটি, সুদানের তিনটি, ইরাক ও মিয়ানমারের একটি করে গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন দেশে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের নাম ওই তালিকায় রয়েছে।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাতে যৌন সহিংসতা চালানো বাহিনী ও গোষ্ঠীগুলো দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। বোকো হারামের যৌন সহিংসতার একটি অভিযোগেরও বিচার হয়নি।</p> <p> </p>