<p>যেকোনো আইনের ভাষার উৎকর্ষতা দেখার দায়িত্ব পেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ (বাবাকো)। কোনো মন্ত্রণালয় আইন, বিধি বা গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালার খসড়া করলেই তা প্রমিতকরণের জন্য বাবাকোতে পাঠাতে হয়। গত বছরের ১১ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাবাকোর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করে ‘ভাষার উৎকর্ষ, বিষয়গত যথার্থতা এবং সংশ্লিষ্ট অপরাপর আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও সংগতি বিধান’ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করে। এর ফলে বাবাকোর কাজের পরিধি আরো বেড়েছে।</p> <p>১৯৮১ সালে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান নাম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) অধীনে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ (বাবাকো) গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাবাকো এ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৬টি আইন, বিধি ও অধ্যাদেশ প্রমিতিকরণ করেছে। অন্য সব মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১০০ আইন বা অধ্যাদেশ প্রমিতকরণ করেছে। এখনো অনেক আইন ও বিধি ইংরেজিতে রয়েছে, যেগুলো অনুবাদের পর বাবাকোর প্রমিতকরণ করার কথা।</p> <p>এ পর্যন্ত বাবাকো থেকে প্রশাসনিক পরিভাষা, পদবি পরিভাষা, সরকারি কাজে ব্যবহারিক বাংলা ও সরকারি কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহারের নিয়ম—এই চারটি বই বের হয়েছে। এ ছাড়া সচিবালয় নির্দেশিকা ২০১৪ প্রণয়নে বাবাকো সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেছে। শিগগিরই ‘প্রসঙ্গ ব্যবহারিক বাংলা’ নামে আরো একটি বই বের হবে।</p> <p>২০১৬ সালের ১৫ মার্চ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুদ্ধ বাংলা বানান জানাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গ্রুপ তৈরি করেছে বাবাকো। শুদ্ধ বাংলা বানান এবং সঠিক বাংলা বাক্য গঠনে ফেসবুক ও টেলিফোনের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই ফেসবুক গ্রুপে যেকোনো সরকারি চাকরিজীবী যেকোনো বাংলা বানান সমস্যা, শুদ্ধ বা অশুদ্ধ রূপ, বাক্য গঠন সম্পর্কে সরাসরি পোস্ট করে সমাধান পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৯৫৬১৪৪০ এবং ৯৫৭০৬৬৪ নম্বরে টেলিফোন করে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষের বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র অনুবাদ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে এ সেবা দিচ্ছেন বাবাকোর অ্যাসাইনমেন্ট কর্মকর্তা মো. মোস্তফা।</p> <p>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার জন্যও ফেসবুক ও টেলিফোন সেবা দেওয়া উচিত। এই দায়িত্ব বাবাকো না নিলে বাংলা একাডেমির নেওয়া দরকার। কারণ কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা বানানের কারণে বা আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে আটকে যাই। তখন সমাধানের জন্য টেলিফোন যোগাযোগ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’</p> <p>এদিকে প্রতিষ্ঠার সময় বাবাকোর মোট জনবল ছিল ২৩ জন। ১৯৯৯ সালের ৩ মার্চ এটা কমিয়ে ১২ জন করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি পদ খালি ছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি পদগুলো পূরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কাজের পরিধি বাড়লেও জনবল উল্টো কমানো হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠান চলছে ঢিমেতালে।</p> <p>বাবাকোর দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালমা মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী সব জনবলই আছে। জনবল বাড়াতে হলে সাংগঠনিক কাঠামো বদলাতে হবে। আমাদের যে জনবল আছে, তা দিয়েই কাজ চলছে।</p>