<p>তৃতীয় অধ্যায়</p> <p> </p> <p>নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :</p> <p>প্রশ্ন : ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো কোথায় রাখা হয়?</p> <p>উত্তর : ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো জাতীয় সম্পদ। এসব সম্পদ যেমন সংরক্ষণ করতে হয়, তেমনি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হয়। এসব নিদর্শন সাধারণত জাদুঘরে রাখা হয়। বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর, সোনারগাঁয়ের লোকশিল্প জাদুঘরসহ দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া নানা ঐতিহাসিক নিদর্শনের সংগ্রহশালায়ও রয়েছে প্রচুর নিদর্শন। আমরা জাদুঘর ও সংগ্রহশালায় রাখা এসব নিদর্শন থেকে অতীত সভ্যতা, সামাজিক জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি।</p> <p>প্রশ্ন : ঐতিহাসিক নিদর্শন পরিদর্শনের কারণগুলো লেখো।</p> <p>উত্তর : ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো যেকোনো জাতির অতীত সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর গুরুত্ব অনেক।</p> <p>১) ঐতিহাসিক নিদর্শন থেকে আমরা অতীত সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি।</p> <p>২) কোন জাতি কতটা সমৃদ্ধ ছিল, তা ঐতিহাসিক নিদর্শন পরিদর্শনের মাধ্যমে জানা যায়।</p> <p>৩) ঐতিহাসিক নিদর্শন পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে পারে।</p> <p>৪) ঐতিহাসিক স্থানগুলোর স্থাপত্য কৌশল সম্পর্কে জানতে পারি।</p> <p>৫) পর্যটকরা এসব স্থান পরিদর্শন করে আনন্দের পাশাপাশি অনেক কিছু শিখতে পারেন।</p> <p>প্রশ্ন : ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো আমাদের সংরক্ষণ করা উচিত কেন?</p> <p>উত্তর : বাংলাদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শন আছে। যেমন—মহাস্থানগড়, উয়ারী-বটেশ্বর, পাহাড়পুর, ময়নামতি, সোনারগাঁ, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল ইত্যাদি। এই ঐতিহাসিক স্থানগুলো আমাদের সংরক্ষণ করা উচিত। কারণ—</p> <p>১) এই নিদর্শনগুলো থেকে আমরা অতীতের সংস্কৃতি ও সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পারি।</p> <p>২) এগুলো আমাদের জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ।</p> <p>৩) আমরা এসব ঐতিহ্যে গৌরব বোধ করি।</p> <p>৪) এসব স্থাপনা পরিদর্শন করে আমরা বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে পারি।</p> <p>৫) ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো পরিদর্শন করে এগুলোর স্থাপত্য কৌশল সম্পর্কে জানতে পারি।</p> <p>তাই এই নিদর্শনগুলোর প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল হব এবং এগুলো সংরক্ষণে সচেষ্ট হব।</p> <p>প্রশ্ন : পাহাড়পুর সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখো।</p> <p>উত্তর : বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন হচ্ছে পাহাড়পুর। পাহাড়পুর সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখা হলো—</p> <p>১) পাহাড়পুর রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত।</p> <p>২) এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি ৭৮১-৮২১ খ্রিস্টাব্দে পাল রাজা ধর্মপালের শাসনামলে নির্মিত হয়।</p> <p>৩) এখানে ২৪ মিটার উঁচু গড় রয়েছে, যা ‘সোমপুর মহাবিহার’ নামে পরিচিত।</p> <p>৪) এই চমৎকার বৌদ্ধ বিহারের চারপাশে ১৭৭টি গোপন কুঠুরি আছে।</p> <p>৫) এখানে মন্দির, রান্নাঘর, খাবার ঘর এবং পাকা নর্দমা আছে। এ ছাড়া এখানে জীবজন্তুর মূর্তি ও টেরাকোটা পাওয়া গেছে।</p> <p>প্রশ্ন : ময়নামতি সম্পর্কে ৫টি বাক্য  লেখো।</p> <p>উত্তর : বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান হচ্ছে ময়নামতি। অষ্টম শতকের রাজা মানিক চন্দ্রের স্ত্রী  ময়নামতীর কাহিনীও এ জায়গার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। ময়নামতি সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখা হলো—</p> <p>১) বাংলাদেশের  দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের কুমিল্লা শহরের কাছে ময়নামতি অবস্থিত।</p> <p>২) এটি বৌদ্ধ সভ্যতার অন্যতম  কেন্দ্র ছিল।</p> <p>৩) এখানে হিন্দু ও জৈন ধর্মের নিদর্শন পাওয়া গেছে।</p> <p>৪) এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিদর্শন পাওয়া গেছে।</p> <p>৫) এখানকার অন্যান্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে জীবজন্তু অঙ্কিত পোড়ামাটির ফলক, যেমন—বেজির সঙ্গে যুদ্ধরত গোখরা সাপ, আগুয়ান হাতি ইত্যাদি। এ ছাড়া এখানকার জাদুঘরে বিভিন্ন মুদ্রা ও পাথরের ফলকের নিদর্শনও আছে।</p> <p>প্রশ্ন : লালবাগ দুর্গ কোন নদীর তীরে অবস্থিত? লালবাগ দুর্গের বিশেষ  বৈশিষ্ট্য কী? লালবাগ দুর্গ সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখো।</p> <p>উত্তর : লালবাগ দুর্গ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।</p> <p>লালবাগ দুর্গের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো—এটি সম্পূর্ণ ইটের তৈরি।</p> <p>লালবাগ দুর্গ সম্পর্কে ৩টি বাক্য লেখা হলো—</p> <p>১) ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে লালবাগ কেল্লা নির্মাণ করা হয়।</p> <p>২) দুর্গের মাঝখানে খোলা জায়গায় মোগল শাসকরা তাঁবু টানিয়ে বসবাস করতেন।</p> <p>৩) দুর্গের দক্ষিণে গোপন প্রবেশপথ এবং একটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ রয়েছে।</p> <p>প্রশ্ন : ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে একটি ঐতিহাসিক স্থান অবস্থিত, যা ছিল ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ। ওই স্থানটির নাম কী? স্থানটির ইতিহাস সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখো।</p> <p>উত্তর : ওই স্থানটির নাম আহসান মঞ্জিল।</p> <p>আহসান মঞ্জিলের ইতিহাস সম্পর্কে ৪টি বাক্য লেখা হলো—</p> <p>১) আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন।</p> <p>২) মোগল আমলে বরিশালের জামালপুর পরগনার জমিদার শেখ  এনায়েত উল্লাহ এ প্রাসাদটি তৈরি করেন।</p> <p>৩) আঠারো শতকে তাঁর পুত্র শেখ মতিউল্লাহ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রাসাদটি ফরাসি বণিকদের কাছে বিক্রি করে দেন।</p> <p>৪) ১৮৩০ সালে খাজা আলিমুল্লাহ ফরাসিদের কাছ থেকে প্রাসাদটি ক্রয় করে এটিকে আবার প্রাসাদে পরিণত করেন।</p> <p> </p>