<p><strong>গণতান্ত্রিক মনোভাব</strong></p> <p><strong>ক) গণতান্ত্রিক মনোভাব কাকে বলে?</strong></p> <p><strong>উত্তর :</strong> আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন রকম কাজ করি। এসব কাজ করতে গিয়ে আমাদের অনেক সময় নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বিভিন্নজন বিভিন্ন রকম মত দিতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন মত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। আবার কারো একার মত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিলে তা সঠিক নাও হতে পারে। অন্যরাও সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতে আপত্তি করতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন ঐকমত্য। বেশির ভাগ লোকের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং সে সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে হবে। এভাবে বেশির ভাগের মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সে সিদ্ধান্তকে সম্মান করাকেই বলে গণতান্ত্রিক মনোভাব। গণতান্ত্রিক মনোভাব একটি ব্যক্তিগত ও সামাজিক গুণ। সমাজের সব সদস্যের এ গুণটি থাকা উচিত।</p> <p><strong>খ) সমাজের সদস্যদের গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হওয়া উচিত কেন?</strong></p> <p><strong>উত্তর : </strong>সমাজকে সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য এবং সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবাইকে গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হওয়া ও চর্চা করা উচিত। গণতান্ত্রিক মনোভাব একটি ব্যক্তিগত ও সামাজিক গুণ। এতে অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সবাই খুশি থাকে। সমাজের সদস্যরা পরমতসহিষ্ণু হয় এবং সহনশীল হতে শেখে। ফলে সমাজে শান্তি বিরাজ করে।</p> <p>গণতান্ত্রিক মনোভাবের ফলে সমাজে সবাই মিলেমিশে চলবে, যা সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি নিয়ে আসে। শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য গণতান্ত্রিক মনোভাব অপরিহার্য। এ জন্য আমরা বাড়ি, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ ইত্যাদি সব জায়গায় গণতান্ত্রিক আচরণ করব। এর ফলে আমাদের দেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হবে।</p> <p><strong>গ) গণতন্ত্র কিভাবে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সহায়তা করে?</strong></p> <p><strong>উত্তর :</strong> গণতন্ত্রের অর্থ জনগণের শাসন। এর মূলকথা হলো—সবার মতকে সম্মান করা এবং অধিকাংশের মত অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। গণতন্ত্রে কাউকে জোর করে কিছু করানো হয় না। অধিকাংশ ব্যক্তির মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সবাই এতে খুশি থাকে। তারা পরমতসহিষ্ণু হয় এবং সহনশীল হতে শেখে। ফলে সবাই মিলেমিশে চলতে শেখে, যা সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি নিয়ে আসে। গণতন্ত্র মানুষকে মতপ্রকাশের সুযোগ করে দেয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সবাইকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। এ জন্য আমরা বাড়ি, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ ইত্যাদি সব জায়গায় গণতান্ত্রিক আচরণ করব। এর ফলে আমাদের দেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হবে।</p> <p><strong>ঘ) বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হওয়া উচিত কেন?</strong></p> <p><strong>উত্তর :</strong> বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। গণতন্ত্র আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের জনগণ দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সবাইকে তাই গণতান্ত্রিক মনোভাবের অধিকারী হতে হবে। এ জন্য আমরা বাড়ি, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ ইত্যাদি সব জায়গায় গণতান্ত্রিক আচরণ করব। এর ফলে আমাদের দেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হবে।</p> <p><strong>ঙ) আমরা বাড়িতে কিভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারি?</strong></p> <p><strong>উত্তর : </strong>আমরা বাড়িতে নানাভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারি। এর জন্য বাড়ির বিভিন্ন কাজে আমরা গণতান্ত্রিক মনোভাব দেখাব। বাড়ির সবার মতামতকে গুরুত্ব দেব এবং সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। যেমন—</p> <p>* কোথায় এবং কিভাবে বেড়াতে যাব?</p> <p>* ঘরের কী জিনিস কিনব?</p> <p>* কিভাবে ঘর সাজাব?</p> <p>* উৎসব-অনুষ্ঠানে কী করব? ইত্যাদি।</p> <p>পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য যে মত দেবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। এভাবেই আমরা বাড়ির বেশির ভাগ সদস্যের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে বাড়িতে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারি।</p>