<p>ফুটবল খেলোয়াড়</p> <p>জসীমউদ্দীন</p> <p> </p> <p>১। শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করো এবং অর্থ লেখো।</p> <p>ক্ষত—শরীরের কাটা স্থান বা আঘাত পাওয়া স্থান।</p> <p>পটি—পট্টি, কাপড়ের লম্বা টুকরা। এটা দিয়ে শরীরের কোনো স্থান চেপে চেপে শরীরে লাগাতে হয়, মালিশ।</p> <p>ড্রিবলিং—পায়ে পায়ে বল গড়িয়ে নিয়ে কৌশলে বল কাটিয়ে নিয়ে যাওয়া।</p> <p>বজ্র—বাজ, ভীষণ শব্দ করে ঝড়ের আকাশে বিদ্যুৎ প্রকাশ পাওয়া।</p> <p>কোলাহল কল—কোলাহল হলো অনেক মানুষের শোরগোল, গোলমাল। আর ‘কল’ বলতে বোঝায় মানুষের গলার সুন্দর আওয়াজ। এখানে খেলায় সবাই একসঙ্গে গোল গোল চিত্কার করলে বেশ ভালো শোনায় বলে ‘কোলাহল কল’ বলা হয়েছে।</p> <p>মহাকলরব—কলরব শব্দের অর্থ অনেক মানুষের গলায় একসঙ্গে চেঁচামেচি, আওয়াজ। মহাকলরব অর্থ ভীষণ চিত্কার-চেঁচামেচি।</p> <p> </p> <p>২। ঘরের ভেতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্যে তৈরি করো।</p> <p>বজ্র, পটি, মালিশের, ক্ষত, মহাকলরব</p> <p> </p> <p>ক. ইমদাদ হকের শরীরে অনেক আঘাতের ক্ষত রয়েছে।</p> <p>খ. সন্ধ্যায় হাতে পটি বাঁধে সে।</p> <p>গ. খেলায় জিতে দর্শকরা মহাকলরব করে ফিরে যাচ্ছে।</p> <p>ঘ. টেবিলের ওপর মালিশের শিশিগুলো রাখা আছে।</p> <p>ঙ. বজ্র পড়ার শব্দে শিশুটির ঘুম ভেঙে গেল।</p> <p> </p> <p>৩। প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো :</p> <p>ক) প্রভাতবেলায় ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হকের বিছানা শূন্য পড়ে আছে কেন?</p> <p>উত্তর : প্রভাতবেলায় ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হক ফুটবল অনুশীলন করতে যায়। তাই তার বিছানা শূন্য পড়ে আছে।</p> <p>‘ফুটবল খেলোয়াড়’ কবিতার কবি জসীমউদদ্ীনের মেসের বন্ধু ইমদাদ হক কাজি একজন জাত খেলোয়াড়। খেলা এবং খেলায় জেতাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। নিজের অবস্থা যেমনই হোক না কেন, খেলাপাগল সে খেলবেই। তাই সারা রাত বিছানায় ছটফট করে চিত্কার করে কাঁদলেও প্রভাতবেলায় ফুটবল খেলা অনুশীলনে যাওয়ার কারণে তার বিছানা শূন্য পড়ে আছে।</p> <p> </p> <p>খ) টেবিলের ওপরে ছোট-বড় মালিশের শিশি কবিকে উপহাস করছে কেন?</p> <p>উত্তর : ইমদাদ হককে সারা রাত ছটফট ও চিত্কার করে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। তাই কবি ও তাঁর বন্ধুরা ধরে নেন যে অন্তত ছয় মাস তাঁরা ইমদাদ হককে ফুটবল টিমে বল নিয়ে দেখতে পাবেন না। কিন্তু সকালবেলা বন্ধুর খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন বিছানা শূন্য। কবির অনুমান যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্যই যেন ছোট-বড় মালিশের শিশিগুলো কবিকে উপহাস করছে।</p> <p> </p> <p>গ) কবিতায় ইমদাদ হকের খেলা ও দর্শকের আনন্দপূর্ণ নানা অভিমতের বর্ণনা নিজের ভাষায় বলো ও লেখো।</p> <p>উত্তর : ‘ফুটবল খেলোয়াড়’ কবিতার ইমদাদ হক জাত খেলোয়াড়। নিজের অবস্থা যেমনই হোক না কেন খেলা এবং খেলায় জেতাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। তাই সন্ধ্যাবেলায় খেলার মাঠে গিয়ে তার খেলার কৌশল দেখে সবাইকে অবাক হতে হয়। ইমদাদ হক বাঁ পা দিয়ে ড্রিবলিং করে ডান পা দিয়ে ঠেলা মেরে বল গোল পোস্টের দিকে ছুড়ে দেয়। তার ভাঙা হাতে-পায়ে তখন যেন আকাশের বাজ খেলা করতে থাকে, এমনই তার খেলার কৌশল। সব দর্শক খেলার আনন্দ তার জন্যই পায় বলে তাকে উৎসাহ জোগাতে আরো জোরে বল চালিয়ে বাতাসের গতিতে ছুটে গোল পোস্টের ভেতরে বল ছুড়ে দিতে বলে। ইমদাদ হক গোল দিলে চারদিক থেকে জয়ধ্বনি ওঠে। ইমদাদ হক ভাঙা পা নিয়ে খেলেও বিজয়ের মালা ছিনিয়ে আনায় দর্শকরা মহা আনন্দে ঘরে ফিরে যায়। পরদিন সকালে আবার দৈনিক পত্রিকায় ইমদাদ হকের খেলার প্রশংসা করে খবর বের হলে ফুটবল দর্শকের আনন্দ আর ধরে না।</p> <p> </p> <p>খ) টেবিলের ওপরে ছোট-বড় মালিশের শিশি কবিকে উপহাস করছে কেন?</p> <p>উত্তর : কবি তাঁর বন্ধুকে বিছানায় দেখতে পাবেন এই আশা করেছিলেন বলে টেবিলের ওপরে ছোট-বড় মালিশের শিশি কবিকে উপহাস করছে।</p> <p>ইমদাদ হক কাজি খেলার মাঠ থেকে সন্ধ্যাবেলায় যখন মেসে ফিরে আসে, তখন তাকে দেখা যায় বিছানায় শুয়ে থাকতে তার চাকর তার হাতে-পায়ে, ভাঙা হাড়ে সেঁক দিতে দিতে হয়রান হয়ে যায় আর ইমদাদ হক সারা রাত বিছানায় শুয়ে ছটফট ও চিত্কার করে কান্নাকাটি করে। তাই কবি ও তাঁর বন্ধুরা ধরে নেন যে ছয় মাসের মধ্যে ইমদাদ হককে তাঁরা আর ফুটবল মাঠে দেখতে পাবেন না। কিন্তু সকালবেলা কবি তাঁর ঘরে গিয়ে শূন্য বিছানা দেখে বুঝতে পারেন যে তাঁর অনুমান ভুল। টেবিলের ওপরে রাখা মালিশের শিশিগুলো যেন উপহাস করে তাঁকে সেই কথাই বুঝিয়ে দিচ্ছে।</p> <p> </p> <p>৪। খালি জায়গায় কবিতার ঠিক লাইনটি লেখো :</p> <p>ক) মেসের চাকর হয় লবেজান সেঁক দিতে ভাঙা হাড়ে,</p> <p>সারা রাত শুধু ছটফট করে কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে।</p> <p>খ) টেবিলের পরে ছোট-বড় যত মালিশের শিশিগুলি,</p> <p>উপহাস যেন করিতেছে মোরে ছিপি-পরা দাঁত তুলি।</p> <p>গ) গোল-গোল-গোল মোদের মেসের ইমদাদ হক কাজি,</p> <p>ভাঙা দুটি পায়ে জয়ের ভাগ্য লুটিয়া আনিল আজি।</p>