<p>যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় সামরিক মহড়ায় যোগ দিতে চীনকে দেওয়া আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করেছে পেন্টাগন। দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোতে চীনের সমর শক্তি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত বুধবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পদক্ষেপকে অগঠনমূলক বলে হতাশা প্রকাশ করেছে পেইচিং।</p> <p>প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত দ্বিবার্ষিক এই আন্তর্জাতিক মহড়া বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক মহড়া হিসেবে পরিচিত, যাকে সংক্ষেপে রিমপ্যাক বলা হয়। জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় এ মহড়ায় অংশ নিতে গত জানুয়ারিতে চীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন মহড়ায় অংশ নিতে চীনের পক্ষ থেকে সম্মতিও জানানো হয়। কিন্তু মহড়ার মাত্রই কয়েক দিন আগে চীনকে বারণ করে দেওয়া হলো। অথচ ২০১৬ সালের মহড়ায় চীন পাঁচটি জাহাজ নিয়ে অংশ নিয়েছিল।</p> <p>পেন্টাগনের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ক্রিস্টোফার লোগান বলেন, ‘দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিকায়ন অব্যাহত রাখার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ২০১৮ সালের প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহড়া থেকে আমরা পিএলএ ন্যাভিকে (চীনা নৌবাহিনী) দেওয়া আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করেছি।’ তবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। লোগান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এ ব্যাপারে শক্ত প্রমাণ রয়েছে যে, পেইচিং দক্ষিণ চীন সাগরের স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জে জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও ইলেকট্রনিক জ্যামার মোতায়েন করেছে। </p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগন যখন এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, তখন ওয়াশিংটন সফর করছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। গত বুধবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যা দেখলাম, তা খুবই অগঠনমূলক একটি পদক্ষেপ। ওয়াং বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে চীন যা করছে তার সবই আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। আর এটা প্রশান্ত মহাসাগরে হাওয়াই ও গুয়ামে যুক্তরাষ্ট্র যা করছে তার চেয়ে অনেক ছোট। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র এই নেতিবাচক মনোভাব প্রত্যাহার করবে।</p> <p>গত এক সপ্তাহ ধরে বিতর্কিত ওই দ্বীপপুঞ্জে চীনের বাহিনী বোমারু বিমান অবতরণ করে। এ নিয়ে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের দক্ষিণ চীন সাগরবিষয়ক বিশেষজ্ঞ গ্রেগ পলিন জানান, গত ১২ মে স্যাটেলাইটের ধারণ করা ছবিতে বিপুল পরিমাণ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ও জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র অরণ্যময় দ্বীপটিতে মোতায়েন করতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, ছবিতে দেখা গেছে, চীন জে-১১ কমবেট এয়ারক্রাফটও মোতায়েন করেছে। পরে ২০ মের একটি স্যাটেলাইট ইমেজেও এগুলো সে খাতে থাকতে দেখা গেছে।</p> <p>এ ব্যাপারে ওবামা সরকারের পূর্ব এশিয়াবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আব্রাহাম ডেনমার্ক বলেন, ‘এই পদক্ষেপ খুবই প্রতীকী। আমার কাছে মনে হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যেই প্রতিযোগিতা বাড়ছে। সূত্র : আলজাজিরা।</p>