ময়মনসিংহের গফরগাঁও-বরমী-মাওনা সড়ক প্রশ্বস্ত করা হবে শুনে সড়কের পাশে গড়ে তোলা হচ্ছে অসংখ্য স্থাপনা। একাধিক দালালচক্র জমির মালিকদের লোভ দেখিয়ে সড়কের পাশে রাতারাতি নিম্নমানের স্থাপনা তৈরি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে।
জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে গফরগাঁও-বরমী-মাওনা সড়ক প্রশস্ত করার জন্য ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। সড়কটি দৈর্ঘ্যে ৭১ কিলোমিটার, প্রস্থে ৪৫ ফুট। এর মধ্যে পাকা অংশ ২৪ ফুট। ৭১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৬ কিলোমিটার গফরগাঁও অংশে, বাকি ৪৫ কিলোমিটার বরমী হয়ে মাওনা গিয়ে মিশেছে। ইতিমধ্যে সড়ক প্রশস্ত করার দাপ্তরিক প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এ খবর শোনার পর গফরগাঁও ও শ্রীপুরের মধ্যস্বত্বভোগী একাধিক দালালচক্র গড়ে উঠেছে। জমি অধিগ্রহণের সময় স্থাপনা দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য ওই চক্র রাস্তার পাশের জমির মালিকদের লোভ দেখিয়ে রাতারাতি নিম্নমানের বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে। জমির মালিকের টাকা না থাকলে নিজেরা টাকা বিনিয়োগ করে স্থাপনা তৈরি করছে। এমনকি কোনো কোনো স্থানে সড়কের জায়গায় স্থাপনা তৈরি করছে।
অন্য একটি চক্র রাস্তার পাশের বাসাবাড়ির মালিকদের চুক্তির নামে ফাঁদে ফেলার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ চক্রটি প্রকাশ্যে বাসাবাড়ির মালিকদের প্রস্তাব দিয়ে বলছে, ‘মন্ত্রণালয়, ময়মনসিংহ অধিগ্রহণ শাখাসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে তাদের লোক রয়েছে। চুক্তি করলে জমি অধিগ্রহণের সময় তারা তদবির করে জমি ও স্থাপনার বর্তমান বাজারমূল্যের কয়েক গুণ সরকারের কাছ থেকে আদায় করে দেবে। তবে আদায় করা টাকার ৪০ শতাংশ তাদের দিতে হবে।’
অনেক মানুষ লোভে পড়ে এ চক্রের ফাঁদে পা দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জানার পরও চক্রটিকে দমনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর শহরের শিলাসী; সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল; গফরগাঁও ইউনিয়নের উথুরী, মহির খারুয়া, ঘাগড়া; লংগাইর ইউনিয়নের কুকসাইর, মাইজবাড়ী, লংগাইর, সতের বাড়ি; দত্তেরবাজার ইউনিয়নের মলমল, বালিপাড়া, পাগলা, টেকপাড়া; টাংগাব ইউনিয়নের স্বল্প ছাপিলাসহ নিগুয়ারী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী সেতু পর্যন্ত গফরগাঁও-বরমী-মাওনা সড়ক ঘেঁষে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে।
সড়কের পৌর শহরের মহিলা কলেজ রোড এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এটা অনেকটা ‘ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে’র মতো অবস্থা। রাস্তা বড় হলে জমি আর স্থাপনার মূল্য এমনিতেই পাওয়া যাবে; কিন্তু দালালচক্রটি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রাপ্য টাকার ৪০ শতাংশ নেওয়ার ফাঁদ পেতেছে। রাস্তার পাশে ৪ শতাংশ জমির ওপর আমার একটি আধাপাকা ঘর রয়েছে। চক্রটি আমাকেও প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি।”
গফরগাঁও বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘মানুষ খুব লোভী। কোটি কোটি টাকার মালিকও রাস্তা বড় হবে শুনে রাতারাতি জমিতে স্থাপনা তৈরি করছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শামীম রহমান বলেন, ‘গত ১৬ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ কে এম গালিব খানের নেতৃত্বে ময়মনসিংহের অধিগ্রহণ শাখার টিম নিয়ে আমরা গফরগাঁও থানার মোড় থেকে নিগুয়ারী ত্রিমোহনী সেতু পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবস্থান ভিডিও করেছি। সরকারি নিয়মের বাইরে কোনো টাকা পাওয়ার সুযোগ নেই। কেউ যদি দালালচক্রের ফাঁদে পা দেন তাহলে আমাদের কিছুই বলার নেই। সে জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে না।’
মন্তব্য
আলোচিত সংবাদ
ব্যাখ্যা ছাড়া সর্বসাধারণের পক্ষে কোরআন বোঝা সম্ভব নয়
আমাদের জাহিদ গুগলের ম্যানেজার
সারাদিন বিছানায় শুয়ে অন্যের রক্ত যোগাড় করেই দিন কাটে মিমের
সিগারেট তৈরির একটি মূল উপাদান ইঁদুরের বিষ্ঠা!
পরকীয়া প্রেমিকের স্ত্রী-কন্যার মারধরের শিকার চিত্রনায়িকা রাকা
বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণে ভিসা লাগে না...